• বুধবার, ১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪২৯
ঐতিহাসিক বারোবাজার মসজিদ

বারোবাজার অঞ্চলে ৮৪ একর পুকুর ও দিঘি এখনো বিদ্যমান

সংরক্ষিত ছবি

সারা দেশ

ঐতিহাসিক বারোবাজার মসজিদ

  • ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৬ জুন ২০১৮

বারো আউলিয়ার বারোবাজার কালীগঞ্জ শহর থেকে ১৭ কিলোমিটার দক্ষিণে। যশোর জেলা শহর থেকে ১১ মাইল উত্তরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দুই ধারে অগণিত পুকুর ও দিঘির ক্ষুদ্র ঢেউ, বুড়ি ভৈরব নদীর তীরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত ঐতিহাসিক মসজিদ পরিবেষ্টিত বারোবাজার। কিছু ইতিহাসবিদ ও কিংবদন্তির মতে, বঙ্গবিজয়ী বীর ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি নদীয়া দখলের পর নদীয়ার দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্বে বিস্তীর্ণ অঞ্চলের দিকে মনোযোগী না হয়ে উত্তরদিকে বেশি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। ফলে তার বিজিত রাজ্য উত্তরদিকে প্রশস্ত হতে থাকে। পরে ১৯৪২ সালে সামছুদ্দিন ইলিয়াস শাহের পৌত্র নাসির উদ্দিন মাহমুদ শাহের শাসনামলে যশোর ও খুলনার কিছু অংশ তার রাজ্যভুুক্ত হয়। ওই অঞ্চলে বিজয়ের গৌরব অর্জন করেন বৃহত্তর খুলনা জেলার বাগেরহাটের শ্রেষ্ঠ আউলিয়া হজরত খানজাহান আলী। তিনি ১৬৫৯ সালে (৮৬৩ হিজরি) ২৩ অক্টোবর ইহধাম ত্যাগ করেন। তিনি একসময় নিজের আত্মরক্ষার্থে একটি ক্ষুদ্র সেনাবাহিনীর অধিনায়ক হয়ে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতগঞ্জে প্রবেশ করেন। সেখান থেকে বৃহত্তর যশোর জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার হাকিমপুর হয়ে বারোবাজার অভিমুখে রওনা দেন। পথিমধ্যে জনসাধারণের পানীয় জলের তীব্র কষ্ট দেখে তিনি এ অঞ্চলে অগণিত দিঘি আর পুকুর খনন করেন। কথিত আছে, এক রাতেই এসব জলাশয় খনন করা হয়েছিল। ফলে বারোবাজার অঞ্চলে ৮৪ একর পুকুর ও দিঘি এখনো বিদ্যমান। হজরত খানজাহান আলীর দৃঢ় মনোবল, উদারতা, দানশীলতা ও মহানুভবতায় এলাকাবাসী মুগ্ধ হয়ে পড়েন। এলাকার অনেক অমুসলিম ইসলাম ধর্ম গ্রহণে ঝুঁকে পড়েন। এভাবে একযুগ অবস্থানের পর এক শিষ্যের তত্ত্বাবধানে দিয়ে তিনি শেষ জীবন বাগেরহাটে অতিবাহিত করেন। তার স্থাপত্য নিদর্শন রয়ে গেছে বারোবাজারে, যেখানে অনেক মসজিদ মাটির নিচ থেকে আবিষ্কার করা হয়। বারোবাজার অঞ্চলের সবচেয়ে বড় নিদর্শন ৩২ গম্বুজবিশিষ্ট সাতগাছিয়া আদিনা মসজিদ ও বারোবাজারের গলাকাটা দিঘির ছয় গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ, যে মসজিদটি শত শত বছর মাত্র দুটি ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এছাড়া এখানে রয়েছে অগণিত মসজিদ। মাটির ঢিবি সরিয়েই তার সন্ধান পাওয়া যায়। এসবের অনেকগুলো আবিষ্কার করে আংশিক সংস্কারও করা হয়েছে। এখনো অনেক মসজিদ মাটির নিচে রয়েছে বলে ধারণা করা যায়। কারণ এ পর্যন্ত যতগুলো মাটির ঢিবি সরানো হয়েছে, ততগুলো মসজিদের সন্ধান পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads