• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
‘তিনবেলা খেয়ে-পরে বাঁচতে চাই’

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

‘তিনবেলা খেয়ে-পরে বাঁচতে চাই’

  • আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৬ এপ্রিল ২০২১

রিকশাচালক মো. আবু তাহের মিয়া (৬০)।  স্ত্রী, ২ ছেলে ২ মেয়ে নিয়ে ৬ জনের সংসার তার।  দিন এনে দিন খাই অবস্থার মতো তার সংসার। জীবন জীবিকার তাগিদে নিত্যদিন রিকশা নিয়ে তার বের হতে হয় শহরের অলিগলি। আর রিকশা  চালানোর উপার্জনেই চলে তার এই সংসার। পরিবার পরিজনের মুখে অন্ন জোগাতে সরকার ঘোষিত লকডাউনেও তাকে কাকডাকা ভোরে রিকশা নিয়ে রাস্তায় বের হতে হয় তাকে। তিন বেলা খেয়ে পরে তিনি যেন বাঁচতে চান।  আবু তাহের পৌর শহরের রাধানগর এলাকার বাসিন্দা তিনি। 

মঙ্গলবার দুপুর  ১২ টায় পৌর শহরের সড়ক বাজার এলাকার তার সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, দুপুর পর্যন্ত উপার্জন করেছেন মাত্র ১১০ টাকা। এর মধ্যে নাস্তা করতে খরচ হয় তার ৩০ টাকা। ঘরের বাজার করেছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন বর্তমানে তার হাতে যে টাকা হাতে আছে সেই টাকায় ১ কেজি চাল ছাড়া কিছুই কেনা যাবে না। তাই বিকাল বেলা বাজার নিয়ে বাড়ি যাবেন বলে জানায়। এর আগের দিন  সকাল থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত রিকশা চালিয়ে ২৬০ টাকা উপার্যন করেন তিনি। আজকের বাজার আরো খারাপ।  লকডাউন থাকায় মানুষের চলাচল কমে যাওয়ায় আমাদের উপার্যন ও দিন দিন কমছে।

তিনি আরো বলেন চাল, ডালসহ সব কিছু তার কিনে খেতে হয়। একদিন রিকশা না চালালে তার  ঘরে চুলা জ্বলে না। এই ছয়জনের সংসারে দৈনিক ৩০০ টাকার উপর খরচ হয়। তাছাড়া মাস শেষে ঘরভাড়া, বিদ্যুৎ বিল তো আছেই। তবে এ অবস্থা বেশী দিন থাকলে তাদের মতো গরিবদের না খেয়ে যেন মরতে হবে।

রিকশা চালক মো. ফোরকান মিয়া বলেন স্ত্রী, ২ ছেলে ২ মেয়েসহ তার ৬ জনের সংসার। রিকশা চালানো আয় দিয়ে চলে তার এই সংসার। কোন উপায় না পেয়ে এই লকডাউনের মধ্যে তিনি ভাড়ায় একটি রিকশা নিয়ে বের হন। কথা হলে তিনি বলেন, দুপুর পযর্ন্ত তার উপর্যন হয় ১৫০ টাকার মতো। এর মধ্যে রিকশা ভাড়া ২০০ টাকা। কিভাবে ভাড়া দিবেন কি ভাবে চাল, ডাল কিনবেন চিন্তায় অস্থির হয়ে আছেন।

তিনি বলেন, লকডাউনে ট্রেন বন্ধ থাকায় ও প্রশাসনের কড়াকড়িতে লোকজন  বের না হওয়ায় উপার্জন কমে গেছে।  সারা দিন ৩০০ টাকা আয় করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ছে।

এদিকে, করোনা ভাইরাস সংক্রামণ প্রতিরোধে আখাউড়ায় সচেতনতার অংশ হিসাবে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। সরকারের নির্দেশিত সব নির্দেশ বাস্তবায়নে তারা মাঠে নেমে কাজ করছেন। স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে মাইকিং করা হচ্ছে।

এদিকে পৌর শহরসহ উপজেলার সর্বত্র  হাট-বাজারে ছোট বড় শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। জনশূন্য হয়ে পড়েছে রেলওয়ে জংশন স্টেশনেও । জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোন লোকজন  বাসাবাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে দুজনের অধিক চলাচল করলে গুনতে হবে তাদের জরিমানা। ফলে শহরের অলি-গলিসহ সর্বত্র  অনেকটাই ফাঁকা হয়ে আছে।

তাছাড়া হাসপাতাল ও ওষুধের ফার্মেসিসহ নিত্যপণ্যের দোকান খোলা রয়েছে। তবে ওই সমস্ত দোকান পাটে বেশ ভীড় লক্ষ করা গেছে।  রেলওয়ে স্টেশন পৌর শহরের সড়ক বাজার, লাল বাজার, বড়বাজার, খড়মপুরসহ শহরের বিভিন্ন অলি-গলি ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নুরে-ই আলম  বলেন, লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়ে মাঠে রয়েছি। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে জরিমানাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads