• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জৈষ্ঠ ১৪২৯
 কলমাকান্দায় নারী নির্যাতন মামলার আসামি গ্রেফতার হয়নি এক মাসেও

প্রতীকী ছবি

সারা দেশ

কলমাকান্দায় নারী নির্যাতন মামলার আসামি গ্রেফতার হয়নি এক মাসেও

  • কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১০ এপ্রিল ২০১৯

নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দার নাজিরপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের গৃহবধূ শারমিন আক্তারের (১৯) ওপর নির্যাতন মামলার আসামিরা এক মাসেও গতকাল বুধবার পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি। আসামিরা মামলার বাদী ও তার আত্মীয় স্বজনকে প্রাণনাশের হুমকি ধমকি দিচ্ছে মামলা তুলে নেয়ার জন্য। বাদীর মা নুরুন্নাহার বেগম জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে নেত্রকোনা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বাদী ও তার স্বজনদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, জেলার কলমাকান্দার নাজিরপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের মো. আবদুল জলিলের ছেলে মো. রাজিব মিয়ার সঙ্গে গত বছরের ৬ এপ্রিল একই ইউনিয়নের পাঁচকাটা গাছতলা গ্রামের মো. বাচ্ছু মিয়ার মেয়ে শারমিন আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ করে আসবাবপত্র দেওয়া হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই রাজিব মিয়া বাবার বাড়ি থেকে আরও যৌতুক এনে স্ত্রী শারমিন আক্তারের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। অনেক সময় নির্যাতন সইতে না পেরে শারমিন আক্তার বাবার বাড়িতে চলে যেতেন। স্বামী ও শ্বশুর, শ্বাশুড়ি আর কোন সময় নির্যাতন করা হবে না বলে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় শারমিনকে বাড়িতে নিয়ে যায়। এরই মধ্যে শারমিন আক্তার আড়াই মাসের গর্ভবতী হয়ে পড়েন। পরে যৌতুকের দাবীতে রাজিব বাড়ির অন্যদের সহযোগিতায় আবারও তার ওপর নির্যাতন শুরু করে। একপর্যায়ে রাজিব মিয়া ও বাড়ির অন্যরা গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বাবার বাড়ি থেকে ২ লাখ টাকা যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এতে অপারগতা প্রকাশ করায় শারমিন আক্তারকে ঘরের মেঝেতে ফেলে রড, বাঁশের লাঠী দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করে।

এ খবর সংবাদ পেয়ে গৃহবধূ শারমিনের মা নূরুন্নাহার বেগম মেয়েকে দেখতে গেলে তাকে যৌতুক দেওয়ার কথা বলে। তা না হলে শারমিনকে নিয়ে ঘর সংসার করবে না বলে জানায় রাজিব মিয়া। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় মা নুরুন্নাহার বেগম আহত মেয়েকে উদ্ধার করে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। বিষয়টি মিমাংসার জন্য স্থানীয় কিছু লোক চেষ্টা চালায়। এতেও কোনো কাজ হয়নি। পরে শারিমন আক্তার বাদী হয়ে গত ১১ মার্চ স্বামী রাজিব মিয়া, শ্বাশুড়ি মোছা. ময়না খাতুন, শশুর আবদুল জলিল, আত্মীয় শাহজাহানের বিরুদ্ধে কলমাকান্দা থানায় মামলা করেন। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করলেও পুলিশ গ্রেফতার করছে না। উপরন্তু মামলা তুলে নেয়ার জন্য বাদী ও তার আত্মীয় স্বজনদের প্রাণনাশসহ নানা হুমকি দিচ্ছে।

এ ঘটনায় বাদীর মা নুরুন্নাহার বেগম গত ২১ মার্চ মেয়ে শারমিন, নিজের ও পরিবারের অন্যদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে রাজিব মিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন।

নূরুন্নাহার বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘আবদুল্লাহ পুলিশ (অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য) সব কিছু করাইতাছে। সে বলেছে ৩০ হাজার টাকা দিয়া মামলা খাইয়া ফালাইছে। পুলিশ কিছুই করবে না এবং আসামিও ধরবে না।’

কলমাকান্দা থানার এস.আই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবদুস সালাম বলেন, মামলার আসামিরা কেউ এলাকায় নেই। ওরা বাড়িঘর তালা লাগিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তাদেরকে ধরার জন্য একাধিকবার অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না। পরের মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই।

কলমাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাজহারুল করিম জানান, ঘটনার পর থেকেই প্রধান আসামি ও অন্যরা আত্মগোপন করেছে। গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। হুমকি দেয়ার বিষয়টি জানা নেই।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads