• সোমবার, ৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪২৯
সমুদ্রে গোসলের নিয়ম মানছেন না পর্যটকরা

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে গোসল করার নিয়ম মানছেন না পর্যটকরা

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

সমুদ্রে গোসলের নিয়ম মানছেন না পর্যটকরা

বাড়ছে দুর্ঘটনা

  • মাহাবুবুর রহমান, কক্সবাজার
  • প্রকাশিত ২৬ আগস্ট ২০১৮

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে গোসল করার নিয়ম মানছেন না পর্যটকরা। এতে বাড়ছে দুর্ঘটনা। আর বিপুলসংখ্যক পর্যটককে সামাল দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। সংশ্লিষ্টদের দাবি, নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট জোনের মধ্যে গোসল করলে সমস্যা হয় না। তবে অনেকে বাড়তি উচ্ছ্বাসের কারণে সাগরের গভীরে, নির্দিষ্ট সুইমিং জোনের বাইরে, ভাটার সময়, এমনকি সন্ধ্যার পরও সাগরের পানিতে থাকেন। এতে বিপদ বাড়ে। গত দুই দিনে দুজন পর্যটককে সাগরের পানি থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে (এর মধ্যে একজন শিশু) জানিয়ে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে নিয়ম মেনেই গোসল করার আহ্বান জানান।

কক্সবাজার হোটেল মালিক সমিতির হিসাব মতে ঈদুল আজহার ছুটি উপলক্ষে কক্সবাজারে চার লাখের বেশি পর্যটক এসেছে। কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ সমুদ্রসৈকত। আর কক্সবাজার এসে সমুদ্রের পানিতে একটু গা না ভেজালে অপূর্ণতা থেকে যায়। তাই বেশিরভাগ পর্যটক সাগরে গোসল করাটাকেই সবচেয়ে বেশি প্রধান্য দেন। তবে সাগরে গোসল করতে গিয়ে অনেক পর্যটক নিয়ম না জেনে বা বাড়তি উচ্ছ্বাসের কারণে জীবনের ঝুঁকিতে পড়ে যান।

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে কর্মরত সি-সেইভ লাইফ গার্ডের কর্মী আবদুস শুক্কুর বলেন, সাগরে গোসল করাটা পর্যটকদের কাছে প্রধান আনন্দের বিষয়। কিন্তু কিছু নিয়ম না মানার কারণে সেটা অনেক সময় কান্নার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেমন বিচের তিনটি স্থানে লাল, সবুজ পতাকা দেওয়া থাকে সেখানে গোসল করা মোটামুটি নিরাপদ। স্থান তিনটি হলো— বিচ পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট ও কলাতলী। এসব জায়গায় আমাদের ২৬ জন লাইফ গার্ড সর্বক্ষণ নজরদারিতে রাখেন। যখনই কোনো সমস্যা হয় আমরা উদ্ধার কাজে নেমে পড়ি। নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে কেউ গোসল করতে নামলে তখন আমাদের করার কিছুই থাকে না। তিনি জানান, মূলত পর্যটকরা অতি উচ্ছ্বাসের কারণে গোসল করার সময় নিজের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যান। ঢেউয়ের সঙ্গে খেলা করতে করতে অনেকে বেশি গভীরে চলে যান। এ ছাড়া ভাটার সময় এমনকি সন্ধ্যার পরও সাগরের পানিতে থেকে যান। তাই মাঝেমধ্যে বিপদ হয়ে যায়।

সমুদ্রসৈকতের বিচ কর্মী মাহবুব বলেন, সাগরে গোসল করার সময় অনেককে সাইরেন বাজিয়ে সতর্ক করি, অনেক নারী-শিশুকে নির্দিষ্ট পরিমাণ পানির বাইরে যেতে বারণ করি। অনেকে কথা শোনেন, বেশির ভাগই শোনেন না। অনেক সময় তারা আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। তবুও আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাই। আবার ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে সবসময় গাড়ি দিয়ে মাইকিং করে পর্যটকদের সতর্ক করা হয়।

গতকাল শনিবার কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে গিয়ে দেখা যায়, কয়েক হাজার নারী-পুরুষ পর্যটক সাগরে গোসল করছেন। এ সময় অনেক পর্যটক বেশি পানিতে চলে গেলে বিচ কর্মীরা তাদের সাইরেন বাজিয়ে সতর্ক করলেও তারা পানি থেকে উঠে আসছেন না।

এ ব্যাপারে কক্সবাজারের ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, পর্যটকরা মনে করে সাগরের উপরে যেমন সমতল তেমনি পানির নিচেও সমতল। আসলে পানির নিচে অনেক সময় গর্ত থাকতে পারে বা অন্য কিছু হতে পারে। তা ছাড়া নিজের শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে পানিতে নামা উচিত। নিয়ম মেনে গোসল করলে অবশ্যই বেশকিছু অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তিনি বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের ৭৫ সদস্য দিন-রাত কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতসহ জেলায় পর্যটকদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads