কুমিল্লার হোমনায় মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে স্ত্রীকে খুন করে দু’সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে।
আজ শনিবার নাসিমা আক্তার (৩০) নামে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে হোমনা থানা পুলিশ। উপজেলার নিলখী ইউনিয়নের চম্পকনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ছেলে বাওয়ান (১৪) ও মেয়ে জাকিয়াকে (১০) নিয়ে পলাতক রয়েছে স্বামী জাকির হোসেন।
পুলিশের ধারণা, স্ত্রীকে স্বাসরোধে হত্যা করে স্বামী জাকির হোসেন তাদের দু’সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ইউনিয়নের চম্পকনগর গ্রামের ওয়াহাব আলীর মেয়ে নাসিমা আক্তারের সাথে মাথাভাঙ্গা ইউনিয়নের ছয়ফুল্লাকান্দি গ্রামের মৃত দাদন কাজি ছেলে জাকির হোসেনের সাথে ১৫ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে বাউয়ান নামের এক ছেলে ও মেয়ে জাকিয়া নামের দুই সন্তান রয়েছে। গতকাল শুক্রবার স্বামী জাকির হোসেন টাকার জন্য স্ত্রী নাসিমা আক্তারকে ব্যাপক মারধর করে। সে স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে দুপুরে বাবার বাড়ি উপজেলার চম্পকগরে চলে যায়। বাবার বাড়ির লোকজন তাকে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করান। রাত দশটার দিকে স্বামী জাকির হোসেন মোবাইল ফোনে নাসিমা আক্তারকে বাড়ি থেকে বের হতে বলেন। বাড়ি থেকে বের হয়ে যাবার পর নাসিমা আক্তারের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের লোকজন তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি শুরু করে। শ্বশুর বাড়িতেও খোঁজ করে তাকে পাওয়া যায়নি। সকাল আটটার দিকে বাড়ির পাশের জমিতে লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী খবর দিলে তারা সেখানে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ঘটনার পর থেকে দু’সন্তানকে পাওয়া না যাওয়ায় স্বামী জাকির হোসেন তাদের নিয়ে পালিয়ে গেছে বলে ধারনা করছেন তারা।
নিহতের ভাই আনোয়ার হোসেন জানান, ‘স্বামী জাকির হোসেন টাকা-পয়সার জন্য প্রায়ই আমার বোন নাসিমা আক্তারকে মারধর করত। শুক্রবার আমার বোনকে জাকির হোসেন ব্যাপক মারধর করলে সে আমাদের বাড়িতে চলে আসে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা তাকে হোমনা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করাই। রাত দশটার সময় জাকির আমার বোনকে মোবাইলে কল দেয়। ফোনে বাড়ীর বাইরে যেতে বললে সে বেরিয়ে যায়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ। সকালে তার লাশ বাড়ির পাশে জমিতে লোকজন দেখে আমাদের খবর দিলে আমরা সেখানে যাই।
এ ব্যাপারে হোমনা-মেঘনা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. ফজলুল করিম জানান, স্বামী জাকির হোসেন গতকাল টাকা-পয়সার জন্য স্ত্রীকে মারধর করে। পরে সে বাবার বাড়িতে চলে আসে। তার ভাইয়েরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান। রাত দশটার সময় স্বামী তাকে ফোনে বাড়ির বাইরে যেতে বললে সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এর পর থেকে সে নিখোঁজ ছিল। সকাল আটটার সময় লোকজন বাড়ির পাশের জমিতে লাশ পড়ে থাকতে দেখে আমাদের খবর দিলে লাশ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছি। ঘটনার পর থেকে স্বামী জাকির হোসেন দু’সন্তান নিয়ে পালিয়ে গেছে।
