• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জৈষ্ঠ ১৪২৯
পাঁচ মাস পর প্রসূতির পেট থেকে ‘গজ’ অপসারণ

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

পাঁচ মাস পর প্রসূতির পেট থেকে ‘গজ’ অপসারণ

  • কুমিল্লা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৯ এপ্রিল ২০২১

জেলার দেবীদ্বারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের প্রায় পাঁচ মাস পর এক নারীর পেট থেকে বের করা হলো এক পোটলা গজ (ব্যান্ডেজ)। এই দীর্ঘ সময় গজটি ওই নারীর পেটে থাকায় তাতে পচন ধরে তার জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছিল।

রোগীর ভাই রুহুল আমিন জানান, গত বছরে ৫ নভেম্বর মুরাদনগর উপজেলার মোগসাইর গ্রামের রাসেল মিয়ার স্ত্রী শারমিন আক্তার (২৫) প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে দেবীদ্বারের আল ইসলাম হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনিস্টক সেন্টারের ৩০৩ নং ক্যাবিনে ভর্তি হন। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রোজিনা আক্তার তাকে দেখে জরুরি সিজার করার পরামর্শ দেন। ওইদিনই ডাক্তার রোজিনা আক্তার ও দেবীদ্বারের আল ইসলাম হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনিস্টক সেন্টারের সার্বক্ষণিক চিকিৎসক ডা. শামীমা আক্তার লিন্টা তার সিজার করেন। এতে একটি ছেলে সন্তান জন্ম হয় শারমিনের।

অপারেশেনের কিছুদিন পর থেকে শারমিনের পেটে ব্যথা ও ক্ষত থেকে পুঁজ বের হতে থাকে। পরে তাকে দেবীদ্বার ইবনে সিনা হাসপাতালে আল্টা করানো হয়। আল্ট্রার রিপোর্টে পেটে পানি জমে থাকার কথা বলা হয়। পরে ঢাকায় ‘বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়, ওখানেও আল্ট্রা রিপোর্টে পানি দেখা যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক পানি কমার ওষুধ দেন। পানি কমে এলেও ব্যথা কমেনি। সর্বশেষ কুমিল্লা ময়নামতি জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. কর্নেল আবু দাউদ মো. শরীফুল ইসলামের শরণাপন্ন হন, তিনি নিজেই আল্ট্রা করেন এবং পেটে একটা কিছু আছে বলে জানান এবং তিনিই গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শারমিনকে অপারেশন করেন। অপারেশনের পরই বের করা হয় ‘গজ’ বা ব্যান্ডেজের কিছু অংশ।

এবিষয়ে কথা অভিযুক্ত গাইনি চিকিৎসক ডা. রোজিনার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি  ফোন রিসিভ করেননি। তবে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহম্মেদ কবির জানান, এ বিষয়ে প্যাসেন্টের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি। সাংবাদিকদের কাছ থেকেই এ ঘটনা জানতে পেরেছি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা যেত, আসলে সত্য ঘটনাটি কি?

দেবীদ্বার আল ইসলাম হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়াজ মোহাম্মদ হোসেন (এনাম) বলেন, রোগীর পেটে গজ থেকে যাওয়ার বিষয়টি আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারি। ঘটনাটি পাঁচ মাস আগের। এরপর রোগীর স্বজনরা আমাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করেনি। এমন ঘটনা ঘটে থাকলে আমরা অনুতপ্ত।

ময়নামতি জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. কর্নেল আবু দাউদ মো. শরীফুল ইসলামের মুঠোফোনেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

এবিষয়ে কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন বলেন, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও হাসপাতালের নাম উল্লেখ করে রোগীর স্বজনরা যদি লিখিত অভিযোগ করেন, তাহলে বিষয়টি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads