বান্দরবানের লামায় কিশোর হাফেজ অলি উল্লাহ প্রকাশ স্বাধীনকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামি মো. আরিফুল ইসলাম (১৭) ও মো. ফয়েজ আহমদ (৩৮)। বুধবার (২১ এপ্রিল) লামার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আনিসুর রহমানের আদালতে জবানবন্দি দেয় এই দুই আসামি।
এ সময় তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলে, কিশোর হাফেজ অলি উল্লাহকে হত্যার আগেই পাহাড় চূঁড়ায় গর্তখুঁড়ে দুই অপহরণকারী। এরপর গাছের সাথে বেঁধে রাখা অলি উল্লাহকে অপহরণকারীদের একজনের কোমরের বেল্টখুলে তার দ্বারা শ্বাসরোধ করে হত্যা করে খোঁড়া ওই গর্তেই লাশটি মাটি চাপা দেয়। শুধু তাই নয়, হত্যারপূর্বে ওই গাছের সাথে বেঁধে রাখা কিশোর হাফেজ অলি উল্লাহর ছবিতুলে স্বজনদের মোবাইল ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে দাবিকৃত মুক্তিপনের এক লাখ টাকার জন্য চাপ দেয় তারা। তবে অলি উল্লাহর স্বজনরা মুক্তিপনের টাকা না দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ মাটিচাপা দেয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং লামা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আসামিদের আদালতে জবানবন্দি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কিশোর হাফেজ মো. অলি উল্লাহকে জিম্মিকরে মুক্তিপন দাবি এবং হত্যারপর লাশগুমের অপরাধ স্বীকার করে আদালতের নিকট বিস্তারিত জবানবন্দি দিয়েছে তারা। আদালত জবানন্দি শেষে আদালত এই দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে বুধবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে কিশোর হাফেজ মৃত অলি উল্লাহর বড়ভাই রিয়াজ উদ্দিন সোহেল বাদী হয়ে লামা থানায় একটি মামলা দায়েল করেছেন। ওই মামলায় মৃতের মামাতো ভাই আরিফুল ইসলাম (১৭) ও মো. ফয়েজ আহমদ (৩৮) ছাড়াও অজ্ঞাত আরও বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে অপহরণ, চাঁদাদাবি, হত্যা এবং লাশগুমের পৃথক অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।
পুলিশ ও মৃতের স্বজনরা জানান, কিশোর হাফেজ অলি উল্লাহ নিখোঁজের দীর্ঘ ২৫দিন পর গত ২০ এপ্রিল (মঙ্গলবার) দিনগত রাতে পার্বত্য বান্দরবানের লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের শিংঝিরি নামক এলাকার পাহাড় চূঁড়া থেকে অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তারআগে গ্রেপ্তার করা হয় স্বাধীনের দুই অপহরণকারী ও খুনি ফয়েজ এবং আরিফুলকে।