করোনার হটস্পটে পরিণত হচ্ছে চাঁদপুর। বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর থেকে এ জেলায় হু-হু করে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা।
স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই ফলে এমন মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বেশী বলে জানান শাহ্মিরান হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. এ এম ওয়াসিক ফয়সাল।
তিনি জানান, কেউ স্বাস্থ্য বিধি মানছেনা। ফলে করোনার হটস্পটে পরিণত হয়েছে চাঁদপুর, বাড়ছে আক্রান্ত মৃতের সংখ্যা।
চাঁদপুরে ৭ এপ্রিল (২৪ ঘন্টায়) করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩জন। এর মধ্যে শাহরাস্তির ২জন ও কচুয়ার ১জন রয়েছেন। শাহরাস্তি উপজেলার নাওড়া এলাকার আঃ রব পাটওয়ারী (৬৫) মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিজ বাড়িতে মারা যান। একই উপজেলার উয়ারুক এলাকার কইতুরেন্নেছা (৬৫) বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে নিজ বাড়িতে মারা যান।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কচুয়া অফিসের স্টাফ (নিজ বাড়ি নোয়াখালীর নেওয়াজপুরে) আব্দুল মতিন (৪৫) কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মারা যান। তারা সবাই করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।
বুধবার চাঁদপুর জেলায় আরো ৪৮জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। চাঁদপুর সদর উপজেলার ২৪জন, হাজীগঞ্জে ১২জন, শাহরাস্তির ৩জন, ফরিদগঞ্জের ৫জন, কচুয়ার ১জন, মতলব দক্ষিণের ২জন ও হাইমচরের ১জন।
নতুন আক্রান্তসহ জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৪৫৯জন। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫জন। সুস্থ হয়েছেন ২৮৯১জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ৪৭৩জন। আক্রান্তদের মধ্যে চাঁদপুর সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ২৮জন। বাকীরা হোম আইসোলেশনে আছেন।
চাঁদপুর জেলায় বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত ৩৪৫৯জনের উপজেলাভিত্তিক পরিসংখ্যান হলো : চাঁদপুর সদরে ১৫৭৯জন, ফরিদগঞ্জে ৩৬৫জন, মতলব দক্ষিণে ৩৩৭জন, হাজীগঞ্জে ৩১২জন, শাহরাস্তিতে ২৯৭জন, মতলব উত্তরে ২৫৪জন, হাইমচরে ১৯৪জন ও কচুয়ায় ১২১জন।
করোনায় জেলায় মোট ৯৫জন মৃতের উপজেলাভিত্তিক পরিসংখ্যান হলো : চাঁদপুর সদরে ৩২জন, হাজীগঞ্জে ১৭জন, ফরিদগঞ্জে ১৪জন, মতলব উত্তরের ১১জন, শাহরাস্তিতে ৯জন, কচুয়ায় ৬জন, মতলব দক্ষিণে ৫জন ও হাইমচরে ১জন।
সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্লা বুধবার রাতে শাহরাস্তি উপজেলার ২জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ কর্মকর্তা আরো জানান, মৃত্যুর সংখ্যা আরো অনেক বেশী। অনেক খবর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আমরা এখনো পাইনি।
তিনি বলেন, চাঁদপুরে কেউ আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হলে তিনি অন্য কোথাও মারা গেলেও জেলার মৃতদের তালিকায় তার নাম থাকবে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনা থেকে বাচঁতে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। নিয়মিত মাস্ক পড়তে হবে। জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। ঘন ঘন ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধৌত করতে হবে। তবেই মহামারি করোনা থেকে মুক্তি পেতে পারি।
