• বুধবার, ৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪২৯
চিকিৎসাসেবা পেতে লাগবে করোনা টেস্ট, জনভোগান্তি

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

চিকিৎসাসেবা পেতে লাগবে করোনা টেস্ট, জনভোগান্তি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৪ মার্চ ২০২১

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ফিভার ক্লিনিক ও করোনা টেস্ট সেন্টারের প্রবেশ গেটের বাইরে বুধবার দুপুরে দাঁড়িয়ে ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা মাহবুব উল্লাহ। এ সময় দায়িত্বরত আনসার সদস্যকে তিনি করোনা টেস্টের ব্যবস্থা করে দিতে অনুরোধ জানাচ্ছিলেন। যদিও আনসার সদস্যের সোজা কথা- আগে থেকে নিবন্ধন করে সিরিয়াল নিয়ে না আসলে কোনোভাবেই করোনার টেস্ট করা সম্ভব নয়।

মাহবুব উল্লাহ বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ভোরে ট্রেনে ঢাকায় পৌঁছে সরাসরি বিএসএমএমইউর আউটডোরে এসেছি। সেখানে দুই ঘণ্টা সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে নাক, কান ও গলার ডাক্তার দেখাই। চিকিৎসক হাসপাতালে ভর্তি হয়ে কানে অস্ত্রোপচার করতে হবে বলে জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে বেশকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর জন্য প্রেসক্রিপশন লিখে দিয়েছেন। এর মধ্যে সবার আগে করতে হবে করোনা টেস্ট, তারপর বাকি টেস্ট করাতে পরামর্শ দেন চিকিৎসক।

শুধু মাহবুব একা নন, তার মতো আরো বেশ কয়েকজন রোগী ও তাদের অভিভাবককে করোনার সিরিয়াল না নিয়ে এসে বিপাকে পড়তে দেখা যায় এদিন।

একাধিক রোগী ও তাদের অভিভাবক জানান, হাসপাতালে যেকোনো রোগী ভর্তি ও অস্ত্রোপচারের জন্য চিকিৎসকরা আগে করোনা টেস্ট করিয়ে আনতে বলেন। করোনা টেস্টের ফলাফল না দেখে তারা অস্ত্রোপচার করবেন না বলে রোগীদের সাফ জানিয়ে দেন। ফলে অনেক রোগী; বিশেষ করে যাদের দ্রুত অস্ত্রোপচার করা প্রয়োজন তাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।

সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিএসএমএমইউর ফিভার ক্লিনিক ও করোনা টেস্ট ইউনিটে প্রতিদিনই ভিড় বাড়ে। সর্বশেষ খবরে বিএসএমএমইউতে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৯ হাজার ১৩২টি।

বিএসএমএমইউর বিদায়ী ভিসি অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া জানান, করোনা সেন্টারে রোগীর ভিড় দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরও জানান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে করোনা পরীক্ষায় সাড়ে তিন হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা লাগে। বিএসএমএমইউতে পরীক্ষায় মাত্র ১০০ টাকা জমা দিতে হয়। এ কারণে ভিড় বেশি।

বিএসএমএমইউর বিভিন্ন বিভাগের একাধিক চিকিৎসক জানান, সম্প্রতি করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা নিজেরা শঙ্কিত। এ কারণে যেকোনো রোগী ভর্তি ও অস্ত্রোপচারের আগে তিনি করোনামুক্ত কি-না তা জেনে নিতে প্রথমেই করোনা পরীক্ষা করে আসার পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে রোগীদের ভোগান্তির বিষয়টি মাথায় এলেও নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবেই এমনটা করছেন বলে স্বীকার করেন তারা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক বে-নজির আহমেদ বলেন, একেক প্রতিষ্ঠান একেকটা মেনে চলে এবং এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যে একটা সমন্বয় তৈরি করা এটা হলো একটা সমাধান। তিনি বলেন, টেস্ট নিয়ে শুরু থেকেই ভুলনীতির চক্রে বাংলাদেশে আজ এ অবস্থা। আমরা ভুলভাবে এগিয়েছি এটা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো দরকার। একেবারে খোলনলচে পাল্টে ফেলা দরকার। আমরা সবসময় বলে আসছিলাম যে টেস্টগুলো ফ্রি করার। টেস্ট ফ্রি করলে যে সুবিধাটা হতো, এই অনিয়মগুলো হতো না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads