• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯
অব্যবহৃত অবস্থায় নষ্ট হচ্ছে ৩০ কোটি টাকার মালামাল

দীর্ঘ দিন ব্যবহার না করায় ধুলাবালি জমে চেয়ার টেবিল নষ্ট হওয়ার পথে

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ

অব্যবহৃত অবস্থায় নষ্ট হচ্ছে ৩০ কোটি টাকার মালামাল

  • কক্সবাজার প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজে প্রায় ৩০ কোটি টাকার সরাঞ্জাম ও আসভাবপত্র ব্যবহার না করেই নষ্ট হচ্ছে। মেডিকেল কলেজের প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত এসব মালামাল কিনে এক দিকে সরকারের অর্থ অপচায় অন্যদিকে কিছু ব্যক্তি বিশেষের ইন্ধনে এসব মালামাল কিনে উল্টো বিপাকে পড়েছে অসংখ্য সাধারণ ডাক্তার সহ অনেকে। এনিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলাও হয়েছে। তবে বর্তমানে এসব মালামাল ব্যবহার করেই নষ্ট করার চেয়ে সরকারের কাছে ফেরত দেওয়া অথবা অন্য কোথাও ব্যবহার করার পরিবেশ তৈরি করার দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল।

সরজমিনে কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনের বেশ কয়েকটি রুমে অসংখ্য চেয়ার টেবিল, রেক, সোফা সহ অনেক আসভাবপত্র এলোমেলো ভাবে পড়ে আছে। বেশির ভাগ আসবাবপত্রে ধুলোময়লা জমে আছে এবং ইতি মধ্যে অনেক আসবাবপত্র ব্যবহার না করায় নষ্ট হওয়ার পথে। এছাড়া ভবনের অন্যরুমে গিয়ে দেখা গেছে অনেক যন্ত্রাংশও পড়ে আছে ব্যবহার না করে ফলে এগুলো আর ব্যবহার করার উপযোগি থাকবে না বলে মনে করেন অনেকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেডিকেল কলেজের এক কর্মকর্তা জানান, এখানে কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকার মালামাল আছে এর মধ্যে এখানে কিছু আছে আর কিছু কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আছে। মূলত আগে যারা এখানে দায়িত্বে ছিলেন তারা মেডিকেল কলেজের প্রয়োজনের তুলনায় বেশি মালামাল কিনেছিল যার কোন প্রয়োজনীয়তা ছিলনা। কারন এখানে শিক্ষার্থী আছে প্রতি ব্যাচে ৫০ জন করে সে হিসাবে ৪ ব্যাচে ২০০ জন শিক্ষার্থী থাকে এর জন্য ১ হাজার শিক্ষার্থীর মালামাল কেনার কোন দরকার ছিলনা। আর কিছু সরাঞ্জাম কেনা হয়েছে যে গুলো এখানে বর্তমানেও ব্যবহারের সময় আসেনি মোট কথা অপ্রয়জনীয় মালামাল কিনে সরকারের বিপুল টাকা অপচায় এবং দ‍ুর্নীতি করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন ডাক্তার বলেন, কতিপয় ব্যক্তি লোভের কারনে আজকে আমরা সবাই বদনামের ভাগিদার। আত্বীয় স্বজন সহ অনেকে মনে করে মেডিকেল কলেজে হওয়া দুর্নীতিতে আমরা অংশিদার কারন আমরা এখানে চাকরী করি। তবে সত্যি কথা হচ্ছে এখানে আগের কিছু কর্মকর্তা ঢাকা চট্টগ্রামের কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা এবং ভেতরে বাইরের কিছু অসৎ লোকের কারনে পুরো মেডিকেল কলেজ আজ সাধারণ মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে। এটা সত্যি এখানে অনেক মালামাল আছে যেগুলো কোন দিন ব্যবহার হয়নি আর সামনে হওয়ার সম্ভবনা নেই। আর আমাদের জানা মতে প্রত্যেকটি মালামাল কেনা হয়েছে বাজার মূল্যের চেয়ে বহুগুন বেশি দামে। তবে এই ঘটনার কারনে এখন দীর্ঘ মেয়াদী সমস্যার সম্মুখিন হবে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ। কারন বর্তমানে আর কেউ কোন অর্থনৈতিক দায়িত্ব নিতে রাজি হচ্ছেনা কেউ কোন কমিটিতে থাকতে চাইছেনা। ফলে বর্তমানে সরকার বাজেট দিলেও সেটা ব্যবহার করা যাচ্ছেনা। এতে চলতি অর্থ বছরেও বিপুল টাকা ফেরত গেছে। তবে আমাদের মতে এখানে যে বিপুল পরিমান সরাঞ্জাম বা আসবাবপত্র আছে সেগুলো ব্যবহার হওয়ার যেহেতু সম্ভবনা নেই তাই অযথা নষ্ট না করে সরকারের কাছে ফেরত দেওয়া অথবা যেখানে প্রয়োজন সেখানে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারলে ভাল হয়।

এ ব্যপারে কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ ডাঃ অনুপম বড়ুয়া বলেন, আমি এখনো নতুন যোগদান করেছি মাত্র তাই এসব বিষয়ে কোন কিছুই এখনো জানিনা।

উল্লেখ্য ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসের শেষের দিকে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে জেলা হিসার রক্ষণ কার্যালয়ের ৬ কর্মকর্তা সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অনিয়ম দ‍ুর্নীতির কারনে মামলা করেছিল দুদক। উক্ত মামলায় এজাহার নামীয় আসামি ছিল আবজাল হোসেন এবং তার স্ত্রী রুবীনা খানম সহ অন্য আট আসামি হলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন বিভাগের সাবেক পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর আবদুর রশীদ, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সুবাস চন্দ্র সাহা, সাবেক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ রেজাউল করিম, কলেজের হিসাবরক্ষক হুররমা আক্তার খুকী, কক্সবাজার জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সুকোমল বড়ুয়া, একই দপ্তরের সাবেক এসএএস সুপার সুরজিত রায় দাশ, পংকজ কুমার বৈদ্য এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক উচ্চমান সহকারী খায়রুল আলম।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads