• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
কোন বয়সে কেমন খেলনা

সংগৃহীত ছবি

শিশু

কোন বয়সে কেমন খেলনা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৪ আগস্ট ২০২১

০ থেকে ৬ মাস : প্রথম ৩ মাস বাচ্চার দৃষ্টিশক্তি কিন্তু ঝাপসা থাকে, শুরুতে সবকিছু ডাবল দেখে। আস্তে আস্তে উজ্জ্বল আলো, রঙিন বড় বড় জিনিস, মায়ের মুখ চিনতে শুরু করে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে আশেপাশের জিনিস চিনতে, হাত দিয়ে ধরতে ও মুখে দিতে চেষ্টা করে।

কী খেলনা দেবেন : এ সময় নরম, সহজে চ্যাপ্টা করা যায়, কোনো ধারালো কোনা ছাড়া, মুখে চিবানো যায় তবে মুখে যাওয়ার মতো কোনো ছোট দানাদার কিছু নয়, সহজে পরিষ্কার করা যায় এমন খেলনা দিতে পারেন। ঝুনঝুন শব্দ করা খেলনা বাচ্চারা পছন্দ করে, সেটি দিতে পারেন। এছাড়া উজ্জ্বল রঙের বল, কাপড়ের পুতুল, প্লাস্টিকের ছবি বা আয়না দিতে পারেন। ছড়া, গান, কবিতা গান শোনাতে পারেন বা হাত-পা নেড়ে অভিনয় করে দেখাতে পারেন।

৭ থেকে ১২ মাস : এ সময় একটু একটু করে নড়াচড়া শুরু করে বাচ্চারা, গড়িয়ে উপুড় হওয়া, ধরে দাঁড়ানো, নিজের নাম ও শরীরের বিভিন্ন অংশ চিনতে পারাই এ সময় তাদের কর্মচঞ্চলতার লক্ষণ।

কী খেলনা দেবেন : বল, পুতুল, গাড়ি, বড় কিউব বা লেগো, কাগজ, বোতলের মধ্যে মুড়ি ভরা, শব্দ করে এমন খেলনা বা বাদ্যযন্ত্র। গল্পের বই থেকে ছোট ছোট গল্প, ছড়া, ছবি দেখানো। বই হাতে নিল, কাগজ ছিঁড়ল, মুখে দিল, ছবি দেখে চেনার চেষ্টা করানো এটুকুই হতে পারে তার বিনোদন।

১ বছর থেকে ২ বছর : শুরু হলো গতিময় জীবন। ধরে ধরে হাঁটতে শেখা, আস্তে আস্তে হাঁটা, সিড়ি বেয়ে উঠা, কিছু ছুড়ে দেওয়া, লুকিয়ে রাখলে খুঁজে বের করতে চাওয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকা ইত্যাদি।

কী খেলনা দেবেন : এ সময় বল, কাপড় বা প্লাস্টিকের পুতুল বা জীবজন্তু, মিউজিকাল সেট, লেগো, চার বা ছয় পিসের পাজল সেট, মোমের রং পেন্সিল, কাগজ ও পেন্সিল দাগাদাগি করার জন্য দিতে পারেন।

২ থেকে ৩ বছর : এ সময় দৌড় ঝাপের পাশাপাশি আঙুলের সূক্ষ্ম ব্যবহারগুলোও শেখে। এমনকি চিমটি দেওয়াও শুরু করে। দক্ষতা ও কাজের পরিধি বাড়ানোর জন্য এ সময় তাদের বিভিন্ন পাজল, লেগো দিয়ে ঘর বানানো, কিচেন সেট, কনস্ট্রাকশন সেট যেমন, হাতুড়ি বাটালি, ভোঁতা কাঁচি এসব দিয়ে নতুন কিছু তৈরি করা, ঘর সাজানো, বড়দের নকল করতে ডাক্তারি সেট, ইঞ্জিনিয়ার সেট, শপিংমল, কিচেন সেট, বারবি পুতুলের ঘর এসব দেয়া যেতে পারে। এমনকি হাঁড়িপাতিল, টিসেট, তিন চাকার সাইকেল, খেলনা গাড়ি, বাদ্যযন্ত্র বাচ্চাদের উপযোগী দেওয়া যায়। এ সময়টাই বর্ণ চেনানোর উপযুক্ত সময়। বিশেষ করে এবিসিডি উচ্চারণসহ পিয়ানো। এসব কানে শুনে ও চোখে দেখে পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ে।

৪ থেকে ৫ বছর : পড়ালেখা শেখার সময় এখন থেকে শুরু। এ সময় এদের জানার আগ্রহ থাকে প্রচুর। কী, কেন, কীভাবে সারাক্ষণ যেন প্রশ্নের খই ফোটে। নতুন কিছু শেখার আগ্রহ ও অন্য বাচ্চাদের খেলার আগ্রহ এ সময় তাদের বন্ধু তৈরি ও শেয়ার করা শেখায়।

কী খেলনা দেবেন : শিক্ষামূলক হলে ভালো হয়। যেমন বর্ণমালা দিয়ে তৈরি বড়, কিউব, পাজল, আর্ট এন ক্রাফট, বিভিন্ন জিনিস তৈরি; যেমন তুলো দিয়ে মেঘ, কাটা সবজি বা চাল দিয়ে ফুল পাতা ঘর, রঙ করা ও ছবি আঁকার বই, বিদ্যুৎচালিত খেলনা, সুপার হিরোদের পুতুল, জামাকাপড়, আসবাবপত্রসহ খেলনা ঘর, ট্রেন, অ্যারোপ্লেন, নৌকা, রং করার সামগ্রী। এসব তাদের বর্ণমালা বলতে ও লিখতে শেখার অভ্যাস করানো যায়।

৬ থেকে ৭ বছর : এ সময় একা একা নয়, দল বেঁধে খেলতে আগ্রহী হয় বাচ্চারা। একসাথে ঘরে বসে দাবা, লুডু, ক্যারাম বা মনোপলি খেলতে আগ্রহ বোধ করে। এছাড়া কম্পিউটার, মোবাইল বিভিন্ন ডিভাইসের প্রতি আগ্রহ  ও তা সহজে আয়ত্ত করার দক্ষতা অর্জন করে ফেলে। বিভিন্ন স্পোর্টসে আগ্রহী করার জন্য ব্যাট বল, টেনিস ব্যাট, ব্যাডমিন্টন এসব দিয়ে খেলতে দেয়া যায়।

৮ বছর বা এর ঊর্ধ্বে : এ বয়সে বাইরের খেলাগুলোতেই বেশি উৎসাহিত হয় বাচ্চারা। বিভিন্ন সায়েন্টিফিক গেম সেট দিয়ে বাচ্চাদের উৎসাহ দেওয়া যায় জ্ঞান চর্চার জন্য।

বাচ্চাদের কীভাবে গড়ে তুলবেন তার মূল চালিকাশক্তি আপনার হাতে রাখবেন। জিদকে প্রশ্রয় দেবেন না, বাচ্চার সামনে নিজেকে রোল মডেল হিসেবে তুলে ধরুন। মনে রাখবেন, ভালো কিছু পেতে হলে তার জন্য অবশ্যই আপনাকে সময় দিতে হবে। কারণ পৃথিবীতে কোনোকিছুই বিনা পরিশ্রমে বা চাইলেই পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads