• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জৈষ্ঠ ১৪২৯
নেতৃত্বগুণে বঙ্গবন্ধু

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

নেতৃত্বগুণে বঙ্গবন্ধু

  • প্রকাশিত ১৬ ডিসেম্বর ২০২০

নেতা, নেতৃত্ব এগুলো সাধারণত একটা শ্রেণি, পেশার মানুষের থেকে অনেক দূরের বিষয়। অধিকাংশ মানুষই রাজনৈতিক নেতৃত্বকে মনে করে জীবনে বাড়তি ঝক্কি-ঝামেলা। এরা নিজেদের আরাম-আয়েশি জীবন গড়া আর উপভোগ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। গণমানুষের কান্নার আর্তনাদ সেইসব সভ্য মানুষের ঘর পর্যন্ত পৌঁছায় না। কিন্তু পৃথিবীর ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাব, যুগে যুগে সমাজের নিচুতলার অবহেলিত ভাগ্য-বিড়ম্বিত মানুষের মুক্তি আর তাদের মুখে হাসি ফোটানোর প্রত্যয় নিয়ে তাদের অধিকার নিয়ে কথা বলার জন্য বলিষ্ঠ নেতৃত্ব বিকশিত হয়েছে, জন্ম হয়েছে অনেক কালজয়ী নেতার। কিন্তু একজন নেতা কখন স্থান-কাল অতিক্রম করে গণমানুষের কণ্ঠে পরিণত হয়? কীভাবে তার নেতৃত্বে সমাজ বা একটা দেশের সকল স্তরের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়, সেটা বুঝতে হলে আমাদের সর্বাগ্রে নেতৃত্বের বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা থাকা দরকার। যদিও নেতৃত্বের যথার্থ সংজ্ঞা পাওয়া খুব একটা সহজতর কাজ নয়। কারণ নেতৃত্বের বিশালতা আর যথার্থতা নির্ভর করে এর প্রেক্ষাপট আর গণমানুষের সঙ্গে তার জীবন ঘনিষ্ঠ-সংশ্লিষ্টতায়।

রবীন্দ্রনাথ ১৯২১ সালে স্কটল্যান্ডের স্থপতি স্যার প্যাট্রিক গেডেসকে ইংরেজিতে একটি চিঠি লিখেছিলেন। উল্লেখ্য, এই স্যার প্যাট্রিক গেডেস পরবর্তীতে বিশ্বভারতীর নকশা তৈরি করে দিয়েছিলেন। ১৯১৭ সালে ঢাকার জন্য আধুনিক নগর পরিকল্পনা বিষয়ক প্রথম রিপোর্টও প্রণীত করেন বিখ্যাত এই স্কটিশ পরিকল্পনাবিদ, কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯২১ সালের সেই চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ অনেক কিছুই লিখেছিলেন কিন্তু একটি জায়গায় এমন একটি কথা লিখেছিলেন যা তার অজান্তেই নেতৃত্বের সবচেয়ে যথার্থ সংজ্ঞাটি দিয়েছিলেন। বর্তমানে এটি নেতৃত্বের সংজ্ঞা হিসেবে ব্যাপকভাবে উদ্ধৃত হয়ে থাকে। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘ও ফড় হড়ঃ যধাব ভধরঃয রহ ধহু রহংঃরঃঁঃরড়হং. ইঁঃ রহ ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব যিড় ঃযরহশ ঢ়ৎড়ঢ়বৎষু, ভববষ ষড়াবষু ধহফ ধপঃ ৎরমযঃষু.’ অর্থাৎ ‘কোনো প্রতিষ্ঠানের ওপর আমার আস্থা নেই। তবে আস্থা আছে সেই মানুষগুলোর ওপরে যাদের যথার্থ চিন্তা, মহান অনুভব ও সঠিক কর্ম আছে।’ বঙ্গবন্ধুর যাপিত জীবন, চিন্তা, কীর্তি ও কর্মকে যদি বিশ্লেষণ করা হয়, তাহলে দেখা যাবে তার জীবনকে উক্ত তিনটি বৈশিষ্ট্য গুণান্বিত করেছিল। তার এই মহাকব্যিক বিশালাকায় প্লটে প্রথম যে বৈশিষ্ট্যটি ছিল তা হলো যথার্থ চিন্তা। প্রথম চিন্তাই ছিল বাংলাদেশকে নিয়ে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পর পাকিস্তানি মোহে আচ্ছন্ন যখন বাঙালি মুসলমান, এমনকি তাদের নেতৃবৃন্দ; সেই সময়ে এক তরুণ বেকার হোস্টেলে বসে তার কিছু সাথিকে নিয়ে ছোট্ট যে একটি সভা করলেন এবং বলে দিলেন— এই পাকিস্তান বাঙালির অধিকার রক্ষা করবে না এবং মেঠো বাংলায় বললেন, মাওলাদের সঙ্গে থাকা যাবে না। স্বাধীনতার পর বিখ্যাত সাহিত্যিক অন্নদাশঙ্কর রায় যখন বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্ন করেছিলেন, কখন থেকে আপনি বাংলাদেশ নিয়ে ভাবতে শুরু করেছিলেন? তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ৪৭-এ। বেকার হোস্টেলের সেই সভার ক’দিন পরে কলকাতার সাপ্তাহিক মিল্লাত পত্রিকার অফিসে বসেছিলেন কয়েকজনের সঙ্গে। সেখানে তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন রাষ্ট্রভাষা প্রসঙ্গে। সেদিনের ওই সভায় তিনি বলে দিলেন— পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হতে হবে বাংলা, কারণ বাঙালিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। দেশ, মানুষের অধিকার, ভাষা-চিন্তা— সব নিয়ে ’৪৭-এ তার যাত্রা শুরু হলো। বাংলা, বাঙালিদের নিয়ে তার যে যথার্থ চিন্তা ছিল তা অত্যন্ত চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে ’৪৭ পরবর্তী ভাষা আন্দোলনকে ঘিরে তার রাজনৈতিক কর্মপদ্ধতির মধ্য দিয়ে। ভাষার প্রশ্নে আপসহীন বাঙালি তরুণদের মাঝে যখন জাতীয়তাবাদী বীজ বপিত হচ্ছিল ঠিক তখন তিনি বাংলাকে রক্ষা করার জন্য দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করলেন। এজন্য তিনি প্রথমেই মাত্র ২৮ বছর বয়সে ১৯৪৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ নামে একটি প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠা করলেন। এরপর ছাত্রলীগকে ভার দিলেন পাকিস্তানি শাসকের বিরুদ্ধে মাতৃভাষা রক্ষার জন্য নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২- এই তিন বছরে বঙ্গবন্ধুর প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় ছাত্রলীগের নেতৃত্বে বাংলার দামাল ছেলেরা মাতৃভাষার প্রতিষ্ঠা রক্ষার আন্দোলন করে শেষ পর্যন্ত বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করতে পেরেছিল। এরপর ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঐতিহাসিক রোজগার্ডেনে যাত্রা শুরু হলো বাংলা, বাঙালির অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের। সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত, সঠিক চিন্তাভাবনা আর কার্যকর কর্মপরিকল্পনার বদৌলতে তরুণ শেখ মুজিবের হাত ধরে আওয়ামী লীগ হয়ে ওঠে গণমানুষের প্রতিচ্ছবি।

তার বহুমাত্রিক আর মহাকাব্যিক চিন্তার যথার্থতা সবচেয়ে দীপ্যমান হয়ে ধরা দেয় ১৯৭১ সালের মার্চের ধারাবাহিক অথচ উত্তাল গণআন্দোলেনের সমসাময়িক দূরদর্শী রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে। তিনি জনগণের বিপুল ম্যান্ডেট নিয়েও অত্যন্ত সুশৃঙ্খল আর নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। ডাক দিয়েছিলেন অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের। ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানের জনসভায় স্বাধীনতা ঘোষণার জন্য অনেক নেতা পরামর্শ দিচ্ছিলেন, অনেকেই আরো অনেক কথাই বলতে বলেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি কারো কথাই বলেননি, তিনি বলেছিলেন গণমানুষের কথা, অনেকটা মহাকাব্যিক দ্যোতনায় ২৩ বছরের শোষণ-বঞ্ছনা, অন্যায়-অবিচার সবকিছুই বর্ণনা করেছিলেন। কিছুটা কৌশলী হয়ে স্বাধীনতার ঘোষণাও দিয়ে রাখলেন পরোক্ষ্যভাবে। এভাবেই তার জীবনের যথার্থ চিন্তার মধ্য দিয়ে ধারাবাহিকভাবে একটি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে পেরেছিলেন বঙ্গবন্ধু।

বঙ্গবন্ধুর মহান নেতায় পরিণত হওয়ার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো তার মহান অনুভব। তিনি এই দেশ, এই পলিবিধৌত মাটিকে অনেক বেশি করে অনুভব করতে পারতেন। দুঃখী, দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের ক্লিষ্ট বদন কিশোর মুজিবের মনে গভীরভাবে ছাপ ফেলত। তিনি ছোটবেলা থেকেই প্রান্তিক মানুষের অধিকার আদায়ের ব্যাপারে যথেষ্ট সোচ্চার ছিলেন। মেহনতি মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব আর তাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য পরবর্তীতে নিজের জীবন যৌবনের সমস্ত কিছু বিসর্জন দিয়ে দেন। ফরাসি চিন্তাবিদ আলফোঁস দ্য লামার্তিন বলেছিলেন— ‘নেতার থাকবে জনগণের জন্য দরদ আর জনগণের দরদ থাকবে নেতার জন্য। দুই পক্ষের দরদ নিয়ে গড়ে উঠবে নেতার নেতৃত্ব আর জনগণের অনুসরণ করবার পরিবেশ।’ বঙ্গবন্ধুর ভেতরেও সেই দরদটা আমরা সব সময় দেখতে পাই তার বিভিন্ন কর্মে। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে স্বাধীনতা ঘোষণার পর তাকে পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি কারাগারে বন্দি রাখা হলো। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে প্রহসনের বিচার করে তার ফাঁসির আদেশ হলো। কারাগারের পাশে কবর খুঁড়ে সেই কবরের পাশে দাঁড় করিয়ে বঙ্গবন্ধুকে আপস করতে বললে, বঙ্গবন্ধু প্রত্যুত্তরে বলেছিলেন, ‘তোমরা যদি আমাকে হত্যা কর, তাহলে আমার লাশটা বাংলাদেশের মানুষের কাছে পৌছে দিও।’ এই যে বাংলা ও বাঙালিদের প্রতি তার এমন অন্তিম মুহূর্তেও যে গভীর অনুভব সেটা আমাদের হূদয়ের গভীরে দাগ কেটে যায়। তিনি যে শুধু বাঙালিদের গভীরভাবে ভালোবাসতেন তাই নয়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করতে গিয়ে এক সময় তিনি হয়ে ওঠেন সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের আদর্শ। আফ্রো-এশিয়ান তৃতীয় বিশ্বের শোষিত-বঞ্চিত গণমানুষের মুক্তির নীরব অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠেন। তার প্রমাণ মেলে ১৯৭৩ সালের ৫ থেকে ৯ সেপ্টেম্বর আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সে অনুষ্ঠিত চতুর্থ জোটনিরপেক্ষ শীর্ষ সম্মেলনে। চারদিকে তখন চলছে থমতমে শীতল যুদ্ধ বা কোল্ড ওয়ার। ন্যাটো ও ওয়ারশ সামরিক জোট এবং শীতল যুদ্ধ— এর প্রেক্ষাপটে ৭০-এর দশকে বিশ্বে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বের সুপরিচিত বাঘা বাঘা নেতা ও বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতা তথা মুক্তি সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতারা। তাদের সকলকে ছাপিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক, বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোটা সম্মেলনের মধ্যমণি হয়ে উঠেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর দৃঢ়তা, সততা, সুমহান আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব, বাগ্মিতা বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের প্রতি ভালোবাসা আর দরদ এবং তার সৌম্য-কান্তি মুখাবয়ব সম্মেলনের সকল নেতাকে মুগ্ধ করে। সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু ভাষণ দিতে গিয়ে বজ্রকণ্ঠে বলেন, ‘পৃথিবী আজ দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে শোষক শ্রেণি, আরেক ভাগে শোষিত। আমি শোষিতের দলে।’ দেশ স্বাধীনের পর ১৮ জানুয়ারি সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্ট বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্ন করেছিলেন, আপনার সবচেয়ে ভালো গুণ কী? বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমি বাঙালিকে ভালোবাসি। ডেভিড ফ্রস্ট তাকে পুনরায় প্রশ্ন করেন, আপনার খারাপ গুণ কী? উত্তরে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বাঙালিকে আমি বেশি ভালোবাসি। একজন নেতার তার জনগণের প্রতি এমন মহান অনুভব পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।

ছোট্ট খোকা থেকে কিশোর মুজিব, কিশোর মুজিব থেকে মুজিব ভাই, মুজিব ভাই থেকে বঙ্গবন্ধু— সর্বোপরি একটি জাতিরাষ্ট্রের জনক, এই যে তার এত অর্জন, এর সবকিছুই সম্ভব হয়েছে তার তৃতীয় যে গুণ সঠিক কর্মের কারণে। তিনি সবসময় পরিস্থিতি যাই হোক না কেন তার সঠিক কর্মটি করে গেছেন। সেই স্কুলে পড়াকালীন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মতো নেতাদের পথ আটকিয়ে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি তুলে ধরার মাধ্যমে তার জীবনের মহৎ কর্মের শুরু। এরপর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের সমস্ত সোপানে ছিল তার সঠিক কর্মের সর্বোত্তম বহিঃপ্রকাশ। অসম সাহসী নেতৃত্ব আর গণমানুষের চাওয়া-পাওয়ার সঙ্গে নিজেকে একদম মিশিয়ে নিতে পেরেছিলেন বলেই নানা বর্ণ-গোত্রের, নানা মতের মানুষকে তিনি একটি মাত্র বটবৃক্ষের ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন; আর সেই বটবৃক্ষ ছিলেন তিনি নিজে। জাতীয় স্বার্থের জন্য নানাজনের নানা মত থাকলেও দেশের স্বার্থের জন্য তিনি তার গৃহীত কর্ম থেকে কখনো পিছপা হতেন না, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কখনো আপস করতেন না। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে সবচেয়ে শক্তিশালী কথাগুলো বলেছিলেন শক্তিমান লেখক আহমদ ছফা। তিনি বলেছিলেন, ‘আজ থেকে অনেক দিন পরে হয়তো কোনো পিতা তার শিশু পুত্রকে বলবেন জানো, খোকা! আমাদের দেশে একজন মানুষ জন্ম নিয়েছিল যার দৃঢ়তা ছিল, তেজ ছিল আর ছিল অসংখ্য দুর্বলতা। কিন্তু মানুষটির হূদয় ছিল, ভালোবাসতে জানতেন। দিবসের উজ্জ্বল সূর্যালোকে যে বস্তু চিকচিক করে জ্বলে তা হলো মানুষটির সাহস। আর জ্যোৎস্নারাতে রুপোলি কিরণধারায় মায়ের স্নেহের মতো যে বস্তু আমাদের অন্তরে শান্তি এবং নিশ্চয়তা বোধ জাগিয়ে তোলে তা হলো তার ভালোবাসা। জানো খোকা তার নাম? শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ কাব্য চর্যাপদ নয়, বৈষ্ণব গীতিকা নয়, সোনার তরী কিংবা গীতাঞ্জলি কোনোটা নয়, বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ কাব্যগীতি হলো ‘আর দাবায়া রাখতে পারবা না’।’

এভাবেই বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতায় পরিণত হতে পেরেছিলেন। সাহসী বাঙালিরা তার আহ্বানেই অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে দেশমাতৃকাকে স্বাধীন করে। বঙ্গবন্ধু হন লাল সবুজের পতাকা খচিত ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান। তার ক্যারিশমেটিক নেতৃত্ব গুণে তিনি যখন বিশ্বনেতায় পরিণত হচ্ছিলেন তখন বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ৭ মার্চের ভাষণের প্রতি মুগ্ধ হয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ বলেছিলেন, ‘পৃথিবীতে মানুষ যতদিন পরাধীনতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবে ততদিন এই ভাষণ অনন্ত প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে।’ মানুষের সংগ্রাম শেষ হয়নি, শোষণের বিরুদ্ধে মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় এই সংগ্রাম যতদিন চলমান ততদিন বঙ্গবন্ধু দীপ্যমান থাকবেন উজ্জ্বল আলোকবর্তিকার মতো।

দেলোয়ার এইচ রাইন

লেখক : সাবেক সদস্য, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads