• মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জৈষ্ঠ ১৪২৮
জাফলংয়ে একযুগে ৫৩ পর্যটকের সলিল সমাধি

অপরুপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি জাফলং

সংরক্ষিত ছবি

দুর্ঘটনা

জাফলংয়ে একযুগে ৫৩ পর্যটকের সলিল সমাধি

  • আবু তাহের চৌধুরী, সিলেট
  • প্রকাশিত ২৮ আগস্ট ২০১৮

সিলেটের অন্যতম পর্যটন স্পট জাফলংয়ে গত শনিবার বেড়াতে এসে গোসলে নেমে প্রাণ হারিয়েছে কলেজছাত্র রিফাত আহমদ। রিফাত ঢাকার খিলগাঁওয়ের আবু সাইদের ছেলে ও ঢাকা সিটি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। এ সময় আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তার সহোদর শিফাত ও ঢাকার শাহজাহানপুরের আবদুল বারেকের ছেলে সানিকে।

এ নিয়ে ২০০৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত গত ১২ বছরে জাফলংয়ে বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে প্রাণ হারিয়েছে ৫৩ জন। তাদের বেশিরভাগই কিশোর ও তরুণ। পাহাড়ি নদীর চোরাবালি ও সাঁতার না জানাই তাদের মৃত্যুর মূল কারণ। সিলেট নগরী থেকে ৫৯ কিলোমিটার দূরে জাফলংয়ের অবস্থান। এখানে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ স্বচ্ছ জলরাশির পিয়াইন নদী। কিন্তু এই নদী থেকে পাথর উত্তোলনের ফলে সৃষ্ট গর্তে বালু জমে চোরাবালির সৃষ্টি হওয়ায় এবং স্বচ্ছ জলধারায় গভীরতা কম দেখা যাওয়ায় কেউ কেউ পানিতে নেমে তলিয়ে যান। ছোট নৌকায় ভ্রমণ করতে গিয়েও পিয়াইন নদীতে নৌকাডুবিতে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর জাফলংয়ের পিয়াইন নদীর জিরো পয়েন্ট এলাকায় গোসল করতে নেমে স্রোতের টানে তলিয়ে প্রাণ হারায় দুই শিক্ষার্থী। তারা হলো ময়মনসিংহ অ্যাপোলো ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের ছাত্র কামাল শেখ ও চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ফয়সল হোসেন সৌরভ। ২০১৬ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মারা যায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর সোহরাব নামের এক কিশোর। ২৪ আগস্ট পিয়াইন নদী থেকে ফরিদ আহমদ নামের এক শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হয়। ১৯ আগস্ট ডুবে মারা যায় মো. আসিফ নামের এক কিশোর। ওই বছরের ৩ আগস্ট সাঁতার কাটতে গিয়ে প্রাণ হারায় সিলেট ব্লু বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র আশফাক সিদ্দিকী।

২০১৫ সালের ২২ জুলাই গোসল করতে নেমে প্রাণ হারায় ঢাকার দুই কলেজ ছাত্র। ২০১৪ সালে তিন দিনের ব্যবধানে প্রাণ হারান শিশুসহ ৬ জন। ওই বছরের ২ আগস্ট প্রাণ হারান নারায়ণগঞ্জের জসিম উদ্দিন। এর আগে ৩১ জুলাই পিয়াইন নদীতে নৌকাডুবে মারা যান মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সাকিল, মামুন ও সাদেক হোসেন। একই দিনে চোরাবালিতে হারিয়ে যান সিলেটের শাহী ঈদগাহ হোসনাবাদ এলাকার কামরুল এবং অজ্ঞাত এক যুবক। ২০০৩ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এক দশকে পিয়াইন নদীতে ডুবে মারা গেছেন ৩৮ জন।  এ ছাড়া ২০০৪ সালে ২ জন, ২০০৫ সালে ১ জন এবং ২০০৭ সালে ২ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়।

জাফলংয়ে পানিতে ডুবে পর্যটকদের মৃত্যুর ব্যাপারে গোয়াইনঘাটের ইউএনও বিশ্বজিৎ কুমার পাল জানান, পর্যটকদের সতর্ক করার জন্য পুলিশ প্রশাসন, ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিজিবি, আনসার সদস্য, ট্যুরিস্ট গাইড, স্কাউট সদস্যরা নিয়োজিত থাকলেও তাদের নিষেধ অমান্য করে সাঁতার কাটতে গিয়ে এ রকম দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। এ ছাড়া পর্যটন কেন্দ্র জাফলংয়ে বিভিন্ন সময় পর্যটকদের সতর্ক করার জন্য সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড সাঁটানোসহ নানা উদ্যোগ নিলেও অনেকেই তা আমলে নেন না।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads