ভূঞাপুরে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা ও বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় গো-খাদ্যের তীব্র সংকটে পড়েছে খামারি ও প্রান্তিক গরুর মালিকরা। এতে হাতের কাছে থাকা গরুর প্রধান খাবার খড় এখন ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। দিন দিন দাম বেড়ে যাওয়ায় হতাশ খামারি ও প্রান্তিক গরুর মালিকরা। ফলে বাধ্য হয়েই কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে কষ্ট করে লালন পালন করা গরুগুলো।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের বিভিন্ন খড়ের হাটগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, প্রতি আটি খড় বিক্রি করা হচ্ছে ১৬-১৮ টাকা দরে। আর স্থানীয় মোটা এক বোঝা খড় ২ হাজার ৫০০ টাকা থেতে ৩ হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। হাটে নওগাঁ ও দিনাজপুর অঞ্চলের খড়ের চাহিদা বেশি থাকায় মোকাম থেকেই খড় বেশি দামে কিনতে হয় বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
হাটে খড় কিনতে আসা রকিকুল বলেন,গরু পালন করা আর সম্ভব হবে না। গরুর খাদ্যের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে গরু বিক্রি করে দিতে হবে। গরু পালন করেই আমার সংসার চলে। গরুর খাদ্য না দিতে পারলে পালন করবো কি করে। তাই গরুগুলোই বিক্রি করে দেব।
খড় কিনতে আসা সোহরাব বলেন,গো-খাদ্যের চেয়ে দুধের দাম কম। আগে খড় কিনতাম ২-৩ টাকা আটি, সেটা এখন কিনতে হচ্ছে ১৪-১৬ টাকা আটি। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে গরু পালন বন্ধ করে বিক্রি করে দিত হবে।
উপজেলার গোবিন্দাসী হাটের খড় বিক্রেতা সোহেল জানায়,আমাদের মোকাম থেকে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়। তাই বাধ্য হয়ে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি আটি খড় বিক্রি করছি ১৬ থেকে ১৮ টাকায়। বন্যার আগে প্রতি আটি খড় ৫-৬ টাকায় বিক্রি করতাম।
বিক্রেতা মোকাদ্দেস বলেন, এবার বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় চরাঞ্চলসহ সমস্ত ক্ষেত তলিয়ে গেছে। তাই খড়ের সংকট দেখা দিয়েছে। দাম আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভূঞাপুর প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা স্বপন কুমার দেবনাথ বলেন, এবার অতিবৃষ্টি ও বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় আবাদকৃত জমি তলিয়ে গেছে তাই গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। আমাদের প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে খামারি ও প্রান্তিক গরুর মালিকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এসময়ে রাস্তার ধারে, বাড়ির আঙ্গিনায় ঘাসের কাটিং লাগিয়ে ও গমের ভুষি, চাউলের কুড়া ইত্যাদি খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। তাছাড়া আগামী এক মাসের মধ্যে আমনের ফলন উঠলেই এই সংকট কেটে যাবে।