নেত্রকোণার কলমাকান্দায় বেড়াতে এসে এক কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় ধর্ষণে সহায়তাকারী মায়া শেখ ওরফে পারভীন (২৭) নামে এক নারীসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একটি মোটরসাইকেল জব্দ করে থানা করে নিয়ে আসা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে ছয়জনকে আসামি করে ওই কিশোরী নিজেই বাদী হয়ে কলমাকান্দা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কলমাকান্দা উপজেলার সদর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের মাখন দাস এর পুত্র লক্ষণ দাস (২৩) ও গণধর্ষণ ঘটনার সহায়তাকারী হিসেবে একই উপজেলার লেঙ্গুরা ইউনিয়নের ইয়ারপুর গ্রামের সামছুদ্দীন এর মেয়ে মোছা. পারভীন আক্তার মায়া শেখ (২৭) ।
পুলিশ ও মামলার এজহার সুত্রে জানা যায়, ঢাকার মহাখালী ভাড়া বাসায় থেকে গার্মেন্টসে কাজ করেন নির্যাতিতা কিশোরী ও মায়া শেখ । উভয়ের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠায় গত ২৯ ডিসেম্বর মায়া শেখের সঙ্গে কলমাকান্দায় বেড়াতে আসেন ওই কিশোরী। কলমাকান্দা যুমনা গেষ্ট হাউসে একদিন থাকার পর মায়া শেখের মাধ্যমে শাীতল (২৫) নামে এক যুবকের সঙ্গে ওই কিশোরীর সখ্যতা গড়ে ওঠে। গত বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) শীতল কিশোরীকে ফুসলিয়ে মোটরসাইকেলে করে ঘুরতে নিয়ে যান। দিনভর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে রাতে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে শীতলসহ অজ্ঞাত আরও ৭-৮ জন ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। পরে গভীর রাতে তাকে উপজেলার সীমান্তবর্তী ভবানীপুর এলাকায় পুকুর পাড়ে ফেলে রেখে চলে যায় ধর্ষণকারীরা। ওই রাতে ৯৯৯-এ এক জনৈকের ফোন আসে যে একটি মেয়েকে কয়েকজন লোক ধরে নিয়ে ধর্ষণ করছে। তাৎক্ষণিকভাবে ৯৯৯ এর পক্ষ থেকে বিষয়টি কলমাকান্দা থানার ডিউটি অফিসারকে জানানো হয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে ১৬ বছর বয়সী ভিকটিমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে নির্যাতিতা কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয় । এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর বৃহস্পতিবার পর অভিযুক্ত লক্ষণ দাস ও ধর্ষণে সহায়তাকারি মোছা. পারভীন আক্তার মায়া শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি মোটরসাইকেল জব্দ করে থানা করে নিয়ে আসা হয়েছে।
কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম মাহমুদুল হক জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে ছয় জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও দুই থেকে তিনজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতদের ও ভিকটিমের ২২ ধারায় জবানবন্দি নেওয়ার জন্য শুক্রবার সকাল ১১ টার দিকে নেত্রকোণা জেলা আদালতে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান।