• বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪২৮
মুক্তিযুদ্ধ করেও স্বীকৃতি মেলেনি মোবারকের

মোবারক হোসেন।

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

মুক্তিযুদ্ধ করেও স্বীকৃতি মেলেনি মোবারকের

  • কুদরত উল্যাহ, মনোহরগঞ্জ-লাকসাম প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯

১৯৭১ এর রনাঙ্গন পাক-হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন এবং জীবন বাজি রেখে তুমুল যুদ্ধ করেন মোবারক হোসেন। মুক্তিযুদ্ধ কালীন সময়েপাক-হানাদার বাহিনীর গোলার আঘাতে মোবারক হোসেনের মাতা ও স্ত্রী শহীদ হন। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে বহু মানুষ নিহত ও শহীদ হন। যাদের রক্ত ঝরানো সংগ্রামের ফসল আজকের এই বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধের অবদানে কেউ কেউ স্বীকৃতি পেলেও লাকসামের মোবারক হোসেন তুমুল যুদ্ধ করেও এবং যুদ্ধে মাতা ও স্ত্রীকে হারালেও তিনি আজো কোনো স্বীকৃতি পাননি।

লাকসাম পৌরশহরের ২নং ওয়ার্ড কুন্দ্রা গ্রামেরমৃত: মক্রমআলীর ছেলে মোবারক হোসেন। তার জাতীয় পরিচয়পত্র নং ১৯২৭২০২৬৯০৮০১, ডিজিনং ডিজি- ১১৬০০২৫। মুক্তিযুদ্ধ কালীন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কাঠালিয়া ক্যাম্প প্রশিক্ষক আনসার কমান্ডার শহীদ শরাফত আলীর কাছ থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে ২নং সেক্টরে বৃহত্তর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম, কাশিনগর, ভুশ্চি, ভোলাইন, জামুড়া, বেলঘর এলাকায় এফএফবাহিনীর অধিনেতুমুলযুদ্ধ করেন। হানাদার বাহিনীর নীপিড়ন নির্যাতনের জবাব দিতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে হাতে তুলে নেন মরণাস্ত্র, জড়িয়ে পড়েন সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামে। প্রশিক্ষণ শিবিরে রাইফেল, গ্রেনেড ও ষ্টেনগানের উপর প্রশিক্ষন শেষে যুদ্ধে নেমে যান। উড়িয়ে দেন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। এগিয়ে যান সম্মুখের দিকে। এসেলার হাতে ঝাপিয়ে পড়েন শত্রু সৈন্যর উপর। জীবন বাজী রেখে তুমুলযুদ্ধ করেন। যুদ্ধকালিন বিখ্যাত ২জন সহযোদ্ধা আবুল হোসেনননী গেজেট নং ৬০৪৩, যুদ্ধাহত মরহুম আবদুল লতীফ বীরপ্রতিক গেজেট নং ৬১১৪ পরিচয় দিয়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল মহাপরিচালক বরাবরে (ডিজি- ১১৬০০২৫) মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকা ভুক্তির জন্য আবেদনও করেন। এছাড়া মোবারক হোসেনের মাতা ওমরের নেছা এবং মোবারকের স্ত্রী হাজেরা খাতুন যুদ্ধকালীন ৮ডিসেম্বর ১৯৭১ইং বেলঘর গ্রামে পাক-হানাদার বাহিনীর গোলার আঘাতে গন-শহীদ হন।ত াদের দু-জনের কবর বেলঘর গ্রামে একই স্থানে সমাধিত। গন-শহীদ ওমরের নেছা ও হাজেরা খাতুনের নাম ঠিকানা ঢাকা সেগুনবাগিচা মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।

মোবারক হোসেন জানান, পাক-বাহিনীরা বাঙ্গালী নিধন শুরু করলে মুক্তিযুদ্ধে অনেক ত্যাগি ছাত্র, যুবক, বৃদ্ধ, কিশোর অংশ নেয়। এদের অনেকেই আজ স্মৃতির আড়ালে চলে গেছে। আবার কেউ কেউ বেঁচে আছেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন বৃহত্তম কুমিল্লা অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে বহু মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মুক্তিযুদ্ধকালীন ২নং সেক্টর বৃহত্তর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম, কাশিনগর, ভুশ্চি, ভোলাইন, জামুড়া, বেলঘর এলাকায় এফএফ বাহিনীর অধিনে তুমুলযুদ্ধ করি। মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল প্রতিরোধে ৮ ডিসেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পাক-বাহিনী পেছনে হটে যায় এবং ১১ডিসেম্বর লাকসাম অঞ্চল মুক্ত হয়।

মোবারক হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন দেশকে ভালোবেসে যুদ্ধ করেছি, দেশকে রক্ষা করেছি, যুদ্ধে মাতা ও স্ত্রীকে হারিয়েছি। বিনিময়ে কিছুই পাইনি। মুক্তিযুদ্ধের অবদানে কেউ কেউ স্বীকৃতি পেলেও তিনি আজো কোন স্বীকৃতি পাননি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads