শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকদের আশঙ্কাকেই সত্যি করে না ফেরার দেশে চলে গেল রাজধানীর উত্তরখানে ‘অসাবধানতাবশত’ লাগা আগুনে দগ্ধ সাগরও। শনিবার মধ্যরাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ১২ বছরের এই শিশুটি। এ নিয়ে গত ১৩ অক্টোবর ভোরের ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মোট ৬ জনের মৃত্যু হলো।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, শনিবার রাত দেড়টার দিকে মারা যায় সাগর। স্বজনরা তার লাশ নিয়ে গেছেন। আর ওই ঘটনায় তুলনামূলক কম দগ্ধ হওয়া আঞ্জু আরা (২৫) এবং তার ছেলে আবদুল্লাহ সৌরভ (৫) চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে।
উত্তরখানের বেপারিপাড়ার তিনতলা ওই ভবনের নিচতলার বাসায় পাইপলাইনের ছিদ্র থেকে গ্যাস জমে যায়। সেদিন ভোর ৪টার দিকে রান্নাঘরের চুলা জ্বালাতে গেলে পুরো ঘরে আগুন লেগে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আটজনকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিন সকালেই মো. আজিজুল ইসলাম (২৭) নামে একজনের মৃত্যু হয়। সন্ধ্যায় মারা যান তার স্ত্রী মুসলিমা বেগম (২০)। আজিজুলের ফুফু সুফিয়া বেগম (৫৫) মারা যান গত ১৪ অক্টোবর। এরপর ১৬ অক্টোবর রাতে সুফিয়ার মেয়ে পূর্ণিমা এবং পরদিন সকালে আজিজুলের বোন আঞ্জু আরার স্বামী ডাবলু মোল্লা মারা যান। সর্বশেষ শনিবার রাতে পূর্ণিমার ছেলে সাগরেরও মৃত্যু হয়। ঘটনাটির বিষয়ে উত্তরখান থানার ওসি হেলাল উদ্দিন বলেন, অসাবধানতার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। রাতের বেলায় বাড়িটির চুলায় গ্যাস ছিল না। তখন অসতর্ক অবস্থায় চুলার সুইচ বন্ধ না করেই তারা ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর গ্যাস এলে তা সারা ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। তবে দরজা-জানালা বন্ধ থাকায় গ্যাস বের হওয়ার পথ পায়নি। অন্য দিনের মতো ওই ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা ভোরে রান্না করতে উঠে আগুন জ্বালানো মাত্র চারপাশে আগুন ধরে যায়। ফ্ল্যাটে যে ক’জন ছিলেন সবাই দগ্ধ হন।
এই পরিবারের সদস্যরা গত মাসে বাসাটির নিচতলায় ওঠেন। সেখানে তিনটি কক্ষে থাকতেন তারা। তাদের বাড়ি পাবনার ভাঙ্গুড়ায়। মুসলিমা ও পূর্ণিমা উত্তরখানের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। আজিজুল একটি মাছের খামারে কাজ করতেন এবং ডাবলু অটোরিকশা চালাতেন।