• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জৈষ্ঠ ১৪২৯
মেঘনায় অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

মেঘনায় অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব

  • সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৪ আগস্ট ২০২০

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনা নদী বেষ্টিত চরাঞ্চল নুনেরটেক এলাকায় পার্শবর্তী মেঘনা উপজেলার চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লতিফ সরকার ও তার লোকজন মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার মহা উৎসবে মেতেছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেছেন চেয়ারম্যান জহিরুল হক।

গতকাল রোববার সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)কার্যালয়ে গ্রামবাসীর পক্ষে চেয়ারম্যান এ স্বারকলিপি প্রদান করেন। এছাড়া তিনি ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার সহ ৮টি কার্যালয়ে অনুলিপি দিয়েছেন।

সরেজমিনে সোমবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, সোনারগাঁ উপজেলার সীমানায় মেঘনা নদীতে ২০-২৫ টি ড্রেজার লাগিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতেছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে সোনারগাঁ উপজেলার নুনেরটেক এলাকার রঘুনারচর, চরকমলাপুর, সবুজবাগ, গুচ্ছগ্রামসহ নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। এই বছরই রঘুনারচরের প্রায় ৩০ বাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এছাড়া এই এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে শুরু থেকে প্রায় ১৪০-১৫০ টি বাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। অসহায় হয়ে পড়ে হাজারও মানুষ।

নদী গর্ভে ঘর বিলিন হওয়া রঘুনারচরের অসহায় নারী জানান, আমাদের এখন কি, হবে আমরা কোথায় যাবো। এই ঘরটি আমাদের থাকার একমাত্র সম্বল ছিল।

নুনেরটেক এলাকার আব্দুর রহিম জানান, ভিটে বাড়ি যা আছে সব গাংঙ্গে বিলিন কইরা নিছে এই বালু কাটা ফলে। এই বালু কাটতাছে মেঘনা উপজেলার চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লতিফ সরকার। দিনের বেলা মাঝ নদীতে বালু উত্তোলন করে আর রাতের আধারে পাড় ঘেঁষে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে। একটি চক্র তাদের হয়ে কাজ করে প্রতিবাদ করলেই তার পালিত সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে সাধারন মানুষের নামে হামলা ও মামলা দিয়ে হয়রানি করে।

রঘুনারচরের আব্দুল লতিফ জানান, আমরা প্রতিবাদ করলে টেটা, বল্লম দিয়ে কুপিয়ে আহত করে।

আওয়ামীলীগ নেতা আবুল হাসেম জানান, আমাদের এই নুনেরটেক এলাকায় আজ থেকে ১০ বছর আগেও বিভিন্ন লোকজন বালু কাটছে। এ বছর লতিফ চেয়্যারম্যান বালু কাটার ডাক আনছে। আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার সহ আমরা এই বালু কাটাতে নিষেধ করেছি। এইভাবে বালু কাটলে আমাদের গ্রামটি বিলিন হয়ে যাবে।

বারদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহিরুল হক জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্বারকলিপি দিয়েছি। বারদী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের নুনেরটেক, রঘুনার চর, গুচ্ছগ্রাম, সবুজবাগ ও শান্তিবন গ্রামের পার্শবর্তী মেঘনা নদী। বালু উত্তোলনে নুনেরটেক এলাকায় ভাঙ্গনের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে বসত বাড়ি ও কৃষিজমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। অন্য উপজেলার চেয়ারম্যান সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে। আমরা যে কোনো মূল্যে এ অবৈধ বালু উত্তোলন করতে দিবো না।

চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লতিফ সরকারের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম বলেন, নুনেরটেক এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন যে কোন মূল্যে বন্ধ করা হবে। ইতোমধ্যে এসিল্যান্ডকে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads