• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জৈষ্ঠ ১৪২৯
হাঁটার সাথীদের সুন্দরবন ভ্রমণ

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

হাঁটার সাথীদের সুন্দরবন ভ্রমণ

  • প্রকাশিত ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

মোঃ আব্দুল আজিজ, সুন্দরবন থেকে ফিরে

 

সুন্দরবন আমাদের গর্ব, সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি কত সুন্দর, সুন্দরবন দেখলেই তা অনুভব করা যায়, এমন অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পৃথিবীর আর কোথাও নাই। অসংখ্য নদ-নদী ও সবুজের সমারোহ যেকোন মানুষকে মুগ্ধ করবে। সুন্দরবন আমাদের জন্য আশির্বাদ, প্রতিটি মানুষকে জীবনে একবার হলেও সুন্দরবন ভ্রমন করা উচিত। সম্প্রতি বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন ভ্রমন কালে পাইকগাছার ঐতিহ্যবাহি হাঁটার সাথী সংগঠনের সদস্যরা সুন্দরবন প্রসঙ্গে এমন মন্তব্য করেন।

হাঁটার সাথী মূলত স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক একটি সংগঠন। প্রতিদিন সকালে হাঁটাই যাদের মূল কাজ। হাঁটার পাশা-পাশি চিত্ত বিনোদনের অংশ হিসেবে সংগঠনের পক্ষথেকে গত শুক্রবার সুন্দবন ভ্রমন করা হয়। ৩২ সদস্যের একটি টিম শুক্রবার সকাল ৭টার সময় উপজেলা সদরের পুরাতন পরিবহণ কাউন্টার থেকে মোটর বাইক যোগে সুন্দরবনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। সেখানে উপস্থিত থেকে সকলকে শুভ কামনা জানান সংগঠনের উপদেষ্টা ও উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আলী ও প্রাক্তন অধ্যক্ষ রমেন্দ্র নাথ সরকার।

সকাল ৮টায় বেতবুনিয়া থেকে ইঞ্জিন চালিত ট্রলার যোগে শিবসা নদী পথে সবাই সুন্দরবনের দিকে রওনা হয়। নলিয়ান রেঞ্চ অফিস পৌছালে সেখান থেকে হাঁটার সাথীদের সাথে যুক্ত হন সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের নলিয়ান রেঞ্চ অফিসের স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ টিটু। ১১টার দিকে কালাবগী স্টেশন পৌছায়, সেখানে সবাই যাত্রা বিরতি করে। এসময় সুন্দরবন অভ্যন্তরে গিয়ে সবাই সুন্দরবনের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করে। এর পর ট্রলার যোগে সবাই আবার বিভিন্ন নদী হয়ে গহীন সুন্দরবনের দিকে যায়। এসময় নদীর দুই ধারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। মাঝে মাঝে দেখা হয় বিভিন্ন পশু-পাখি ও গোলপাতা আহরণকারীদের সাথে। এবার ফেরার পালা, সুন্দরবনের ঐ এলাকাথেকে দুপুর ১টার দিকে ফিরে আসা হয় নলিয়ান। সেখানে মন্টু বৈদ্যের ছেলে নিতাই বৈদ্যের বাড়িতে দুপুরের খাওয়াদাওয়া করেন সবাই। ৩টার দিকে নলিয়ান থেকে সুন্দরবনের হড্ডা স্টেশনে যাই সবাই। এখানে নামার পর বনের সব বানর যেন সবাইকে রিসিপশন করতে আসে। বানরের অতিথিয়েতা সবাইকে যেন মুগ্ধ করে। সবাই বিভিন্ন খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করার মাধ্যমে বানরদের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে।

ফেরার শেষ মুহুর্তে বিভিন্ন খেলা ও বিনোদন মূলক আয়োজনে অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের মাঝে পুরুস্কার বিতরণ করা হয়। একই অনুষ্ঠানে বদলিকৃত বিদায়ী কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ টিটু কে হাঁটার সাথী সংগঠনের পক্ষথেকে শুভেচ্ছা প্রদান করা হয়। বিকাল ৫টার দিকে সবাই বেতবুনিয়া ফিরে আসে। এখান থেকে আবার ও মটর বাইক যোগে নিজ গন্তব্যে এসে সুন্দরবন ভ্রমন শেষ করেন।

ভ্রমন প্রসঙ্গে হাঁটার সাথী সংগঠনের উপদেষ্টা মিরাজুল ইসলাম মিরাজ জানান লক্ষ, লক্ষ টাকা ব্যায় করে বিদেশ ভ্রমন করার চেয়ে সুন্দরবন ভ্রমন অনেক আনন্দের। সুন্দরবনের সার্বিক নিরাপত্তা পূর্বের যেকোন সময়ের চেয়ে এখন অনেক ভালো।

সভাপতি খান মুরশাফুল আলম বাচ্চু জানান, সুন্দরবনের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাদের সবাইকে মুগ্ধ করেছে। যতটা সময় ভ্রমণ করেছি ততটা সময় আমরা সবাই আনন্দের মধ্যে ছিলাম। সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন জানান, বিদায়ী স্টেশন কর্মকর্তা আমাদের সফরে যুক্ত হয়ে সার্বিক সহযোগিতা করায় ভ্রমণ সফল ও সার্থক হয়। তবে যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নত ও সহজ হলে দেশী ও বিদেশী পর্যটক বৃদ্ধি পেতো।

সংগঠনের প্রমিলা সদস্য অনিতা রানী মন্ডল জানান, অপরূপ প্রকৃতি আর ভ্রমণ পথের খেলাধুলা এবং বিনোদন মূলক আয়োজন ছিল অসাধারণ। টোটাল ভ্রমণটাই যেন মিলন মেলায় পরিণত হয়।

মমতাজ পারভীন মিনু জানান, সুন্দরবনের বানরদের অতিথিয়েতা ও নৌপথের আড্ডা আজও যেন ভুলতে পারছি না। প্রতিটি মানুষকে জীবনে একবার হলেও সুন্দরবন ভ্রমণ করা উচিত।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads