• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জৈষ্ঠ ১৪২৯
বশেমুরবিপ্রবি'তে চুরির তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশের দাবিতে মানববন্ধন

ছবি : বাংলাদেশের খবর

ক্যাম্পাস

বশেমুরবিপ্রবি'তে চুরির তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশের দাবিতে মানববন্ধন

  • বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের সাথে অসদাচরণ ও হুমকির বিচার, লাইব্রেরী থেকে কম্পিউটার চুরির প্রকৃত চোরকে শনাক্তকরণ এবং তদন্তের রিপোর্ট জনসম্মুখে প্রকাশের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের হুমকি দেয়ার বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার চুরির মূলহোতাদের বিচারের আওতায় আনা ও তদন্তের রিপোর্ট জনসম্মুখে প্রকাশের দাবি জানান।

মানববন্ধনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছাত্রনেতা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, ফাহাদ সারজিল, শেখ তারেক এবং বাবুল শিকদার বাবু বলেন, "এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারের জন্য প্রতি সেমিস্টারে প্রত্যেক শিক্ষার্থী নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দেয়, এই কম্পিউটারগুলি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সম্পদ। বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন বারবার চুরির ঘটনা ঘটবে। কেন কম্পিউটার চুরির তদন্ত প্রতিবেদন রেজিস্ট্রার স্যার এখনো ভিসি স্যারের নিকট জমা দেননি তার উপযুক্ত জাবাব দিতে হবে, শুধু জাবাব নয় অতিদ্রুত এই চুরির সাথে জড়িত মূলহোতার মুখোশ উন্মোচনসহ চুরির সাথে জড়িত প্রত্যেক চোরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

এছাড়া ঈদুল আযহার ছুটিতে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে ৪৯টি কম্পিউটার চুরির পর আবারো কম্পিউটার চুরির ঘটনা ঘটেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগে। আমরা এই সবগুলো ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচারসহ কম্পিউটার চুরির মূলহোতাদোর বিচার চাই"।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার চুরির ঘটনায় এক শিক্ষার্থীকে (মাসরুল ইসলাম পনি) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আর ওই শিক্ষার্থীকে গত ১৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক কর্মকর্তা।

এমনকি পুলিশ যখন পনিকে রেস্টুরেন্ট থেকে আটক করে তখনও ওই কর্মকর্তাও পনির সাথে রেস্টুরেন্টে উপস্থিত ছিল৷ আর এসব কারণে তদন্ত কমিটিকে সকল প্রশ্নের উর্ধ্বে রাখতে তাকে কম্পিউটার চুরির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। কিন্তু এতে ওই কর্মকর্তা ক্ষিপ্ত হয়ে যান এবং তদন্ত কমিটিতে থাকা তিন শিক্ষকসহ পাঁচ সদস্যকে হুমকি প্রদান করেন"।

এসময় তারা আরও বলেন, "শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদেরকে হুমকি প্রদানের ঘটনা কখনোই মেনে নিবেনা এবং তারা গত বছরের সেপ্টেম্বরে যেভাবে সাবেক উপাচার্য খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলো এখনও সেভাবে এই ঘটনার প্রতিবাদ করবে"।

কম্পিউটার চুরির ঘটনা সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি জনসম্মুখে প্রকাশের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. নূরউদ্দিন আহমেদ বলেন, "কম্পিউটার চুরির ঘটনা সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদনটি তদন্ত কমিটি যথাসময়ে রেজিস্ট্রার অফিসে জমা দিয়েছে। পরবর্তীতে বিষয়টা শৃঙ্খলা বোর্ডে উঠবে। এই বোর্ডের চেয়ারম্যান মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ড এখন পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদনটি না চাওয়ার কারনে প্রতিবেদনটি এখনো হস্তান্তর করা হয়নি এবং তিনি আরো বলেন, শৃঙ্খলা বোর্ড বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন। শৃঙ্খলা বোর্ড তদন্ত প্রতিবেদন চাইলে রেজিস্ট্রার অফিস থেকে তদন্ত প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করা হবে"।

এর আগে গত ১৯ আগস্ট সহকারী রেজিস্ট্রার মোঃ নজরুল ইসলাম হীরা তদন্ত কমিটির কাজে বাঁধা দিচ্ছেন এবং তদন্ত কমিটিকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন এমন অভিযোগে বশেমুরবিপ্রবির রেজিস্ট্রার ড. নূরউদ্দিন আহমেদের নিকট যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে লিখিত আবেদনপত্র দিয়েছিলেন তদন্ত কমিটির পাঁচ সদস্য।

তবে হুমকি দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন সহকারী রেজিস্ট্রার মোঃ নজরুল ইসলাম হীরা। তিনি বলেন, "আমি কাউকে হুমকি দেইনি বরং কম্পিউটার চোর ধরার বিষয়ে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছিলাম। আমার বিরুদ্ধে এখন একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে"।

প্রসঙ্গত, গত ঈদুল আজহার ছুটিতে বশেমুরবিপ্রবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি থেকে ৪৯ টি কম্পিউটার চুরি হয়। এ চুরির ঘটনায় বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষার্থী মাসরুল ইসলাম পনিসহ মোট সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ এবং ৩৪ টি কম্পিউটার উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে গত ১০ আগস্ট সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ৬ সেপ্টেম্বর তদন্ত কমিটির সকল সদস্যের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. নূরউদ্দিন আহমেদের নিকট প্রতিবেদনটি জমা দেন। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অফিস থেকে ২টি কম্পিউটার চুরির ঘটনা সামনে আসে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads