• বুধবার, ১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪২৯
তাড়াশে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উন্নয়নে নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহন

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

তাড়াশে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উন্নয়নে নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহন

  • মনিরুল ইসলাম, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উন্নয়নে নারীদের অংশগ্রহন ব্যাপক ভাবে প্রতিয়মান। নানা প্রতিক‍ূলতা কাটিয়ে নতুন করে পথ চলা শুরু করেছেন এই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পবিবারের সদস্যরা। কর্মক্ষেত্রে নারীরা পুরুষের পাশাপাশি শ্রম বিক্রি করে সফলতা আনতে চেষ্টা করছেন নিজ নিজ পরিবারে।

২০১১ সালের জরিপে জানা যায়, তাড়াশ উপজেলায় ১৮হাজার ৯শ ৯২ জন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস। এর মধ্যে পুরুষ ১০হাজার ২৫৬ ও নারী ৮হাজার ৭৩৬ জন।

এখানে উরাঁও, মাহাতো, সাঁওতাল, বসাক, মুরারী , তুরী, সিং, রবীদাস, রায়, মাহালি সহ মোট ১৪ টি আদিবাসীর গোত্র রয়েছে। জেলায় আদিবাসী গ্রামের সংখ্যা ১০৩ টি। আর এতে বসবাস করে প্রায় ৭ হাজারের বেশী পরিবার।

এ অঞ্চলে কখন আদিবাসীদের বসবাস শুরু হয় তার কোন সঠিক ইতিহাস জানা নেই কারো। তবে ধারনা করা হয় ১৮৮৬ সালে তাড়াশ-রায়গঞ্জ অঞ্চলে জমিদাররা তাদের অনাবাদী বন জঙ্গল ঘেরা ভূমিতে শস্য উৎপাদনের জন্য অন্য অঞ্চল থেকে এই জনগোষ্ঠী নিয়ে আসেন এ অঞ্চলে। পরে জমি জমা তাদেরকে সন ওয়ারী লীজ প্রদান করেন। সে থেকেই এ অঞ্চলে আদিবাসী বা নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস।

পূর্বে থেকেই এই জনগোষ্ঠীর লোকজন নান অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করে আসছে। সংসারে অভাব থাকার কারনে তারা অগ্রিম শ্রম বিক্রি করতো অনেক অল্প মজুরিতে। যখন শ্রমিকের মজুরি বেশী তখন তারা অগ্রিম শ্রম বিক্রি করার জন্য এই মূল্য পেতনা। অগ্রিম মূল্যতেই তাদের কাজ করে দিতে হতো।

এভাবে চলতে চলতে বর্তমানে তারা আর অগ্রিম শ্রম বিক্রি করে না। তার পরেও অন্যান্য জনগোষ্ঠীর তুলনায় তারা কম মজুরিতে কাজ করে।

সংসারে শুধু পুরুষদের শ্রমের টাকায় সংসার খরচ বাদ দিয়ে ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার খরচ চালাতে পারে না বলে তাদের ছেলে মেয়েরা লেখা পড়া থেকে পিছিয়ে যায়। তাই ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার জন্য, সংসারের খরচ চালানোর জন্য পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও শ্রম বিক্রি করে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়াসহ নিজেদের উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছে।

এ ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষদের চেয়ে বেশী শ্রম দিচ্ছে। কেননা তারা সংসারের কাজ কর্ম করে আবার পুরুষদের সাথে সম পরিমান শ্রম দিয়ে আয় করছেন। সংসারের স্বচ্ছলতা আনার জন্য নারীদের অংশগ্রহনই এই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।

এ বিষয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তা একেএম মনিরুজ্জামান বলেন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উন্নয়নে নারীদের ভূমিকা প্রসংশনীয়। তারপরেও তাদের ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার জন্য আমরা উপবৃত্তি দিয়ে সহযোগীতা করছি। তাদের অসচ্ছল পরিবার কে দেওয়া হচ্ছে সুদমুক্ত ঋন। এ সহযোগীতা চলমান থাকবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুরনাহার লুনা বলেন, কৃষিতে পুরুষের পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীরা গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করছেন । তারা কৃষিতে ধান রোপন, নিড়ানো, কাটা সকল কাজে অংশগ্রহন করেন। ধান কাটার মৌসুমে যখন শ্রমিকের সংকট হয় তখন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীরা এই শ্রমিকের ঘাটতি পূরনে ব্যাপক সহায়তা করে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads