• শনিবার, ৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪২৯
সোনারগাঁয়ে কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে জনজীবন বিপন্ন

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

সোনারগাঁয়ে কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে জনজীবন বিপন্ন

  • সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ৩০ জানুয়ারি ২০২০

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পৌরসভার টিপুরদীতে একটি শিল্প কারখানার নির্গত বিষাক্ত বর্জ্যে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দূষিত বর্জ্য পাশ্ববর্তী খাল-বিল ও কৃষিজমিতে ফেলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে এলাকার কয়েক শ’ হেক্টর কৃষি ও আবাদী জমির ধান ও বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, দূষিত বর্জ্য কারখানা সংলগ্ন সাবেক ও বর্তমান পৌর কাউন্সিলরের বাড়ির সামনে ও পেছনের কয়েকটি অংশে পাইপের মাধ্যমে নিস্কাশন করছে। এলাকাবাসী জানান, এ ব্যাপারে একাধিকবার মানববন্ধন,বিক্ষোভ মিছিল ও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন মহলে বার বার আবেদন করেও কোন প্রতিকার পায়নি।

কারখানার নির্গত দূষিত বর্জ্যের প্রভাবে সোনারগাঁ পৌরসভার টিপরদী, রতনদী, বসুরবাগ, তাজপুর, গোয়ালদী, মল্লিকেরপাড়া, গৌরবর্দী, মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বাড়িমজলিস, বাড়ি চিনিস, ছোট সাদিপুর, বন্দেরা, ফুলবাড়িয়া, গোহাট্টা, সোনাখালী, ডহরপাড়া, দলদার, লেবুছড়া, ভাটিপাড়া, বড় সাদীপুর, ষোলপাড়া,দমদমা, পিরোজপুর ইউনিয়নের ভাটিবন্ধ, ভবনাথপুর,রতনপুর, শম্ভুপুরা ইউনিয়নের মনাইকান্দী, টেকপাড়া, মুগারচরসহ প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে।

কারখানার বর্জ্যরে দুষিত পানি নিস্কাশন বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করার পর গত ২০০৮ সালের মার্চ মাসে যৌথবাহিনী ও পরিবেশ অধিদপ্তর কারখানাটির উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। কিছু দিন বন্ধ থাকার পর কারখানাটি আবারও চালু করে।

ভূক্তভোগী এলাকাবাসী জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর কিংবা প্রশাসনের কেউ কারখানা পরিদর্শনে আসলে অল্প সময়ের জন্য ইটিপি চালু রাখা হয়। পরে তা বন্ধ করে বিষাক্ত ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি গোপন নালা দিয়ে বের করা হয়।

সাবেক কাউন্সিলর লায়ন মোশারফ জানান, ইটিপি প্লান থাকলেও তা ব্যবহার করছে না কারখানা কর্তপক্ষ। এতে এলাকার অধিকাংশ মানুষ পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং দূর্গন্ধের কারনে বসবাসের অনুপোযোগি হয়ে পড়েছে । দূষিত বর্জ্য নিস্কাশন বন্ধের দাবীতে কয়েক বার মানববন্ধন করলেও প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

স্থানীয় শাহ আলোম জানান, কারখানার গোপন নালা দিয়ে নির্গত বিষাক্ত বর্জ্যের দুর্গন্ধ বাতাসে মিশে আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।

সোনারগাঁ পৌরসভার মেয়র সাদেকুর রহমান জানান, চৈতি কম্পেজিটের বর্জ্য খোলা জমিতে ফেলা হচ্ছে বলে সত্যতা রয়েছে। তাদের বর্জ্য নিষ্কাশনের বিষয়ে পৌরসভার পক্ষ থেকে কয়েকবার চিঠি দিয়েছি। তারা এ ব্যাপারে কর্নপাত করেনি।

চৈতি কম্পোজিটের উপ-ব্যবস্থাপক বদরুল আলম জানান, আমরা ইটিপি প্ল্যানিংয়ের মাধ্যমে পানি পরিশোধন করে আমাদের নিজস্ব জমিতে ফেলছি। কারখানার পানি এখন আর খালে নিষ্কাষন করছি না।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুর রহমান খান জানান, আমি সোনারগাঁয়ে যোগদান করার পর এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ পাইনি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads