• সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪২৯
গোপালগঞ্জের বাম রাজনীতির পুরোধা মুক্তিযোদ্ধা ডা. রমানাথ বিশ্বাস আর নেই

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

গোপালগঞ্জের বাম রাজনীতির পুরোধা মুক্তিযোদ্ধা ডা. রমানাথ বিশ্বাস আর নেই

  • গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৩ অক্টোবর ২০২০

গোপালগঞ্জের বাম রাজনীতির পুরোধা মুক্তিযোদ্ধা ডা. রমানাথ বিশ্বাস পরলোকগমন করেছেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি পরলোকগমন করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। গত ২ অক্টোবর বিকেলে গোপালগঞ্জ শহরের নিজ বাড়িতে তিনি পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হন এবং মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ জনিত কারণে সংকটাপন্ন অবস্থায় তাঁকে গোপালগঞ্জ আড়াইশ’ বেড জেনারেল হাসপাতাল থেকে গাজীপুরের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার সকালে তিনি ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি শারিরীক নানা জটিলতায় ভূগছিলেন।

জেলা বিএমএ, কমিউনিস্ট পার্টি, উদীচী, কেন্দ্রীয় সার্বজনীন কালীবাড়ি ও খাটরা সার্বজনীন কালীবাড়িসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

৫২’র ভাষা আন্দোলন এবং তৎকালীন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রমানাথ বিশ্বাস ছাত্র জীবনেই জড়িয়ে পড়েন ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে। ১৯৬০ সালে ঢামেক থেকে এমবিবিএস পাশ করে কিছুদিন সেখানেই গাইনী বিভাগের এসিস্ট্যান্ট সার্জন হিসেবে ছিলেন। পরে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালেও এসিস্ট্যান্ট সার্জন হিসেবে চাকরি করেন। ১৯৬২ সালে তিনি সাব-ডিভিশনাল মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে দিনাজপুরে যোগ দেন। পরের বছরই বদলী হয়ে আসেন গোপালগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে। এসেই তিনি পাকিস্তান মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন, গোপালগঞ্জ মহকুমা শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। এরই মধ্যে মাওলানা ভাসানীর মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে যোগ দেন ভাসানী ন্যাপে। ১৯৬৮ সালে তিনি পটুয়াখালীতে বদলী হলে এলাকার মানুষের চিকিৎসার কথা ভেবে চাকরি ছেড়ে গোপালগঞ্জেই প্রাইভেট প্রাকটিস শুরু করেন। ওই বছরই তিনি ন্যাপ ’এর গোপালগঞ্জ মহকুমা সভাপতির দায়িত্বভার পান। সে দায়িত্ব পালন করেন দু’ যুগেরও বেশি। তাঁর সৌজন্য বোধ ও সহানুভূতি শীলতায় স্বাধীনতাপূর্ব গোপালগঞ্জের রাজনীতিতে বাম রাজনীতি এক অনন্য মাত্রা পায়। প্রগতিশীল চিন্তা-ভাবনায় মানুষকে উজ্জীবিত করার কারণে তিনি সত্তরের দশকে মৌলবাদের রোষানলেও পড়েন। তারপরও বিশ্বজনীন মানবতাকে প্রাধান্য দিয়ে মানব-ধর্ম প্রতিষ্ঠায় তিনি নিরন্তর চেষ্টা চালিয়েছেন।

কমরেড মনি সিং, অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরী, প্রফেসর মোজাফ্ফর আহম্মেদ, সুরঞ্জিৎ সেনগুপ্ত ও পঙ্কজ ভট্টাচার্য্যসহ বহু কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সান্নিধ্য ও আনুকুল্য পেয়েছেন তিনি। গোপালগঞ্জের অ্যাডভোকেট সরদার নওশের আলী, অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান খোকন, কমরেড আবু হোসেন, ওয়ালিউর রহমান লেবু মিয়া, কমলেশ বেদজ্ঞ, শওকত চৌধুরী, রেফাউল হক মঞ্জু, লুৎফর রহমান গঞ্জর, রবু খান প্রমুখ ছিলেন তার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads