মাধবপুর ও বিজয়নগর উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ বিকল্প সংযোগ পথ মির্জাপুর - হরষপুর সড়ক। এই সড়ক দিয়ে দুই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ ও শত শত ছোট বড় যানবাহনের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। এ সড়কের পাশে একাধিক বড় বাজার, নৌঘাট, স্কুল - মাদ্রাসা ও রেলওয়ে স্টেশন অবস্থিত। হরষপুর রেলওয়ে স্টেশনের পশ্চিম পাশে কাইক্যাছড়া খালের উপর অবস্থিত ব্রীজটি চলাচলের জন্য বর্তমানে সম্পূর্ণ অযোগ্য। এরপরও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়ায় এ ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজ দিয়েও প্রতিদিন পারাপার হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। রেলওয়ে স্টেশনের পশ্চিমপার্শ্বের কাইক্যাছড়া ব্রীজটির পশ্চিমাংশ ভেঙ্গে ফাঁকা হয়ে রড বের হয়ে আছে ।
এ ব্রীজটির পূর্বাংশ ফাটল সৃষ্টি হওয়ার পর প্রায় ৬ পূর্বে পুনঃনিমার্ণ করা হয়। কিন্তু পূর্বাংশ পুনঃনিমার্ণ করার কিছু দিন যেতে না যেতেই ব্রীজের পশ্চিমাংশের অর্ধেক অংশে ফাটল দেখা দেয়। তবে ক্রমান্বয়ে ব্রীজের ফাটল বড় হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে ব্রীজ ভেঙ্গে রড বেড় হয়ে কঙ্কাল হয়ে দাড়িয়েছে। তবে ব্রীজের পশ্চিমাংশে ফাঁকা অংশে ষ্টিলের একটি ম্যাকার দেওয়া থাকলেও জনগনের তেমন কোন কাজে আসছে না। এর মধ্যে ব্রীজের ভাঙ্গা অংশে কিছু গাছের খুঁড়ি, ইটের কংক্রিট পেলে রাখা হয়েছে। ব্রীজের পশ্চিমাংশের প্রায় ১২ ফুট জায়গা ভেঙে ফাঁকা হয়ে এলামেলো অবস্থায় রড বের হয়ে থাকলেও প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী সহ সাধারণ পথচারিরা পাড়ি দিচ্ছে এ ব্রীজের উপর দিয়ে। ব্রীজটি ঝুঁকিতে থাকায় বিজয়নগর ও মাধবপুর উপজেলার হাজার হাজার পথচারী পড়েছে মারাত্বক ঝুঁকিতে।
ব্রীজটির নিয়মিত যাতায়াতকারী ধর্মঘর ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী পপি আক্তার বলেন, ব্রীজটি ভাঙ্গা থাকায় আমরা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্রীজ পার হই। তাই এ ব্রীজটি তাড়াতাড়ি সংস্কার করা প্রয়োজন। যে কোন মূহুর্তে ব্রীজটি ভেঙ্গে যাতায়াত ব্যবস্থা অচল হয়ে যেতে পারে। নিদারাবাদ ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মো: রাশেদ মিয়া বলেন, খুবই আতংকের মাঝে আমরা ব্রীজের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে পার হচ্ছি। কখন জানি নিচে পড়ে যাই। বেগম রোকেয়া মেমোরিয়াল কিন্ডার গার্টেনের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সামিয়া বলেন, খুব ভয় লাগে, ভাঙ্গা ব্রীজ দেখে। বিজয়নগর উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি শেখ এমরানুল ইসলাম বলেন, দুই উপজেলার সংযোগ সড়ক এটি। এ ব্রীজ দিয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। তাই দ্রুত এ ভাঙ্গা ব্রীজটি মেরামত করার জন্য দাবি জানাচ্ছি। কেননা এই ব্রীজটি এখন সাধারণ মানুষের জন্য বড়ই আতংক। এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান এড. তানভীর ভূঁইয়ার নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে, তিনি বলেন এ বিষয়ে আমাকে কেউ বলেনি। আমি প্রকৌশলীকে আজই বলব তবে প্রতিবেদকের সাথে কথা শেষ না করেই মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন তিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মেহের নিগার জানান, আমি বিষয়টি জেনেছি। প্রকৌশলী সাথে কথা বলে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করব। উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ব্রীজটি দেখেছি এবং ছবি সহ ব্রীজের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবর চিঠি পাঠিয়েছি। তবে জরুরী ভিত্তিতে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় সে বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে আলোচনা করছি। আমরা খুব দ্রুতই এর একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সড়কে মাসাধিককাল ব্রীজ ভেঙ্গে পড়ে আছে। মানুষজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ মরণফাঁদ অতিক্রম করছেন। বড় কোন দূর্ঘটনা ঘটার আগেই এ ব্রীজটির মেরামত করা হবে এমনটাই জনগণের প্রত্যাশা।