• মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪২৯
 সড়কে 'সাঁতার কাটছে' যানবাহন

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

দুর্গাপুর-কলমাকান্দা সড়কে ঈদ যাত্রায় ভোগান্তি

সড়কে-'সাঁতার-কাটছে'-যানবাহন

  • রিফাত আহমেদ রাসেল, দুর্গাপুর (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৫ আগস্ট ২০১৯

নেত্রকোনার দুর্গাপুর-কলমাকান্দা দুই উপজেলার যোগাযোগের একটি মাত্র সড়ক। প্রতিদিন দুই উপজেলার হাজারো মানুষ, যানবাহন থেকে শুরু করে রোগীবাহী গাড়ীসহ সকল কিছুই যাতায়াত করছে এই সড়ক দিয়ে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে যাত্রীদের চাপ বাড়ায় দিন দিন খারাপ হতে থাকে সড়কটি । এ অবস্থায় দুর্গাপুর-কলমাকান্দা পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার এই সড়কটি নতুন করে সংস্কারের জন্য মোট তিন প্যাকেজে গত বছরের ৫ই আগস্ট সাড়ে ২৪ কোটি টাকায় ব্যয়ে ডলি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করে। এর মাঝে দুর্গাপুর-নাজিরপুর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটারের একটি প্যাকেজ ও নাজিরপুর- কলমাকান্দা বাজার পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার বাকী দুইটি প্যাকেজের কাজ ধরা হয়।

চলতি বছরের ৬ই মে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত দুই মাস পার হয়ে গেলেও এখনো সড়কের বেশির ভাগ অংশের কোনো কাজই শুরু করেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। আর যে সব স্থানে বা কাজ করেছে ওই অংশে শুধু ইট দিয়ে কার্পেটিং করে রাখায় বৃষ্টির পানি জমে তৈরি হয়েছে ছোট বড় অসংখ্যা খানাখন্দ। এসব খানাখন্দে যানবাহন পড়ে ঘটছে দুর্ঘটনা। গাড়ি উল্টে কারো হাত ভাঙ্গছে আবার কারো বা ভাঙ্গছে পা। আশপাশের বাড়ি-ঘর, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও পড়েছে এর প্রভাব। সড়ক ভালো না থাকায় কোনো কিছুই করতে পারছেন না এই সড়কের দুই পাশের বাসিন্দারা।

তাছাড়া আর কিছু দিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা। পরিবার পরিজন, বন্ধু বান্ধব,আত্মীয় স্বজনসহ সবার সঙ্গে ঈদ করতে শহর ছেড়ে মানুষ আসতে শুরু করেছে ছুটে গ্রামের পথে। কিন্তু সড়কের বেহাল দশা ও বড় বড় খান্নাখন্দ মানুষের যাতায়াতে নেমে এসেছে সীমাহীন ভোগান্তি। মাত্র ২৫ কিলোমিটারের এই সড়ক পাড়ি দিতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টার পেড়িয়ে গেলেও গন্তব্যের দেখা পাচ্ছে না যাত্রীরা।

এদিকে কলমাকান্দা-ঠাকুরকোনা সড়কটিও রয়েছে বেহাল দশায়। সড়কটির অনেকাংশেই বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল। এখন এই উপজেলা কয়েক লাখ মানুষ রাজধানী শহর ঢাকা সহ সারা দেশের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র পথ হয়ে দাঁড়িয়েছে নবনির্মিত ৩৭ কিলোমিটার দুর্গাপুর-শ্যামগঞ্জ নতুন মহাসড়কটি।

স্থানীয় বাসিন্দা আবু সিদ্দিক জানায়, সবসময় সড়কে পানি জমে থাকে আর বৃষ্টি হলে এটি সাগরে রূপ নেয়। আমরা যে একটু হেঁটে চলাচল করবো তারও কেনো ব্যবস্থা নেই। স্কুলে শিক্ষার্থীরাও স্কুলে যেতে পারছে না পানির জন্য। ২/৩ আগে এই সড়কের কাজ শুরু হয়ে ছিল। আমরা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চাই।

দুর্গাপুর অটো চালক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতান হোসেন জানায়, রাস্তার কথা কি আর বলো ভাই? গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে না এমন কোনো দিন নেই । আমার প্রায় ১৩৭ টি বেশি অটো এই সড়ক দিয়ে যাত্রীবাহীন করে আসছে। কিন্তু এখন এর বেশিভাগই অটোই বন্ধ।

উপজেলা এলজিইডি কর্মকতা আব্দুল আলিম লিটন জানায়, কাজটি আরো ২ মাস আগেই শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ধীরগতির কাজের কারণে এখনো কাজটি শেষ হয়নি। আমরা তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছি যাতে দ্রুত সময় মাঝে কাজটি শেষ করে। তাছাড়া সামনে পবিত্র ঈদুল আজহা থাকায় সড়কে যাত্রী চাপ বেড়েছে। তার উপর আবার এখন যেহেতু বর্ষাকাল তাই সড়কে পানি জমে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যাত্রীদের যাতায়াতে কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি এই ভোগান্তি কমিয়ে আনে যাত্রীদের যাতায়াত নিবিঘ্ন রাখতে।

এ ব্যাপারে বেশ কয়েকবার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ডলি কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের সাথে যোগাযোগ করা হলেও কোনো কর্মকর্তাই কথা বলতে রাজি হননি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads