• সোমবার, ৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪২৯
আগে মৃত্যুদণ্ড, তারপর তদন্ত!

ফাঁসির কাষ্ঠ

প্রতীকী ছবি

এশিয়া

আগে মৃত্যুদণ্ড, তারপর তদন্ত!

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৩ অক্টোবর ২০১৮

‘আগে মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকর, তারপর বিচার’- কথাটা পাকিস্তানে সাধারণ জনতার মধ্যে খুব প্রচলিত। এই কথা থেকেই দেশটির আইনের ফাঁকফোকর আর বিচার ব্যবস্থার দুর্বলতার বহুমুখী চিত্র সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

২০১৪ সালে দেশটির পেশোয়ারে একটি স্কুলে সন্ত্রাসী হামলায় ১৪০ শিশু নিহতের পর থেকে ব্যাপক হারে বেড়েছে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা। শুধু তাই নয়, ওই ঘটনার পর মৃত্যুদণ্ড না দেওয়ার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত থেকেও সরে আসে দেশটি। জাস্টিস প্রোজেক্ট পাকিস্তান (জেপিপি) নামের একটি সংস্থা জানিয়েছে, দেশটিতে ২০১৪ থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৪৯৬ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে এবং রায় মাথায় নিয়ে সাজা ভোগ করছেন আরো প্রায় ৪ হাজার ৬৮৮ জন। বলা যায়, খুব জলদিই তাদেরও পরিণতি হবে ফাঁসির কাষ্ঠ। আশঙ্কাজনক হারে দেশটিতে বেড়ে যাওয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজার জাঁতাকলের নিচে পড়ছেন অনেক নিরপরাধ ব্যক্তি। গত কয়েক বছর ধরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া দেশ সৌদি আরব, ইরাক ও ইরানের পরই তাই পাকিস্তানের নামটি চলে আসে।

পাকিস্তানের মধ্যাঞ্চলের রনঝৈ খান গ্রামের গুলাম কাদির আর গুলাম সরোয়ার ভাইদ্বয়ের পরিবারের সদস্যরাও এমন বাস্তবতার মুখে নিজেদের ক্ষোভ ঝাড়ছিলেন। তারা জানান, কাদিরের মেয়ে সালমার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তাকে অপহরণ ও ধর্ষণ করে পাশের গ্রামের আকমল। বিষয়টি নিয়ে এক দিন গ্রাম্য সালিশের জন্য সালমা, কাদির ও তার ভাই সরোয়ারকে ডেকে পাঠানো হয়। তর্কাতর্কির একপর্যায়ে সেখানে গোলাগুলি শুরু হলে সালমা, আকমল ও তার বাবা আবদুল কাদির নিহত হন। পুলিশ পরবর্তী সময়ে কাদির ও সরোয়ারসহ আটজনকে গ্রেফতার করে।

প্রমাণের অভাবে বাকি ছয়জন মুক্তি পেলেও কাদির ও সরোয়ার ভাতৃদ্বয়ের ফাঁসির রায় হয় ২০০৫ সালে এবং তা কার্যকর হয় ১৩ অক্টোবর, ২০১৫। আর এর ঠিক এক বছর পর ৬ অক্টোবর ২০১৬ সালে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত ঘোষণা দেয় দুই ভাই নিরপরাধ ছিলেন।

জেপিপি জানায়, বিশ্বে মৃত্যুদণ্ডের সাজা পাওয়া প্রতি চারজনে একজন পাকিস্তানি। এ ছাড়া বিশ্বে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া প্রতি আটজনের একজন এই দেশটির নাগরিক। সংস্থার প্রধান সারাহ বেলাল বলেন, পাকিস্তানে ২৭ ধরনের অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়। এর মধ্যে হত্যা, মাদক সংক্রান্ত বিষয়, মানব পাচার, ধর্ষণ ও ধর্মদ্রোহিতা অন্যতম। আর এসব ইস্যুকে ব্যবহার করে পুলিশ প্রশাসনের দুর্নীতির সুযোগ নিয়ে প্রায়ই ফাঁসিয়ে দেওয়া হয় নিরপরাধ কাউকে। বিশেষত সেটা যদি হয় ধর্ম সংক্রান্ত কোনো বিষয় তাহলে তো আর কথাই নেই।

আলজাজিরা অবলম্বনে আরিফা সুলতানা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads