• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯

দুর্ঘটনা

সড়কে ১১ মাসে ৩৯৮৭ প্রাণহানি

  • মোহসিন কবির
  • প্রকাশিত ০৮ ডিসেম্বর ২০২০

করোনা মহামারীর কারণে চলতি বছরের প্রায় ৩ মাস বন্ধ ছিল যানবাহন চলাচল। লকডাউনের পর যান চলাচল শুরু হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি জীবনযাত্রা। স্বাভাবিকভাবেই এ বছর সড়ক দুর্ঘটনা কিছু কম হয়েছে। কিন্তু মৃত্যুর হার কমেনি।

বাংলাদেশ রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে ৩২০২টি সড়ক দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৩৯৮৭ জন ও আহত হয়েছেন ৬০৬৬ জন। ২০১৯ সালে সারা দেশে সংঘটিত ৪,৬৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫,২১১ জন এবং আহত ৭,১০৩ জন। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান জানান, সংখ্যার দিক থেকে এ বছর দুর্ঘটনা এবং নিহত-আহতের সংখ্যা কিছুটা কম হলেও বিভিন্ন সূচকে এ সংখ্যা গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। বিশেষ করে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেড়েছে উদ্বেগজনকহারে।

গত বছর ১১৮৯টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা যায় ৯৪৫ জন। অথচ এ বছর কেবল ১১ মাসেই মৃত্যু হয়েছে ১১৬৭ জনের, যা মোট সংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। ২০১৯ সালে শতাংশের হিসেবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয় ১৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। এছাড়া বিগত বছরগুলোতে আঞ্চলিক সড়কগুলোতে দুর্ঘটনা বেশি হলেও এ বছর মহাসড়কগুলোতে দুর্ঘটনা বেড়েছে।

এ বছর জানুয়ারিতে ৩৪০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৪৫ জন নিহত ও ৮৩৪ জন আহত, ফেব্রুয়ারিতে ৩৮৭টি দুর্ঘটনায় নিহত ৪৬৩ জন ও আহত ৯৪৮ জন, মার্চে ২৮৩টি দুর্ঘটনায় ৪২৭ জন নিহত ও আহত ৯৮৬জন, এপ্রিলে ১১৯টি দুর্ঘটনায় ১৩৮ জন নিহত ও আহত ১১২ জন, মে’তে ২১৩ টি দুর্ঘটনায় ২৯২ জন নিহত আহত ২৬১ জন, জুনে ২৯৭টি দুর্ঘটনায় নিহত ৩৬১ ও আহত হয় ৩৪৮ জন, জুলাইয়ে ২৯৩টি দুর্ঘটনায় নিহত ৩৫৬জন ও আহত ৩৪১ জন, আগস্টে ৩০২টি দুর্ঘটনায় ৩৭৯ জন নিহত ও আহত ৩৬৮ জন, সেপ্টেম্বরে ২৭৩টি দুর্ঘটনায় ৩০৪ জন নিহত ও আহত হয় ৪৯২ জন, অক্টোবরে ৩১৪টি দুর্ঘটনায় ৩৮৩ জন নিহত ও আহত হয় ৬৯৪ জন এবং নভেম্বরে ৪১৭টি দুর্ঘটনায় ৪৩৯ জন নিহত ও আহত হয়েছে ৬৮২ জন।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে রোড সেফটি ত্রুটিপূর্ণ ও মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি ও গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজিকে দায়ি করেছে। দুর্ঘটনা কমাতে সংস্থাটি বেশকিছু সুপারিশ প্রদান করেছে।

এগুলো হলো- ১. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করা, ২. চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্টকরণ, ৩. বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা, ৪. পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক

আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করা, ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা রাস্তা তৈরি, ৬. পর্যায়ক্রমে সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ, ৭. গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, ৮. রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়কপথের ওপর চাপ কমানো, ৯. টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা এবং ১০. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads