• বুধবার, ১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪২৯
বাড়ি যেতে বাস চান জবি শিক্ষার্থীরা

সংগৃহীত ছবি

ক্যাম্পাস

বাড়ি যেতে বাস চান জবি শিক্ষার্থীরা

  • জবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৬ মে ২০২১

করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু  হার ক্রমাগত বাড়তে থাকায়  সরকারের ডাকা লকডাউনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) অনেক শিক্ষার্থী ঢাকায় আটকা পড়েছেন। দূরপাল্লার পরিবহন বন্ধ থাকায় বাড়ি ফিরতে পারছেন না অনেকেই। লকডাউন কবে শেষ হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এ অবস্থায় বাড়ি ফিরতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বাস প্রত্যাশা করছেন তারা।

লকডাউনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনের মাধ্যমে পুরান ঢাকায় আটকে থাকা জবি শিক্ষার্থীদের বিভাগীয় শহরগুলোতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আবেদন করে গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, করোনা মহামারীর জন্য চলমান লকডাউন আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বর্ধিত করা হলেও ঈদের আগে আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী মেসের ভাড়া পরিশোধ, খরচ চালানোর জন্য এই লকডাউনেও পুরান ঢাকায় থেকে টিউশন করে গেছি একটা আশা ছিল, লকডাউন ছাড়লে তারা বাড়ি যাবে কিন্তু সে আশাটি এখন অধরা থেকে যাচ্ছে। বিগত কয়েক দিনে যারা প্রাইভেট কারে বাড়ি গিয়েছেন, তাদের সবারই প্রায় ১৫০০/২০০০/২৫০০ টাকা করে যাতায়াত খরচ লেগেছে। পুরান ঢাকায় যারা টিউশনের জন্য এতদিন থেকে গেছেন, তাদের মধ্যে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের পক্ষে এত টাকা বহন করে বাড়ি যাওয়া সম্ভব হবে না। মেসের ভাড়া, খাবার খরচ, যাতায়াত ভাড়া একসঙ্গে সব বহন করা সম্ভবপর হচ্ছে না। এদিকে আমাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো হলো নেই এবং এই লকডাউন ও ঈদে একাকি ঢাকা অবস্থান করাটাও শিক্ষার্থীদের পক্ষে অসম্ভব।

আরো বলা হয়, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এই করোনা লকডাউন মহামারীতে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহন দিয়ে পুরান ঢাকায় আটকে থাকা শিক্ষার্থীদের ৮টি বিভাগীয় শহরগুলোতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিনীত মানবিক অনুরোধ রইল। করোনা লকডাউনে এই ক্রান্তিলগ্নে পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য আমাদের জবিয়ানদের জন্য এই মানবিক উদ্যোগটি গ্রহণ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা চির কৃতজ্ঞ থাকবে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমাদের অনেক বাস রয়েছে। আমরা এখন বাড়ি ফিরতে বাস পাচ্ছি না। বাড়ি যাওয়া প্রয়োজন, তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে যদি কয়েকটা রুটে বাস দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের জন্য খুব ভালো হবে।

বাংলা বিভাগের শাহারিয়ার নামের একজন শিক্ষার্থী বলেন, এখন এভাবে বাড়ি যাওয়া কষ্টকর। ঢাকায় থাকাও ঝামেলা। তাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাস দিলে ভালো হতো। আমাদের উপকার হতো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষার্থী বলেন, মাস শেষে টিউশন করে ৪০০০ টাকা পাব। বাড়ি যেতেই দুই হাজারের ওপরে লাগবে আবার ফিরতে লাগবে সেরকম টাকা। এখন কীভাবে কী করব, মাথায় আসছে না।

গ্রামের বাড়ি যশোর যেতে চাওয়া আরেক শিক্ষার্থী শাকিল বলেন, আমরা সবাই নিরাপদে বাড়ি পৌঁছাতে চাই। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ৭ম ব্যাচের শাহাদাত ভাইয়ের মতো যেন আর কোনো জবিয়ান এমন দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অকালে প্রাণ হারাতে না হয়, সেজন্য এই লকডাউনে আটকে থাকা পুরান ঢাকার অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর মানবিক বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য জবি প্রশাসনের নিকট বিনীত অনুরোধ রইল, এতে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা চিরকৃতজ্ঞ থাকব।

এ বিষয়ে করোনা মোকাবিলায় ‘জবিয়ানের পাশে জবিয়ান’ টিমের সংগঠক কনিক স্বপ্নীল বলেন, এখন ২৫০০-৩০০০ টাকা ভাড়া দিয়ে বাড়ি যাওয়া অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য অসম্ভব। তারা মেস ভাড়া দেবে কী দিয়ে, খাবে কী দিয়ে, কীভাবে বাড়ি যাবে? কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যেন শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ায়।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলের প্রশাসক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, এটা করা আমার পক্ষে সম্ভব না, উপাচার্য স্যার বললেই সম্ভব। উপাচার্য স্যার বললে পরিবহন সেবায় শিক্ষার্থীরা বাড়ি যেতে পারবে।

এ ব্যাপারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য কামালউদ্দিন আহমদ বলেন, এটা আমার একার পক্ষে করা সম্ভব না। সবার সাথে বসে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমার একক সিদ্ধান্তে এটা হবে না।

উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৩ এপ্রিল গোপালগঞ্জ থেকে রংপুর পর্যন্ত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস দেয়। এতে ৪০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী তাদের নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads