• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯
করোনাকে ছাপিয়ে কক্সবাজারে বেশি আলোচিত ছিল মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ড

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

করোনাকে ছাপিয়ে কক্সবাজারে বেশি আলোচিত ছিল মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ড

  • কক্সবাজার প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ৩১ ডিসেম্বর ২০২০

নানা ঘটনা, দুর্ঘটনা, সুসংবাদ ও দুঃসংবাদে কেটেছে ২০২০ সাল। সারা বিশ্বের মতো কক্সবাজারকেও কাবু করে দিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস। চিরতরে হারিয়ে গেছেন ৮৩ জন। যেখানে সাংবাদিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, শিক্ষক ও চিকিৎসক রয়েছেন।

বছরের শুরুতে তেমন দুর্ঘটনা শুনতে হয়নি। কিন্তু মাঝামাঝি সময়ে পৌঁছে এমন একটি হত্যাকাণ্ড ঘটে গেছে, যা দেশের বিবেকবান প্রত্যেকটি মানুষের হৃদয়কে নাড়া দিয়েছে। পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা হত্যা নাড়া দিয়েছে খোদ রাষ্ট্রকেই। এ ঘটনায় সারা দেশের মানুষের কাছে ওসি প্রদীপ এবং নিহত মেজর সিনজা মো. রাশেদ খান এই দুটি নাম জানা হয়ে গেছে। একজন মরেও মানুষের মনে শ্রব্ধার পাত্র অন্যজন জীবিত থেকেও সাধারণ মানুষের মুখে ঘৃনার পাত্র হিসাবে চিহ্নিত আছে।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে মানুষ হত্যা যেনো দুধভাতে পরিণত হয়েছে। মাদক নির্মূল ইস্যুতে ‘বন্দুকদ্ধের’ আড়ালে ’নিরীহ মানুষ হত্যার' খবর ছিল পুরো বছরের অধিক সময়ের আলোচনা। ভক্ষকের ভূমিকা পালন করতে দেখা যাচ্ছে খোদ রক্ষকদেরকেই! এমন ঘটনা দেখতে-শোনতে প্রস্তুত ছিল না কেউই। আর একটিও হত্যা নয়, রাষ্ট্রের কাছে প্রত্যেক নাগরিক পেতে চায় এমনই অভয়। 

মেজর সিনহা হত্যা:

৩১ জুলাই, দিবাগত রাত প্রায় ১০টা। টেকনাফ-কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া শামলাপুর চেকপোস্টে মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তাও পুলিশের গুলিতে। ঘটনাটি মুহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে নেট দুনিয়ায়।

খুনের ঘটনায় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালতের আদেশে ঘটনার তদন্তে নামে র‌্যাব। এ ঘটনায় টেকনাফ বাহারছরা মারিশবুনিয়ার তিনজন ছাড়াও এপিবিএন এবং প্রদীপের দেহরক্ষীসহ মোট ১৪ জন গ্রেফতার হয়। তারা এখন কারাগারে। তদন্তের স্বার্থে টেকনাফের বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকত আলিসহ ১৬ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার, পরে ‘সাময়িক বরখাস্ত’ করা হয়।

আলোচিত ঘটনার পর জেলা পুলিশকে ঢেলে সাজাতে একযোগে সবাইকে বদলি করা হয়। সিনহা হত্যার ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে শুরু থেকে তৎপর ছিল পুলিশ। সিনহার সহযোগি শিপ্রা দেবনাথ ও সাহেদুল ইসলাম সিফাতের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে পৃথক মামলা করে। এ মামলায় তারা কারবন্দি ছিলেন। পরে জামিনে মুক্ত হন। তদন্তে ‘নিদোর্ষ’ প্রমাণিত হওয়ায় সিফাত ও শিপ্রাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত। সর্বশেষ সিনহা হত্যা মামলার চার্জশিট গ্রহণ করেছে কক্সবাজার আদালত।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, সিনহা হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত। সাবেক টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে এসআই লিয়াকত। ঘটনার নেপথ্যে ছিল ইয়াবা।

হত্যার ঘটনা তদন্ত নেমে র‍্যাব এখন পর্যন্ত ১৫ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে। যার মধ্যে ১৪ জন র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন।

তারা হলেন- বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ (চট্টগ্রাম কারাগার), দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব, মো. আবদুল্লাহ, পুলিশের মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads