• রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪২৯
 আখাউড়ায় ফার্মেসিতে প্রেসক্রিপসন ছাড়াই মিলছে ঘুমের ট্যাবলেট

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

আখাউড়ায় ফার্মেসিতে প্রেসক্রিপসন ছাড়াই মিলছে ঘুমের ট্যাবলেট

  • আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় প্রশাসনের তৎপরতায় বিভিন্ন প্রকারের মাদক এক প্রকার বন্ধ হওয়ায় নেশার রাজ্যে মাদকসেবিদের কাছে যুক্ত হয়েছে ঘুমের ট্যাবলেট। পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ইদানিং মাদকসেবীদের কাছে ঘুমের ট্যাবলেট বেশ প্রিয় হয়ে উঠেছে। চিকিৎসকের পরামর্শ (প্রেসক্রিপসন) ছাড়াই ফার্মেসিতে বিক্রি হচ্ছে ঘুমের ট্যাবলেট।

জানা গেছে, প্রাণঘাতী করোনা পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফ জওয়ানরা সতর্কাবস্থা থাকায় উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচার বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদক সেবীরা এখন ঝুঁকে পড়ছেন বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির ঘুমের ট্যাবলেটের দিকে। ওই ট্যাবলেট বিনা বাধায় স্বল্প দামে হাত বাড়ালেই মিলছে পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অলিগলির ফার্মেসিগুলোতে।

এদিকে র‌্যাব সদস্যরা গতরাতে সড়ক বাজার এলাকায় দরদী ফার্মেসি ও সরকার ফার্মেসিতে এ অভিযান পরিচালনা বিপুল পরিমান নেশাজাতীয় ট্যাবলেট উদ্ধারসহ ৩ জনকে আটক করে। ফার্মেসিগুলোতে অভাধে নেশাজাতীয় ট্যাবলেট বিক্রি হওয়ায় অভিভাবকরা তাদের উঠতি বয়সের সন্তানদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এদিকে ঘুমের ট্যাবলেট সেবন আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় দিন দিন তরুন প্রজম্ম অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পৌর শহরসহ উপলোর বিভিন্ন হাটবাজারে লাইসেন্সধারী ও লাইসেন্সবিহীন অসংখ্য ফার্মেসি রয়েছে। নিয়মানুযায়ী সরকারি নীতিমালায় যে কোন ঔষধ চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া বিক্রি করা নিষেধ করা হয়েছে। ফার্মেসির লোকজন ওই ব্যবস্থাপত্র দেখে তাদের কাছে ঔষধ বিক্রি করার কথা থাকলে ও তা মানা হচ্ছে না । কোন নিয়মনীতি ছাড়াই লাইসেন্সধারী ও লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসিগুলোতে অবাধে বিক্রি করছে ওইসব ঘুমের ট্যাবলেট। সেই সাথে বিক্রিতে পিছিয়ে নেই গ্রামাঞ্চলের মুদি দোকানগুলো ও। বিভিন্ন নামী দামি ও নাম সর্বস্ব ঔষধ কোম্পানির ঘুমের ট্যাবলেট বাজারে এখন সয়লাব হয়ে আছে। বিনা বাধায় চিকিৎসকের পরামর্শ বা ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই টাকার জন্য ফার্মেসির লোকজন অবাধে বিক্রি করছে ওইসব ঘুমের ট্যাবলেট। নেশায় উ আসক্ত ব্যাক্তিরা তা ক্রয় করে সেবন করছেন।
সেবনকারী লোকজন প্রতিদিন একই ফার্মেসি থেকে ২-৩ পাতা ঘুমের ট্যাবলেট নিয়মিত ক্রয় করছে। ফার্মেসির লোকদের সঙ্গে তাদের সখ্যতা গড়ে উঠায় ক্রয়ে কোন বিপত্তি ঘটে না। অতি সহজেই তারা ওইসব ট্যাবলেট পাচ্ছেন।

ওইসব ঘুমের ওষুধের প্রতিটি ট্যাবলেটের মূল্য ২৫-৩০ টাকা হলেও মাদকাসক্তদের কাছে ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা বিক্রি করছে। যদিও এসব ওষুধ বিক্রির সময় ফার্মেসির রশিদ রাখার নিয়ম থাকলেও মানছে না কোনো ফার্মেসি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌর শহরের সড়ক বাজার,লাল বাজার,খড়মপুর, উপজেলার বেশ কয়েকটি হাটবাজারে কোন নিয়মনীতি ছাড়াই লাইসেন্সধারী ও

লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসিগুলোতে অবাধে ওইসব ঘুমের ট্যাবলেট বিক্রি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অবশ্য অনেক ফার্মেসির লোকজন বলছে ব্যবস্থা পত্র ছাড়া কোন ধরনের ঔষধ বিক্রি হয় না বলে জানায়।

অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে নেশাগ্রস্ত তরুণ-তরুণীরা ঘুমের ট্যালেট সেবন করছে। এই নেশায় আসক্ত হচ্ছেন শিক্ষিত তরুন যুবক,ছাত্র, দিনমজুর, চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন । ফলে অভিভাবকরা তাদের উঠতি বয়সের সন্তানদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

চিকিৎসকরা জানান, এসব ওষুধ মাত্রাতিরিক্ত সেবন করলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তবুও এসব সেবন করে নেশা করছে বখাটে মাদকসেবীরা।

উপজেলা নাগরিক উন্নয়ন কমিটির সহ-সভাপতি আলহাজ মুসলেহ উদ্দিন ভূইয়া বলেন, নেশার রাজ্যে ঘুমের ট্যাবলেট উঠতি বয়সের যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যদি তৎপর থাকতো তাহলে এ ভাবে ফার্মেসিতে বিক্রি করতে পারতো না।

আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা: শ্যামল চন্দ্র ভৌমিক বলেন,রেজিস্টেশন ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যবস্থা পত্র ছাড়া ঘুমের ট্যাবলেট বিক্রি করা সম্পূর্ণ নিষেধ। তা ছাড়া ড্রাগ লাইসেন্স বিহীন কোন ফার্মেসির মালিকের কাছে বিক্রি করা ও নিষেধ।

আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি রসুল আহমেদ মিজামী বলেন মাদকের বিরোদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যে কোন মূল্যে মাদক নির্মূল করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads