• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
আখাউড়ায় ঈদ বাজার জমজমাট

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

আখাউড়ায় ঈদ বাজার জমজমাট

  • আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০২ মে ২০২১

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় করোনা ঝুঁকি মাথায় নিয়ে ক্রেতাদের ভিড়ে জমজমাট হয়ে উঠছে ঈদ বাজার। পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন মার্কেটে পোশাকের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। অভিজাত থেকে ফুটপাত সর্বত্রই যেন তিল ধরার ঠাঁই নেই। পরিবারের সদস্য আর স্বজনদের চাহিদা মেটাতে পছন্দের পোশাকের খোঁজে ছুটছেন তারা এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে। ক্রেতাদের দু’হাতে ভরা শুধু শপিং ব্যাগ আর ব্যাগ। সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। বিপুলসংখ্যক ক্রেতা সমাগমে খুশি ব্যবসায়ীরা।

জানা গেছে, করোনা মহামারি ঠেকাতে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। এর মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে খুলে দেয়া হয়েছে সবমার্কেট। ঈদের আগে অর্থনীতিতে প্রাণ আনতে, ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙ্গা রাখতে এবং মানুষের জীবন-জীবিকাকে অব্যাহত রাখতে খানিকটা ছাড় দিয়েছে সরকার। তবে বাজারে অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা রয়েছে অনেক কম। ক্রেতা-বিক্রেতার সবার মাস্ক পরা ও নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা থাকলেও সেটি প্রায়শই মানা হচ্ছে না। যে যার মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে এক মার্কেট থেকে আরেক মার্কেটে। ব্যবসায়ীদের মার্কেটের সামনে স্যানিটাইজার, হ্যান্ডওয়াশ রাখার কথা থাকলে ও চোখে পড়ছে না ওইসব। তবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন মাইকিং করে ক্রেতাদের সতর্ক করা হলেও তাতে তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে করোনা সংক্রমণ দ্রুত বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে ঈদকে সামনে রেখে বেচাবিক্রি তুলনামূলক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় খুশি ব্যবসায়ীরা।

এদিকে ক্রেতাদেরকে আকৃষ্ট করতে প্রতিটি মার্কেটে দেশী বিদেশী নামী দামী ব্যান্ডের পোশাকের সমাহার নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানীরা। নিত্য নতুন পোশাকে ইতিমধ্যে ভরে গেছে সবকটি মার্কেট। তবে আয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাধ ও সাধ্যের সমন্ময় ঘটাতে অধিকাংশ ক্রেতায় হিমসিম খাচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,পৌর শহরের সড়ক বাজারের মটর ষ্ট্যান্ড মার্কেট, সিটি কর্নার মার্কেট, সরকার প্লজা, গোল্ডেন প্লাজা, সিঙ্গাপুর মার্কেট, খান টাওয়ারসহ বিভিন্ন মার্কেটে নারী পুরুষের উপচে পড়া ভিড়। চলছে জমজমাট কেনা বেচা।

প্রতিটি মার্কেটে শোভা পাচ্ছে স্কাট, টপস, থ্রিপিচ,জিন্স পেন্ট, জামদানি শাড়ি, বেনারশি, কাতান, সিল্ক, জর্জেট জয়পুরি, ছেলেদের নবাবী পাঞ্জাবী,শেরওয়ানী, ফতুয়া, টি শার্ট পেন্ট এবং ছোট ছেলে মেয়েদের জন্য বাহারি ডিজাইনের তৈরী পোশাক। তাছাড়া রয়েছে জামদানি বেনারশি, কাতান, সিল্ক, জর্জেট জয়পুরি শাড়ী ও। তবে গরমের কারনে হাল্কা সুতি কাপড়ের প্রধান্য বেশী রয়েছে বলে একাধিক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন।

সড়ক বাজারের ব্যবসায়ী মো. আবু ছায়েদ মিয়া বলেন, করোনা সংক্রমণের কারণে ইতোমধ্যে তাদের বড় ধরনের লোকসান গুণতে হয়েছে। তবে ঈদকে সামনে রেখে দোকানপাট খুলে দেয়ায় বেচাকেনা ভালই হচ্ছে। ঈদ যতই গনিয়ে আসছে বেচা কেনা বাড়ছে।

আসমা আক্তার বলেন, এমনিতেই করোনাই ভয় সারাক্ষণ কাজ করে। তাছাড়া সামনে ঈদ আসছে তাই সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের জন্য নতুন কাপড় কিনতে আল্লাহর উপর ভরসা করে আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে বের হয়েছি। দ্রুত কেনাকাটা করে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরবো।

গৃহিনী তানজিনা আক্তার বলেন, স্বাস্থ্য বিধি মেনে ছেলে আর মেয়ের জন্য ঈদ পোশাক কিনতে বাজারে আসা। অনেক পোশাক দেখেছি কিন্তু মনে হচ্ছে পোশাকের অনেক দাম। অবশেষে ১ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে একটি থ্রিপিছ ও ১ হাজার টাকা দিয়ে ছেলের জন্য ১টি শার্ট কেনা হয়। তবে কেনাকাটা করতে গিয়ে অনেক ভিড় থাকায় ভয় কাজ করছে বলে জানায়।

আফসানা আক্তার বলেন, এমনিতেই লকডাউন চলছে। সামনে ঈদ থাকায় সবাই যেন বাজারে এসে কেনাকাটা করছে। কোন সময় আবার দোপানপাট বন্ধ হয়ে যায় তার কোন নিশ্চিয়তা নেই। স্বাস্থ্য বিধি মেনে ছেলে ও মেয়েকে ঈদের নতুন পোশাক কেনার জন্য ঘুরে ঘুরে শেষ পযর্ন্ত থ্রি পিচ, শার্ট ও জিন্স প্যান্ট কেনা হয় বলে জানায়। তিনি বলেন তুলনামূলকভাবে পোশাকের দাম অনেক বেশী মনে হচ্ছে।

মো. সোহাগ বলেন, মার্কেটের প্রতিটি দোকানে উপচেপড়া ভিড়। অনেক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বাবার জন্য লুঙ্গী, মার জন্য শাড়ি কেনা হয়েছে। ছেলের জন্য শার্ট ও পেন্ট ক্রয় করতে না পারায় আরেক দিন আসবে বলে জানায়।

এদিকে ঈদে গজ কাপড়ের কদর কমেনি। বেশী ভাগ নারীই নিজেদের মনের মতো করে পছন্দের নকশা তৈরী করে গজ কাপড় কিনে পোশাক বানাচ্ছেন। এজন্যই এখন গজ কাপড়ের দোকানে উপচে পড়া ভিড়। একরঙ্গা, চিকেন জর্জেট,মাখন সিল্ক, ক্রাশড চায়না জর্জেট, টিসুসহ বিভিন্ন রকমের গজ কাপড় বিক্রি হচ্ছে দোকানগুলোতে। তাছাড়া জুতা,চুড়ি, কসমেটিকস আর ফুটপাতের দোকান গুলোতে সমান তালে স্বল্প আয়ের লোকজন কেনা কাটা করছেন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads