• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯
সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে হাঙর

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে হাঙর

  • মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া
  • প্রকাশিত ০১ মে ২০২১

পটুয়াখালীর কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে হঠাৎ করে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে হাঙর ধরা পড়ছে। অধিকাংশ হাঙর ছয় ইঞ্চি থেকে দেড়ফুট সাইজের। নিষেধাজ্ঞা থাকায় অধিকাংশ জেলের জালে ধরাপড়া হাঙরগুলো সাগরে ফেলে দিলেও কিছু জেলে সেগুলো নিয়ে আসছে উপকূলে। কলাপাড়া পায়রা বন্দর কোস্টগার্ডের অভিযানে রাবনাবাদ নদীর মোহনা থেকে এক ট্রলারভর্তি প্রায় ২০ মণ ছোট হাঙর আটক করেছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে আটক হাঙর জনসম্মুখে পুড়িয়ে মাটিচাপা দিয়ে দিলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি শিকারিদের বিরুদ্ধে। তবে মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, আটক করা হাঙরগুলো হাতুড়ি বা কোলা প্রজাতির হাঙর। সাগরে মাছ কমে গেলে অনেক সময় হাঙরের দল সাগরের তলদেশ থেকে খাদ্যের জন্য উপরিভাগে চলে আসলে এগুলো ধরা পড়ে।

উপকূলীয় বিশাল জলসীমায় প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণে হাঙর শিকার করে জেলেরা। শীত মীেসুমে মূলত হাঙর বেশি ধরা পড়ে। জেলেদের জালে ধরাপড়া হাঙর তখন বিভিন্ন শুঁটকি পল্লীতে বিক্রি করে দেয়। যা শুঁটকি করে বিদেশেও রপ্তানি করা হয়। তবে বন বিভাগ ও মৎস্য বিভাগের হাঙর শিকার বন্ধে প্রচারণা ও শাস্তির বিষয়টি জেলেদের কাছে প্রচার না করায় গভীর সমুদ্রে অহরহ ধরা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির হাঙর। তবে কলাপাড়ায় ধরাপড়া হাঙরগুলো মসৃণ হাতুড়ি প্রজাতির হাঙ্গর। যেটি বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনের রক্ষিত বন্যপ্রাণীর তালিকায় তফসিল-১ অনুযায়ী সংরক্ষিত। এগুলো প্রায় তিন থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত বড় হয় বলে জানা যায়।

কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান,  কয়েকদিন প্রচণ্ড দাবদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে সাগরের তলদেশে আবহাওয়ার বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় হঠাৎ করে গভীর সমুদ্র থেকে সাগরের উপরিভাগে হাঙ্গরগুলো ঝাঁকে ঝাঁকে উঠে আসছে বলে ধারণা করছেন। তবে এভাবে হাঙ্গরগুলো মারা পড়ছে সমুদ্রে খাদ্যশৃঙ্খলে বিরূপ প্রভাব পড়তে বলে।

স্কুল ছাত্র তাহমিদ হাসান ও সিরাজুল ইসলাম বলেন, পাঠ্যবইয়ে হাঙ্গরের ছবির সাথে এগুলো মেলাতে পারছি না। হাঙ্গরগুলো অনেক বড় হয়। অথচ ধরা পড়া হাঙ্গরগুলো খুবই ছোট। এভাবে হাঙ্গর মারা পড়লে প্রকৃতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। এই হাঙ্গর ধরাপড়া ট্রলারের মাঝি মো. মুসা ও জেলে রাব্বি জানান, তারা সাগরে ইলিশের জাল পাতলেও তাতে ধরা পড়ছে হাঙ্গর। কী কারণে এতো হাঙ্গর ধরা পড়ছে তারা তা জানেন না বলে জানান। এগুলো বিক্রির জন্য মহিপুর মৎস্য বন্দরে নেওয়ার পথে কোস্টগার্ড তাদের আটক করে। তবে এগুলো ধরা অবৈধ কিনা তা জানেন না বলে জানান।

পায়রা বন্দর কোস্টগার্ডের পেটি অফিসার বেলায়েত হোসেন খান জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে পায়রাবন্দর রাবনাবাদ চ্যানেল থেকে ট্রলারসহ ওই বিপুল পরিমাণ হাঙ্গর আটক করেন। শুক্রবার তারা বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছেন। যেহেতু হাঙ্গর শিকার নিষিদ্ধ তাই তারা আটক করে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছেন পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।

এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম জানান, যেহেতু অনিচ্ছাকৃতভাবে জালে হাঙ্গর ধরা পড়েছে তাই জেলেসহ ট্রলারটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আটক করা মাছ পুড়িয়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে বলে জানান।

 

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads