টাঙ্গাইলের সখীপুরে গভীর রাতে বন থেকে উদ্ধার হওয়া সেই সাজেদা বেগমের (৫০) সঙ্গে দেখা করেছেন তার একমাত্র ছেলে সানোয়ার হোসেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে সানোয়ার তার হারিয়ে যাওয়া মা সাজেদা বেগমের সঙ্গে দেখা করেন। রাতে সে মায়ের সঙ্গেই ছিলেন বলে জানিয়েছেন। ছেলে সানোয়ারের দাবি করেন- ‘আমার মা একজন মানসিক রোগী। তিনি গত ২৩ মার্চ শেরপুরের শ্রীবর্দী উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন।
গত ১৪ এপ্রিল ‘সখীপুরে করোনা সন্দেহে মাকে বনে ফেলে রেখে সন্তানেরা উধাও’ শিরোনামে প্রায় সবগুলো মিডিয়াতে খবর প্রকাশ হয়। ওই খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়। মঙ্গলবার টেলিভিশনে ছবি দেখে সানোয়ার তাঁর মাকে শনাক্ত করেন।
সানোয়ার জানান, আমি আমার মাকে করোনার ভয়ে সখীপুরে বনে ফেলে যাইনি। তবে আমার মায়ের প্রতি আমাদের পরিবারের যথেষ্ঠ অবহেলা ছিল। আমি গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করি। এ কারণে নিখোঁজ হওয়ার পরও মাকে খুঁজতে সময় দিতে পারিনি। সানোয়ার টাঙ্গাইলের সখীপুরের ইউএনও, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ও দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান। সে কান্না করে সকলের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি খুবই লজ্জিত। আপনারা আমাকে ভুল বুঝবেন না।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল রাতে সখীপুরে বন থেকে উদ্ধার হওয়ার পর ওই মহিলা জানান, তার বাড়ি শেরপুর জেলার নালিতা বাড়িতে। তার স্বামী-সন্তান গাজীপুরের সালনায় পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তার সন্তান আর স্বজনরা করোনা ভাইরাস সন্দেহে রাতের আঁধারে তাকে জঙ্গলে ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আসমাউল হুসনা লিজা ওই নারীকে রাতেই ঢাকায় হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্টার ডা. মুক্তাদির ভূঁইয়া এ প্রতিবেদককে মুঠোফোনে জানান, ওই নারীর প্রাথমিক করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ। তবে সে কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন।
বৃহস্পতিবার রাতে ছেলে সানোয়ার হোসেন বলেন, মায়ের সঙ্গে দেখা করে জিজ্ঞেস করেছি, তোমাকে ফেলে রেখে গেছি এগুলো কেন বলেছো? মা কোনো উত্তর দেয়নি। আমাকে দেখে মা খুব খুশি হয়েছে। পরে মায়ের সঙ্গে একটা সেলফি তুলেছি।
সানোয়ার তাঁর স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, গত ২৩ মার্চ মা নিখোঁজ হন। ২৫ মার্চ বাড়ি থেকে আমাকে নিখোঁজ বিষয়ে জানায়। ২৭ মার্চ আমি আমার মায়ের নিখোঁজ বিষয়ে ছবি দিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করি। সেখানেও আমার মা একজন মানসিক রোগী বলে জানাই।