• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯
কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ঝরল ৮ প্রাণ

গতকাল সন্ধ্যায় বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় উপড়ে পড়ে গাছপালা। ছবিটি মিন্টো রোড এলাকা থেকে তোলা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

দুর্ঘটনা

ট্রলার ডুবে নিখোঁজ ৮

কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ঝরল ৮ প্রাণ

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০১ এপ্রিল ২০১৯

ঘনকালো মেঘ আর সন্ধ্যার অন্ধকার একই সঙ্গে নেমে এলো রাজধানী ঢাকার বুকে। প্রবল ঝড়ো হাওয়ায় উড়ল ধুলো, উপড়ে গেল গাছপালা। বাতাসের বেগ কিছুটা কমতেই ঝমঝমিয়ে নামল বৃষ্টি। মধ্য চৈত্রের কালবৈশাখী ঝড় আর বৃষ্টি দিনভর ভ্যাপসা গরমের পর নগরবাসীকে কিছুটা স্বস্তি দিলেও ঝড়ের তাণ্ডবে গেল তিন প্রাণ। এ ছাড়া বজ্রপাতে সারা দেশে আরো পাঁচজনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আর মুন্সীগঞ্জে পদ্মা নদীতে ট্রলার ডুবে আটজন নিখোঁজ হয়েছেন।

গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীতে বয়ে যাওয়া প্রায় ২০ মিনিটের ঝড়ে কোথাও কোথাও বিদ্যুতের খুঁটি, কোথাওবা গাছ উপড়ে গেছে, আবার সড়কের ওপর ভেঙে পড়েছে গাছের ডালপালা। 

এই ঝড়ের কবলে পড়ে সংসদ ভবন এলাকায় গাছ ভেঙে পড়ে এক নারী এবং পুরানা পল্টন মোড়ে উঁচু ভবন থেকে ইট পড়ে এক দোকানদার নিহত হয়েছেন। শেরেবাংলা নগর থানার ওসি জানে আলম জানান, সংসদ ভবন এলাকায় নিহত ওই নারীর নাম মিলি ডি কস্তা (৬০)। তিনি পাশের মণিপুরিপাড়ায় থাকতেন। ধারণা করা হচ্ছে তিনি সন্ধ্যাকালীন হাঁটাহাঁটি করছিলেন।

পল্টন থানার ওসি মাহমুদুল হক জানান, ঝড়ের সময়ই পুরানা পল্টন মোড়ে চায়ের গলিতে উঁচু ভবন থেকে ইট পড়ে নিহত হন মো. হানিফ (৪৫) নামে এক চা দোকানি। হানিফকে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় ঝড়ে অন্তত ২৫টি স্থানে গাছ পড়ার ঘটনা ঘটেছে।

ঢাকা ছাড়াও কালবৈশাখী আঘাত হেনেছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। এর মধ্যে মুন্সীগঞ্জে ঝড়ের কবলে পড়ে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের বহনকারী একটি ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। ট্রলারটিতে একজন প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ মোট ২২ যাত্রী ছিলেন। তারা ভোটের দায়িত্ব পালন করে ফেরার সময় জেলার চর হোগলা এলাকায় ঝড়ের কবলে পড়েন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে উদ্ধার অভিযান চলছিল।

এ ছাড়া নেত্রকোনার ওপর দিয়েও বয়ে গেছে ঝড়ো হাওয়া। সেই সঙ্গে হয়েছে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি। এ শিলাবৃষ্টি তাণ্ডব চালিয়েছে ফসলি জমিতে। পাশাপাশি হয়েছে ব্যাপক বজ্রপাত। বজ্রপাতে সদর উপজেলার রৌহা ইউনিয়নে বাহাদুরপুর গ্রামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তার নাম আছর উদ্দিন (৬৫)।

এদিকে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় বজ্রপাতে দেলোয়ার হোসেন (১৭) নামের এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। দেলোয়ার উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের জুহুর মিয়ার ছেলে। রোববার দুপুর একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া দমকা বাতাসের সঙ্গে সৃষ্ট বজ্রপাতে দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এই দুজন হলো উপজেলার পতনউষার গ্রামের জুনেদ মিয়ার মেয়ে সাদিয়া আক্তার (৯) ও মুন্নী আক্তার (৬)।

ঘটনার সময় এই দুই বোন বাড়ির আঙিনায় খেলছিল। সে সময় আকস্মিক বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই সাদিয়া মারা যায়। মুন্নীকে আহত অবস্থায় মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।

এদিকে কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেরায় বজ্রপাতে রাব্বী মিয়া নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় রুকন মিয়া নামে আরো এক শ্রমিক আহত হয়েছে। নিহত রাব্বী ইটনা উপজেলা সদরের নন্দীহাটি গ্রামের আবদুল কাদিরের ছেলে এবং আহত রুকন একই গ্রামের শুক্কুর আলীর ছেলে। রোববার দুপুরে রাব্বী মিয়া ও রুকন মিয়া বাড়ির পাশে নৌকা থেকে পাথর নামাচ্ছিলেন। এ সময় বৃষ্টি শুরু হয়। একপর্যায়ে বজ্রপাতে দুজনই আক্রান্ত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাদেরকে ইটনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাব্বী মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। আর আহত রুকন মিয়াকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads