রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকে ইতিমধ্যেই বিদায় নিয়েছে জার্মানি, আর্জেন্টিনা। নেদারল্যান্ডস যোগ্যতা অর্জন পর্বেই ছিটকে গিয়েছে। তাই সবার চোখ এখন ব্রাজিলের উপরেই। আগের বিশ্বকাপে শেষ চারে ওঠা দলগুলোর মধ্যে ব্রাজিলই একমাত্র টিকে আছে। ব্রাজিল এবার যে দলের বিরুদ্ধে শেষ ষোলোর লড়াইয়ে নামছে, সেই মেক্সিকোর ডিফেন্স খুব ভাল। তবে শেষ ম্যাচে সুইডেনের কাছে ০-৩ হেরে বড় ধাক্কা খেয়েছে ওরা।
মেক্সিকোর বিরুদ্ধে ম্যাচটার কথায় আসি। ওরা আগের বারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে গ্রুপ পর্বে হারিয়ে এসেছে। সামারায় মেক্সিকোকে হারাতে সমস্যায় পড়বে না ব্রাজিল। তবে শুরুতেই গোল করে মেক্সিকোর গোলরক্ষক ওচোয়ার আত্মবিশ্বাসে ধাক্কা দিতে হবে। ব্রাজিলকে আগে গোল করে মেক্সিকোকে রক্ষণের খোলস থেকে বের করে আনতে হবে। তা হলেই ম্যাচটা ধরতে পারবে ব্রাজিল।
পরিসংখ্যান বলছে, মেক্সিকোর সঙ্গে ৫০ বার দেখা হয়েছে ব্রাজিলের। ব্রাজিল জিতেছে ২৩ বার, হেরেছে ১০ বার। এছাড়া মেক্সিকো কখনো বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর বেশি যেতে পারেনি। আমার মনে হয়, ছোটখাটো দু’একটা পরিবর্তন বাদে মোটামুটি আগের ম্যাচের দলই খেলাবে ব্রাজিল। মার্সেলোর জায়গায় খেলতে পারে ফিলিপে লুইস। শুনলাম, ডগলাস কোস্তা সুস্থ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমার মনে হয়, নেইমারের সঙ্গে উপরে উইলিয়ান আর জেসুসকেই খেলাবে তিতে।
এখন চিন্তা শুধু পাগেনারকে নিয়ে। এই রাইট ব্যাক আক্রমণের নেশায় মাঝে মাঝেই উপরে উঠে যায়। তখন কিন্তু উইলিয়ান নীচে নেমে ওই জায়গাটা সামলাতে পারছে না। বিপক্ষের প্রতি-আক্রমণের সময়ে এটা সমস্যা তৈরি করতে পারে। ওই সময়ে দেখছি, উইং থেকে প্রচুর ক্রস আসছে ব্রাজিলীয় বক্সে। যা সামলানোর কথা ভাবতে হবে তিতেকে। মেক্সিকো কিন্তু ব্রাজিলকে ওদের অর্ধে আসতে দেবে আর তারপরে প্রতি-আক্রমণে গিয়ে উইং থেকে ক্রস বাড়াবে।
ব্রাজিল খুব সম্ভবত ৪-১-২-২-১ ছকে শুরু করবে। তারপরে শুরুর দিকে গোল করতে পারলে, সেই ছক পাল্টে হয়ে যেতে পারে ৪-৩-২-১। ম্যাচের পরিস্থিতি দেখে ৪-৩-৩ ছকেও যেতে পারে। এই ম্যাচে ব্রাজিলীয় ফুটবলারদের মাথা খুব ঠান্ডা রেখে খেলতে হবে। থিয়াগো সিলভাকে এ ব্যাপারে নেতৃত্বের দায়িত্ব নিতে হবে। তাছাড়া কোনো ভাবেই কার্ড দেখা চলবে না। তবে মেক্সিকোকে হালকাভাবে নিলে চলবে না। এবারের বিশ্বকাপ বুঝিয়ে দিচ্ছে, তথাকথিত শক্তিশালী এবং দুর্বল দেশগুলোর মাঝখানের বিভাজন রেখা ক্রমে ফিকে হয়ে আসছে। ফুটবলের বড় দলগুলো ছোট দলের বিরুদ্ধে যে সুবিধাটা ভোগ করতো, তা এখন সেভাবে করতে পারছে না। এর উপরে যোগ হয়েছে ভিডিও প্রযুক্তি (ভার)। দিনের শেষে প্রযুক্তি আমাদের সঠিক সিদ্ধান্তেই পৌঁছে দিচ্ছে।
যেভাবে এই বিশ্বকাপটা এগোচ্ছে, তাতে ব্রাজিলের সামনে রাস্তাটা বিশেষ কঠিন দেখা যাচ্ছে না। যদিও খাতায় কলমে নক-আউট পর্বে ব্রাজিল শক্ত দিকেই পড়েছে। তিতের এই দলটাকে দেখে নেওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত প্রতিপক্ষ হল সার্বিয়া। ব্রাজিলীয়রা সেই পরীক্ষায় উতরে গিয়েছে। এরপরে মেক্সিকোকে হারালে বেলজিয়াম বা জাপানের সামনে পড়বে। যা ব্রাজিলের সেমিফাইনালে যাওয়ার সেরা রাস্তা। নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, উরুগুয়ে বা ফ্রান্সের বদলে যে মেক্সিকোকে খেলতে হচ্ছে, তার জন্য খুশিই হবে ব্রাজিল।
