• বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪২৯
দম ফেলার ফুসরত নেই কামারপাড়ায়

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

দম ফেলার ফুসরত নেই কামারপাড়ায়

  • মো. শাহাদৎ হোসেন শাহ, দিনাজপুর
  • প্রকাশিত ০৪ আগস্ট ২০১৯

আগুনের ফুলকিতে গরম লোহায় রাতভর হাতুড়ির পিটুনি। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দিনাজপুরে দম ফেলার সময় নেই দা, বঁটি, চাকু, চাপাতি, কুড়ালসহ লোহার যন্ত্র তৈরির কারিগরদের। মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আযহা দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ব্যস্ততা বাড়ছে কামার পল্লীতে। যেন দম ফেলার ফুসরত নেই কামারপাড়ায়।

এই উৎসবের মূল শিক্ষা কোরবানি। পশু কোরবানির মধ্যদিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় শেষ মুহূর্তে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। আর কোরবানির এসব পশু কাটাকাটিতে চাই ধারালো দা, বঁটি ও ছুরি। ঈদকে কেন্দ্র করে দিনাজপুরের কামারপল্লীগুলো এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। কয়লার চুলোয় দগদগে আগুনের ফুলকি আর গরম লোহায় ওস্তাত-সাগরেদের ছন্দময় পিটাপিটিতে মুখর হয়ে উঠেছে কামারশালাগুলো। দিন শেষে রাতেও বিরাম নেই এসব কারিগরদের। দিন রাত বিরামহীন পরিশ্রম করে কারিগররা তৈরী করছে দা, বঁটি, চাকু, ছুরি, চাপাতি ও কুড়াল। অধিকাংশ দোকানীই তাদের নিজেদের তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করছেন। আবার কোরবানীর পশুর চামড়া ছেঁড়ার কাজটি সহজ ও স্বাচ্ছন্দের সহিত সম্পন্ন করতে অনেকে পুরাতনগুলোকে সংস্কারের জন্য নিয়ে আসছেন কর্মকারদের কাছে।

দিনাজপুর শহরের বালুবাড়ী কামারপাড়ার কামার উত্তরায় ও গোলাপ চন্দ্র জানান, কিছু খুচরা ব্যবসায়ী তাদের তৈরিকৃত যন্ত্রপাতি পাইকারী কিনে নিয়ে জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করছেন। তবে এ মৌসুমে কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ী রয়েছে যারা শুধু ঈদের সময় এ ব্যবসা করে থাকেন। পশু জবাই থেকে শুরু করে রান্নার জন্য চুড়ান্ত প্রস্তুতি পর্যন্তু দা, বঁটি, চাকু, ছুরি, চাপাতি ইত্যাদি ধাতব হাতিয়ার প্রয়োজন হয়। আর তাই ঈদের বিপুল চাহিদার জোগান দিতে এক মাস আগে থেকেই এসব যন্ত্রপাতি তৈরির কাজ শুরু হলেও, শেষ মুহূর্তে এসে কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় দিন-রাত সমান তালে কাজ করতে হচ্ছে।

তারা আরো জানান, ঈদকে সামনে রেখে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার যন্ত্রপাতি বিক্রি হচ্ছে। তাইতো অন্যান্য সময়ের তুলনাই ঈদ-উল-আযহার এ সময়ে কর্মব্যস্ততাও অনেকাংশে বেড়ে যায়। কারণ এ সময় দা, বঁটি, চাকু, ছুরি, চাপাতিসহ লোহার যন্ত্রপাতির চাহিদা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। কোরবানি সংশ্লিষ্ট কাজের অর্ডারই এখন বেশি বলে কারিগররা জানান। এছাড়া এ শিল্পে ব্যবহৃত কয়লাসহ অন্যান্য কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সে অনুযায়ী বাড়েনি তাদের তৈরি জিনিসপত্রের দাম।

কারিগররা জানান, এ পেশায় পরিশ্রমের চেয়ে পারিশ্রমিক কম। তাইতো সময়ের বির্বতনে কোন কোন কর্মকার জীবিকার তাগিদে পূর্ব-পুরুষের পেশা ছেড়ে অন্য কাজে ঝুকে পড়ছেন। সারাদিন আগুনের পাশে বসে কাজ করতে হয়। তবুও পূর্ব-পুরুষের রেখে যাওয়া এই পেশাই উৎসাহের কমতি নেই কামার পল্লীর এসব কর্মকারদের।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads