• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জৈষ্ঠ ১৪২৯
 তৎকালীন ইউএনও’র গাফিলতির অভিযোগ তদন্তে হবে

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

বুড়িমারীতে গুজব ছড়িয়ে জুয়েলকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা

তৎকালীন ইউএনও’র গাফিলতির অভিযোগ তদন্তে হবে

  • লালমনিরহাট প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৩ মার্চ ২০২১

লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননার গুজব ছড়িয়ে আবু ইউনুস মো. শহীদুন্নবী জুয়েল নামে এক ব্যক্তিকে (৪৮) হত্যার পর লাশ প্রকাশ্যে পোড়ানো ঘটনায় ওই উপজেলার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুন নাহারের বিরুদ্ধে দায়িত্ব ও কর্তব্যে অবহেলা ও গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে।

ইউএনও'র দায়িত্ব পালনে অদক্ষতা ছিল কি না তা তদন্তের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর। গত ২১ মার্চ জেলা প্রশাসক আবু জাফর ওই গণবিজ্ঞপ্তি পত্রে স্বাক্ষর করেছেন। যার তদন্ত হবে আগামী ২৫ মার্চ। সোমবার (২২মার্চ) বিকালে ডিসির গণবিজ্ঞপ্তির চিঠির অনুলিপি স্থানীয় সাংবাদিকদের হাতে আসে।

এর আগে, গত ৩০ অক্টোবর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট টিএমএ মমিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করে তদন্ত প্রতিবেদন সরকারের উচ্চ মহলে পাঠানো হয়। তবে ওই তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়নি।

এছাড়াও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনটিও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ০৫.৪৭.৫২০০.০০১.০১.০০৫.২১.৬১ নম্বর স্মারকে ২১ মার্চ জেলা প্রশাসক আবু জাফর স্বাক্ষরিত ওই গণবিজ্ঞপ্তিতে  উল্লেখ করা হয়,‘জনাব কামরুন নাহার (পরিচিতি নম্বর-১৭৪৬৭), প্রাক্তন উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পাটগ্রাম-এর বিরুদ্ধে আগামী ২৫ মার্চ সকাল ১১টায় বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ হলরুমে নিম্নস্বাক্ষরকারী কর্তৃক পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননার অভিযোগে আবু ইউনুস মো. শহিদুন্নবী জুয়েল নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা ও প্রকাশ্যে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে দায়িত্ব ও কর্তব্যে অবহেলা ও গাফিলতি এবং অদক্ষতার তদন্ত অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত তদন্ত কার্যক্রম প্রত্যক্ষদর্শী সংশ্লিষ্ট সকলকে উপস্থিত থেকে সহযোগিতার জন্য অনুরোধ করা হলো। গণবিজ্ঞপ্তিটি পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ব্যাপক প্রচার করার জন্য ও বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে একটি কক্ষ প্রস্তুত করার জন্য ওই চিঠিটির একটি কপি অনুলিপিও পাঠানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, ৱমন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে একটি নির্দেশনা এসেছে। এটি একটি প্রশাসনিক তদন্ত। এ বিষয়ে আমার কোনও মন্তব্য নেই।

তবে গণবিজ্ঞপ্তি জারি বিষয়ে বলেন, পূর্বের গণবিজ্ঞপ্তির চিঠিটি সংশোধন করা হয়েছে। ঘটনার দিন উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের নামে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আগামী ২৫ মার্চ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তদন্ত করা হবে।

তবে কতজনকে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে জানানো যাবে না বলেও তিনি জানান।

পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাম কৃষ্ণ বর্মণ সদ্য যোগদান করার কথা জানিয়ে বলেন, জেলা প্রশাসকের চিঠি পেয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কাজ চলমান রয়েছে।

মামলার তদন্ত বিষয়ে ডিবি পুলিশের ওসি ওমর ফারুক বলেন, চাঞ্চল্যকর জুয়েল হত্যা মামলাসহ পৃথক ৩টি মামলাই গুরুত্বের সঙ্গে তদন্তাধীন রয়েছে। আমরা খুব তাড়াতাড়ি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের বুড়িমারীতে পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননার গুজব ছড়িয়ে আবু ইউনুস মো. শহীদুন্নবী জুয়েল নামে রংপুরের এক ব্যক্তিকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে ছাই করার ঘটনায় পাটগ্রাম থানায় পৃথক ৩টি মামলা রুজু করা হয়। এ তিনটি মামলায় সর্বমোট ১১৪ জন এজাহার নামীয় আসামিসহ অজ্ঞাত শত শত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। এ মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ৪৭ জনকে মামলার গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads