• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

খেলা

অবিশ্বাস্য জয়ে সেমিতে রোমা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১২ এপ্রিল ২০১৮

অনেকটাই অসাধারণ, অবিশ্বাস্য ও অলৌকিক ফুটবল খেলে স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনাকে হটিয়ে ইতালিয়ান ক্লাব রোমা উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে। বার্সেলোনার বিপক্ষে ঘরের মাঠ স্তাদিও অলিম্পিকোতে কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ৩-০ গোলের ব্যবধানে জিতে যায় রোমা। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৪ গোলে ড্র থাকলেও অ্যাওয়ে গোলের সুবিধায় বার্সেলোনাকে বিদায় করে দিয়ে তিন দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো ইউরোপিয়ান সর্বোচ্চ লিগের শেষ চার নিশ্চিত করেছে ইতালিয়ান জায়ান্টরা। অথচ প্রথম লেগে ন্যু ক্যাম্পে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পরে চ্যাম্পিয়নস লিগে রোমার টিকে থাকার স্বপ্ন প্রায় শেষই হয়ে গিয়েছিল। ৮২ মিনিটে কোস্তাস মানোলাসের গোলে রোমার জয় নিশ্চিত হয়।

গত সপ্তাহে বার্সেলোনার মাঠে মানোলাস ও অধিনায়ক ড্যানিয়েল ডি রোসির আত্মঘাতী গোলে রোমা ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছিল। তারই প্রতিদান হয়তো দিলেন এই দুই রোমা তারকা। ম্যাচ শেষের আট মিনিট আগে দুর্দান্ত হেডে গ্রিস ডিফেন্ডার মানোলাসের গোলে রোমা যখন ম্যাচে সমতা ফেরায় তখন পুরো স্টেডিয়াম যেন উল্লাসে ফেটে পড়ছিল। সতীর্থদের উচ্ছ্বাসের সঙ্গে ডাগ আউটে কোচ ইউসেবিও ডি ফ্রান্সেসকোকে তখন মনে হচ্ছিল বিশ্বের সবচেয়ে সুখী মানুষ। আর এই গোলেই হতবাক হয়ে যায় পুরো বার্সা শিবির।

সিরি-এ ক্লাবের এই ঐতিহাসিক রাতের মূল নায়ক মানোলাস ম্যাচ শেষে বলেন, ‘দিনের শেষে মূল কথা হচ্ছে বিশ্বের সেরা একটি দলকে হারিয়ে আমরা সেমিফাইনালে উঠেছি। আমাদের সবারই নিজেদের ওপর বিশ্বাস ছিল। প্রথম লেগের দুর্ভাগ্যজনক অধ্যায় আমরা মোটেই মাথায় আনিনি।’

বিরতির ১৩ মিনিট পরে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন প্রথম লেগের খলনায়ক ডি রোসি। পেনাল্টি থেকে তার গোলের পরেই মূলত রোমা সমর্থকরা বিশ্বাস করা শুরু করে এই ম্যাচেও জয় সম্ভব। এর আগে এডিন জেকোর ছয় মিনিটের প্রথম গোলেরও মূল কারিগর ছিলেন স্থানীয় নায়ক ডি রোসি। তার এগিয়ে দেওয়া দারুণ এক পাসেই বসনিয়ান জেকো বার্সা গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগানকে পরাভূত করেন। ম্যাচ শেষে ডি রোসি বলেছেন, ‘এই জয় আমাদের জন্য কী অর্থ বহন করে সেটা কল্পনারও অতীত। শুধু এটুকু জানি ম্যাচে আমরা যা চেয়েছি তাই পেয়েছি।’

প্রথম থেকেই দারুণ আগ্রাসী ছিল রোমা। তারই ধারাবাহিকতায় ম্যাচের শুরুতেই স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন জেকো। ডি রোসির দারুণ পাসে জেকো কোনো ভুল করেননি। যদিও বার্সা ডিফেন্ডার স্যামুয়েল উমতিতিকে এই গোলের জন্য দায়ী করা যেতে পারে। ৫৮ মিনিটে রোমা ব্যবধান দ্বিগুণ করে। জেরার্ড পিকে ডি বক্সের ভেতর জেকোকে ফাউলের অপরাধে প্রাপ্ত পেনাল্টি থেকে ডি রোসি রোমাকে আরো এগিয়ে দেন। এই গোলের পরই মূলত রোমা সমর্থকরা বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে পুরো স্টেডিয়াম মাতিয়ে তোলে। আর এতেই বার্সা শিবির আরো বেশি চাপে পড়ে। ৬৯ মিনিটে ডি রোসির একটি হেড গোলের ঠিকানা খুঁজে পায়নি। ১০ মিনিট পরে স্টিফেন এল শারাভির শট অসাধারণ দক্ষতায় রুখে দেন টার স্টেগান। ৮২ মিনিটে আলেক্সান্দার কোলারোভের কর্নার থেকে মানোলাসের হেড আটকানোর সাধ্য ছিল না বার্সা গোলরক্ষকের। শেষ পর্যন্ত এই গোলেই ম্যাচে ৩-০ ব্যবধানে জয়ী হয় রোমা।

১৯৮৪ সালের পর এই প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ চারও নিশ্চিত হয়। ওই আসরে ঘরের মাঠে লিভারপুলের কাছে পরাজিত হয়ে শিরোপাটা অবশ্য হাতছাড়া হয়েছিল।

বিদায়ের পরে বার্সা কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দে বলেন, ‘এই পরাজয়ের পুরো দায়ভার আমার। আমি দল সাজিয়েছি, তাদের প্রস্তুত করেছি। আমরা জিতি বা হারি, গত সপ্তাহের একই দল নিয়ে আমি মাঠে নামতাম। তারপরও বলতে হয় এই পরাজয় হতাশার। সব কিছু ভুলে আমরা সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব। এখন আমাদের অবশ্যই এই ক্ষত থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আরো প্রতিযোগিতা আছে, আমাদের উচিত সেগুলো জয় করা। কারণ এখনো আমরা কিছুই জিততে পারিনি।’

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads