দরজায় কড়া নাড়ছে বসন্ত। সামনে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। আর এই দিবসগুলোর বাজার ধরতে ব্যস্ত সময় পার করছেন যশোরের গদখালীর ফুলচাষিরা। ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি এই দুদিনে ফুল বিক্রি অন্যতম উচ্চতায় পৌঁছায় ফুলচাষিদের। এ সময়কে কেন্দ্র করে এখানকার ফুল ব্যবসায়ীদেরও থাকে বিশেষ প্রস্তুতি।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির তথ্যমতে, এবার যশোরে পাইকারি পর্যায়ে ৭০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যশোরে প্রায় ৬ হাজার ফুলচাষি ১৫শ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হয় গ্যালোরিয়াস শতকরা ৪০ ভাগ। চাষ করে এখানকার ফুলচাষিরা। তার পরই ২০ ভাগ চাষ হয় রজনীগন্ধা। গোলাপ ১৫ ভাগ চাষ হয়। তাদের উৎপাদিত জারবেরা, গাঁদা, জিপসি, রডস্টিক, কেলেনডোলা, চন্দ্রমল্লিকাসহ ১১ ধরনের ফুল সারা দেশের মানুষের মন রাঙাচ্ছে এখানকার চাষিরা।
সরেজমিনে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী, পানিসারা, নাভারন, নিরবাসখোলা এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে জমিতে সেচ প্রদান, গোলাপের কুঁড়িতে ক্যাপ পরানো, সার-কীটনাশক, আগাছা পরিষ্কার করাসহ ফুলের আনুষঙ্গিক পরিচর্যা করছেন চাষিরা। তাদের লক্ষ্য এ মাসের প্রতিটি ফুলের বাজার ধরা।
নাভারনের ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী নজরুল আলম জানান, গত দু-তিন মাস ব্যবসা কিছুটা খারাপ গেছে। সময়মতো সামনের দিবসগুলোতে যদি বাজার ধরতে পারি তা হলে ৩-৪ লাখ টাকার মতো ফুল বিক্রি করতে পারব।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আবদুর রহিম বলেন, যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলাসহ এ জেলায় বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষ হচ্ছে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এই ফুল এখন যাচ্ছে দুবাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়ায়ও।
বর্তমানে যশোরেই প্রায় ৬ হাজার ফুলচাষি রয়েছেন। সারা বছর টুকটাক ফুল বিক্রি হলেও মূলত ফেব্রুয়ারি মাসের তিনটি উৎসবকে সামনে রেখে জোরেশোরে এখানকার চাষিরা ফুল চাষ করে থাকেন।