• সোমবার, ৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪২৯
শ্রীলঙ্কায় বোরকা-নিকাব নিষিদ্ধ

সংগৃহীত ছবি

এশিয়া

শ্রীলঙ্কায় বোরকা-নিকাব নিষিদ্ধ

  • প্রকাশিত ১৪ মার্চ ২০২১

শ্রীলঙ্কা সরকার জাতীয় নিরাপত্তার যুক্তি দেখিয়ে জনসমক্ষে বোরকা ও নিকাবসহ সবধরনের মুখ ঢাকা পোশাক পরা নিষিদ্ধ করার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে।

দেশটির জন নিরাপত্তা মন্ত্রী সারাত উইরাসেকারা বলেছেন, বোরকা নিষিদ্ধ করার এক নির্দেশে তিনি সই করেছেন। সেটি কার্যকর করতে পার্লামেন্টের অনুমোদন লাগবে।

মন্ত্রী বলেন, খুব দ্রুত এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে বলে তিনি আশা করছেন। 

প্রায় দু বছর আগে খ্রিস্টানদের ইস্টার সানডে পরবের দিন শ্রীলঙ্কায় হোটেল ও কয়েকটি গির্জার ওপর সমন্বিত কয়েকটি হামলার পর দেশটির সরকার এই উদ্যোগ নিচ্ছে।

ওই হামলায় আত্মঘাতী বোমাহামলাকারীরা ক্যাথলিকদের গির্জা ও পর্যটকদের হোটেল টার্গেট করে হামলা চালায়। ২০১৯ সালে এপ্রিল মাসের ওই হামলায় প্রাণ হারায় আড়াইশ'র বেশি মানুষ। ইসলামিক স্টেট জঙ্গী গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করে। কর্তৃপক্ষ জঙ্গীদের ধরতে অভিযান চালায় এবং সেসময় সংখ্যালঘু বৌদ্ধদের এই দেশটিতে জরুরিকালীন পদক্ষেপ হিসাবে সবধরনের মুখ ঢাকা পোশাক পরার ওপর স্বল্প মেয়াদী নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

এখন দেশটির সরকার এই নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে চালু করার উদ্যোগ নিল।

উইরাসেকারা সাংবাদিকদের বলেন, যে বোরকা "দেশটিতে সাম্প্রতিককালে মাথা চাড়া দেয়া ধর্মীয় উগ্রবাদের একটা লক্ষণ"। তিনি আরও বলেন, যে এটা "জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি" তৈরি করছে এবং স্থায়ী ভাবে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, এটা আরও আগে স্থায়ীভাবে বলবৎ করা দরকার ছিল।

''ফলে আমি এই নির্দেশে সই করেছি এবং খুব শিগগিরি এটি বাস্তবায়ন হবে,'' তিনি বলেন।

উইরাসেকারা আরও বলেছেন, সরকার ১০০০এর বেশি মাদ্রাসা বন্ধ করারও পরিকল্পনা করেছে। তিনি বলেন, এই মাদ্রাসাগুলো জাতীয় শিক্ষা নীতি লংঘন করছে।
"যে কেউ স্কুল খুলে শিশুদের যা খুশি পড়াতে পারে না। সরকারের শিক্ষা নীতি মেনে সব স্কুলে পাঠদান করতে হবে।"

বেশিরভাগ অনিবন্ধিত স্কুল "শুধু আরবি ভাষা এবং কোরান পড়ায়, সেটা খুবই খারাপ," বলেন মি. উইরাসেকারা।

শ্রীলঙ্কার মুসলিম কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিলমি আহমেদ বলেন, যে কর্মকর্তারা যদি বোরকা পরা কারোর পরিচিতি জানতে চান, সেক্ষেত্রে তাদের যদি সমস্যা হয়, "তাহলে পরিচিতি জানার জন্য তাদের মুখের ঢাকা সরাতে বললে কেউ তাতে আপত্তি জানাবে না"।

তিনি বলেন, ধর্ম বিশ্বাস যার যেটাই হোক না কেন মুখ ঢেকে চলাফেরা করার অধিকার প্রত্যেকের আছে: "অধিকারের বিচারে সেটা বিবেচনা করতে হবে, শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সেটা বিচার করলে হবে না।"

মাদ্রাসা শিক্ষা প্রসঙ্গে মি. আহমেদ জোর দিয়ে বলেন দেশটির অধিকাংশ মুসলিম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিভাবে নিবন্ধিত।

"হয়ত মাত্র ৫% সরকারের শিক্ষা নীতি মেনে চলছে না এবং তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে," তিনি বলেন।

সরকার সাম্প্রতিক এই পদক্ষেপের পরিকল্পনার আগে গত বছরই শ্রীলঙ্কা সরকার নির্দেশ দিয়েছিল যে কোভিড-১৯ এ কেউ মারা গেলে তার মরদেহ বাধ্যতামূলকভাবে দাহ করতে হবে, যেভাবে দেশটির বৌদ্ধদের অন্তেষ্ট্যি করা হয়। মুসলিমরা কোভিডে মৃতদের দাফন করতে পারবে না।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads