• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
খালি পড়ে আছে অসংখ্য ‘ইয়াবা প্রাসাদ’

মাদক ব্যবসায়ীর বাড়িতে পুলিশি অভিযান

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

খালি পড়ে আছে অসংখ্য ‘ইয়াবা প্রাসাদ’

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা চালানের বেশিরভাগই আসে কক্সবাজার জেলা হয়ে। তাই ইয়াবা পাচারের সঙ্গে জড়িত ‘গডফাদারদের’ অনেকের বাড়িই এই জেলায়। এদের কেউ কেউ ইয়াবা বিক্রি করে কোটিপতি বনে গেছে; কিনেছে অঢেল জায়গা-জমি, বানিয়েছে বিলাসবহুল সব বাড়ি। মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান শুরুর পর কক্সবাজারের এসব ইয়াবা ব্যবসায়ীর অনেকেই ‘সেফহোমে’ আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এমতাবস্থায় এসব মাদক কারবারির সম্পদ ও বাড়িঘর জব্দ করা হবে কি-না এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পুলিশ বলছে, মাদক কারবারিদের সম্পদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। 

একাধিক সূত্রের বরাতে বাংলাট্রিবিউনের এক বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন কক্সবাজারে পুলিশ হেফাজতে অন্তত ৭০ জনের মতো ইয়াবা কারবারি আছে। তারা এক ধরনের ‘সেফহোমে’ রয়েছে। দুবাই, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া থেকে এসে সেখানে অবস্থান করছে তারা। তাদের মধ্যে সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির তিন ভাইসহ টেকনাফ উপজেলার ইয়াবা কারবারি রয়েছে অন্তত ৫০ জন। রয়েছে বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধিও।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সূত্র মতে, ইয়াবার টাকায় দৃষ্টিনন্দন দ্বিতল বাড়ি করেছে তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী হ্নীলার লেদা এলাকার নুরুল হুদা, চকবাজার এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য সৈয়দ হোসেন, টেকনাফের কুলালপাড়ার নুরুল বশর প্রকাশ নুরশাদ ও জালিয়াপাড়ার জোবাইর হোসেন। এরা সবাই ‘সেফহোমে’ রয়েছে। এছাড়া পালিয়ে থাকা মৌলভীপাড়ার আবদুর রহমান মাদকের টাকায় গড়েছে দামি ভবন। সদরে আলিশান বাড়ি গড়েছে শাহজান মিয়া, কুলারপাড়ায় বাড়ি বানিয়েছে মোহাম্মদ কাদের। আবদুল আমিন, মোহাম্মদ আমিন ও নুরুল আমিন তিন ভাই মাদক পাচার করে ডেইলপাড়ায় তুলেছে দৃষ্টিনন্দন বাড়ি।

ইয়াবা চোরাচালানের টাকা দিয়ে বানানো এসব বিলাসবহুল বাড়ি ফেলে রেখে অনেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সম্প্রতি মাদকবিরোধী অভিযানে সীমান্তের ৬০টির মতো বিলাসবহুল বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ, বিজিবি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও গোয়েন্দা পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের শীর্ষ একজন কর্মকর্তা বলেন, ইয়াবার টাকায় শতাধিক আলিশান বাড়ি বানানো হয়েছে টেকনাফ সীমান্তে। এর মধ্যে ৬০টি বাড়ির মালিকের নাম আমাদের তালিকায় রয়েছে। তালিকার বাইরে থাকা ইয়াবা চোরাচালানির ৪০টি বিলাসবহুল বাড়ির তথ্য রয়েছে আমাদের কাছে।

তিনি আরো বলেন, সীমান্তে তারা যেভাবে বাড়ি বানিয়েছে, এমন বাড়ি ঢাকার গুলশান-বনানীতেও দেখা যায় না। ওইসব বাড়ির জিনিসপত্র দেখে মনে হয় বিদেশ থেকে আনা হয়েছে। এমনকি প্রবেশপথ ও রান্নাঘরে পর্যন্ত ফ্যান লাগানো আছে। এগুলোকে রাজপ্রাসাদের মতো মনে হয়। তবে এগুলো আসলে ইয়াবা প্রাসাদ। কারণ ইয়াবার টাকায় এসব বাড়ি বানানো হয়েছে।

টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই আমাদের নজরে আছে। মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু হওয়ায় তালিকাভুক্ত ইয়াবা গডফাদাররা বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। ইয়াবার টাকায় যারা রাজপ্রাসাদের মতো বাড়ি বানিয়েছে, তাদের বাড়ি, গাড়ি ও ব্যাংক ব্যালেন্সের তথ্যও সংগ্রহ করা হচ্ছে। মাদকের সঙ্গে জড়িত কেউ রেহাই পাবে না।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছি আমরা। মাদকের টাকায় যারা অঢেল সম্পদ গড়েছে, তারা কেউই এখন স্বস্তিতে নেই। তারা কেউ রেহাই পাবে না। মাদক বন্ধ করতে যা যা করা দরকার আইনের মধ্য থেকে আমরা তার সবই করব।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads