• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪২৯
অপারেশন করতে গিয়ে রোগীর পায়ুপথ কেটে ফেলার অভিযোগ

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

অপারেশন করতে গিয়ে রোগীর পায়ুপথ কেটে ফেলার অভিযোগ

  • দাগনভূঞা (ফেনী) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১১ নভেম্বর ২০২০

ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের আল-বারাকা হাসপাতালে রোগীর অভিভাবকদের না জানিয়ে নার্স দিয়ে ভুল অপারেশন করে রোগীকে হয়রানি ও হুমকি দেয়ার ঘটনায় ফেনীর সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী রোগীর অভিভাবক। বর্তমানে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। হাসপাতালের এমডির কাছে অভিযোগ দিলে তিনি উল্টো হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ রোগীর স্বজনদের।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৭ অক্টোবর বিকাল ৪টায় ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের তোফায়েল আহাম্মদ তপুর স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনের প্রসব বেদনা উঠলে তাকে ফেনী আল-বারাকা হাসপাতালের গাইনি ডা. ফাহমিদা সুলতানার কাছে নিয়ে আসা হয়। তার পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক পর্যায়ে রোগীর অভিভাবককে কোনো কিছু না জানিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কর্তব্যরত নার্স লিপিকে দিয়ে রোগীর সিজারিয়ান অপারেশন করেন। এ সময় রোগীকে সেলাই করতে গিয়ে নার্স লিপি পায়ুপথসহ সেলাই করে দেন।

পরদিন রোগীকে বাড়িতে নেয়ার পর রোগীর ব্যথা বেড়ে গেলে তাৎক্ষণিক ফেনী আল-বারাকা হাসপাতালের ডা. ফাহমিদা সুলতানার কাছে নিয়ে আসলে তিনি রোগীকে দেখে অভিভাবকদের জানান, হাসপাতালের নার্স লিপি ওই রোগীকে ছোট সিজার করার সময় বিশেষ অঙ্গ কেটে ফেলে এতে রোগী গুরুতর আহত হয়েছে। সেলাইটিও যথাযথ প্রক্রিয়ায় না হওয়ায় এই রোগীটি পুরোপুরি ভালো হওয়া সম্ভব নয়। রোগী সুস্থ হলেও অনেক সময় লাগবে এবং রোগীকে ভোগান্তি পোহাতে হবে। চেম্বার থেকে বের হয়ে রোগীর পিতা শাহ আলম রোগীসহ হাসপাতালের এমডি হেলাল উদ্দিনের কক্ষে গিয়ে বিষয়টি জানালে সে কোন সদুত্তর না দিয়ে উল্টো রোগীর স্বজনদের বিভিন্ন অশালীন ভাষায় গালাগাল করে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যেতে হুমকি দিয়ে বলে, এর চেয়ে বড় ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে দিয়েছি, আপনাদের এটা কোন ঘটনাই না। বাড়াবাড়ি করলে ভালো হবে না। এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেয়ার কথা বললে সে বলে, তার আগে আপনারা ফেঁসে যাবেন।

এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে রোগীর পিতা শাহ আলম বাদী হয়ে ৯ নভেম্বর সোমবার বিকালে ফেনীর সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হেলাল উদ্দিন বলেন, গত ৫/৬দিন আগে ওই রোগীকে নিয়ে পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে এসে তাদের সমস্যার কথা জানান। ডা. ফাহমিদা রোগীকে দেখে সেলাই খুলে যাবার জন্য ইনফেকশন হওয়ায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানান। এটি কোনো গুরুতর সমস্যা নয়, নিয়মিত পরিচর্যা ও ওষুধ খেলে সেরে যাবে বলে তাদের আশ্বস্ত করেন। 

হেলাল উদ্দিন জানান, রোগীর অসাবধানতার কারণেই এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। এখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি নেই বলে তিনি দাবী করেন। 

অভিযোগের ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডাঃ মীর মোবারক হোসাইন জানান, ব্যাপারটি তদন্তের জন্য সিভিল সার্জনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শরফুদ্দিন মাহমুদ ও ফেনী জেনারেল হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. রোকসানা বেগম স্বপ্না সমন্বয়ে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানান তিনি। 

এর আগেও গত মে মাসে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায়ও তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে সিভিল সার্জন অফিস। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী বৃহস্পতিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ডাকা হয়েছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads