চলতি বছর পবিত্র ঈদুল ফিতরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ৩৩৯ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। আর আহত হয়েছেন ১ হাজার ২৭৪ জন।
শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদযাত্রা শুরুর দিন, অর্থাৎ গত ১১ জুন থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরার সময় গত ২৩ জুন পর্যন্ত ২৭৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩৯ জন নিহত এক হাজার ২৬৫ জন আহত হন। একই সময়ে নৌপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত, ৫৫ জন নিখোঁজ ও ৯ জন আহত হয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌপথ মিলিয়ে এবার ঈদে মোট ৩৩৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৪০৫ জন নিহত এবং এক হাজার ২৭৪ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া রেল পথে ট্রেনে কাটা পড়ে ৩৫ জন, ট্রেনের ধাক্কায় চার জন এবং ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে দুই জনসহ ৪১ জন নিহত হয়েছেন।
গত ২৫ জুন মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দূরপাল্লার যানে বিকল্প চালক রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন। অন্য নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে- পরিবহনের চালক ও সহকারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, রাস্তার মাঝে চালকদের বিশ্রামের ব্যবস্থা রাখা, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে রাস্তা পারাপার বন্ধ করা, সিগন্যাল দিয়ে পারাপার করা, সিট বেল্ট পরানো নিশ্চিত করা।
সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল ‘বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য’ জাতীয় দৈনিক, আঞ্চলিক দৈনিক ও অনলাইন দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
ফিটনেসবিহীন ও পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন; বিরতিহীন বা বিশ্রামহীনভাবে গাড়ি চালনা; অদক্ষ চালক ও হেলপার দিয়ে যানবাহন চালনা; মহাসড়কে অটোরিক্সা, ব্যাটারিচালিত রিক্সা, নসিমন-করিমন ও মোটর সাইকেল অবাধে চলাচল; মনিটরিং ব্যবস্থার অভাব; বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চালানো; সড়ক-মহাসড়কে ফুটপাত না থাকা এবং সড়ক-মহাসড়কের বেহাল দশা এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বলে মনে করে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
এছাড়া পর্যাপ্ত গণপরিবহনের ব্যবস্থা; মহাসড়কে ধীরগতির যান ও দ্রুত গতির যানের জন্য আলাদা লেইনের ব্যবস্থা; মহাসড়কে নছিমন-করিমন, ব্যাটারি চালিত রিক্সা, অটোরিক্সা বন্ধে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত শতভাগ বাস্তবায়ন করা; ভাঙ্গা রাস্তাঘাট মেরামত; ফিটনেসবিহীন ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন চলাচল বন্ধে উদ্যোগ নেওয়া এবং জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ফুটপাত, আন্ডারপাস, ওভারপাস তৈরি করে পথচারীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করারও সুপারিশ করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।