• মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪২৯
দুর্গাপুরে করোনার সাথে লড়ছে দুই স্বেচ্ছাসেবক

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

দুর্গাপুরে করোনার সাথে লড়ছে দুই স্বেচ্ছাসেবক

  • রিফাত আহমেদ রাসেল, দুর্গাপুর (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৩ জুন ২০২০

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য সহায়তায় পৌঁচ্ছে দেওয়া স্বেচ্ছাসেবকরা এখন নিজেরাই করোনায় আক্রান্ত।

দুর্গাপুরে গত সাত দিনের ব্যবধানে শনাক্ত হয়েছে দুই স্বেচ্ছাসেবক জহিরুল ইসলাম ও সৈকত সরকার। উপজেলা সদর ইউনিয়নের ফারাংপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম সুসঙ্গ আদর্শ বিদ্যানিকেতন স্কুলে সহকারী শিক্ষকের পাশাপাশি মানবসেবা ও স্বেচ্ছাসেবকের কাজে নিয়োজিত ।

অপরদিকে পৌর শহরের চকলেঙ্গুরা গ্রামের বাসিন্দা সৈকত সরকার বিভিন্ন সামাজিক কাজের পাশাপাশি এসবি রক্তদান ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠনের দায়িত্বও পালন করছেন। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর তারা নিজেরাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের আক্রান্তের খবরটি নিশ্চিত করেন এবং বাকিদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তারা ।

করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর থেকেই দুর্গাপুরে অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি নিরলসভাবে কাজ করে আসছেন তারা। মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে করোনা প্রতিরোধে করণীয়সহ মানুষদের সচেতনতায় ছুটেছেন অলি থেকে গলিতে।

নিজেদের সবসময় নিরাপত্তা রেখেও শেষ পর্যন্ত করোনা কাছে ধরা পড়লেন এই দুই স্বেচ্ছাসেবক । শারীরিকভাবে অসুস্থতা অনুভব করায় দুজনই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের নমুনা পরীক্ষার জন্য দিলে গত ১৩ ই জুন জহিরুল ইসলাম ও ২২ শে জুন সৈকত সরকারের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে ।

এদিকে মঙ্গলবার দুর্গাপুরের নতুন তিনজনসহ একজনের দ্বিতীয় দফার করোনা রিপোর্টও পজিটিভ এসেছে। এইদিকে এখন পর্যন্ত দুর্গাপুরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৭ জনে। আর সুস্থ হয়েছে ৮ জন ।

এর আগে গত ২০ এপ্রিল উপজেলার করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা খানম সেচ্ছাসেবক কমিটি গঠন ও তাদের আইডি কার্ড বিতরণ করেন ।

করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় দ্রুত সেবাদানকারী স্বেচ্ছাসেবক নামে গঠিত এই কমিটি আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া, সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজ খবর রাখা থেকে শুরু করে প্রশাসনের সাথে সমন্বয় রেখে তাদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করে আসছে তারা । আক্রান্ত ব্যক্তি ছাড়াও করোনা পরিস্থিতিতে জমির পাকা ধান নিয়ে বিপাকে পড়া বেশ কয়েকজনের কৃষকের পাকা ধান কাটেঁ বাড়িতেও পৌঁছে দিয়েছেন এই স্বেচ্ছাসেবকরা ।

তবে নিরাপত্তা সামগ্রীর অভাবে পিছিয়ে পড়েছে তাদের এউ সেবাদান কর্মসূচি। শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সামগ্রী না থাকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন দুই স্বেচ্ছাসেবক। নতুন করে আরও স্বেচ্ছাসেবকরা আক্রান্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে ।

করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় দ্রুত সেবাদানকারী স্বেচ্ছাসেবকদের আহবায়ক একেএম ইয়াহিয়া জানায়, গেলো তিন মাস আমাদের প্রতিটি স্বেচ্ছাসেবক প্রাণপণ চেষ্টা করে করানোর সাথে মোকাবেলা করেছে । করেনা আক্রান্ত ব্যক্তির সেবা থেকে শুরু করে ঢাকা নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনের রাখার ব্যবস্থা করেছি আমরা। কিন্তু বর্তমানে নিরাপত্তা সামগ্রীর অভাবে আমরা আগের মতো কাজে মনস্থির করতে পারছি না। ইতিমধ্যে আমাদের দুজন স্বেচ্ছাসেবক আক্রান্ত হয়েছে । বাকি সদস্যরাও আতঙ্কে রয়েছে করোনার ।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা খানম জানায়, করোনা মোকাবেলায় নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য খাদ্য সামগ্রী ও নিরাপত্তা সামগ্রী বিতরণের চিন্তাভাবনা রয়েছে । দ্রুতই তাদের মাঝে নিরাপত্তা সামগ্রী বিতরণ করা হবে ।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads