• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জৈষ্ঠ ১৪২৯
কর্মসংস্থানের পথ দেখাচ্ছেন ইজাহার

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

কর্মসংস্থানের পথ দেখাচ্ছেন ইজাহার

  • দেলোয়ার কবীর, ঝিনাইদহ
  • প্রকাশিত ০৮ মে ২০২১

দেশে বেকারের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে যখন সংখ্যার সীমা পেরিয়ে যাচ্ছে, জেলার শৈলকুপা উপজেলার মধ্যম বয়েসি কৃষক মাত্র কয়েকটি ফ্রিজিয়ান জাতের গাভি পালন করে সচ্ছলতা এনেছেন নিজের সংসারে। বেকার যুবাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে দেখাচ্ছেন আলোর পথ। মাত্র ছয় বছর আগে একটিমাত্র উন্নতজাতের গাভি নিয়ে তার যাত্রা শুরু। এ কথা বললেন নিত্যানন্দপুর গ্রামের কৃষক ইজাহার মোল্যা। তিনি জানান, সামান্য মাঠান জমি আর ক্ষুদ্র পরিসরের গবাদিপশুর খাদ্য বিক্রয়ের ব্যবসায়ে সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছিলেন তিনি। ব্যবসার অভিজ্ঞতা দিয়ে তিনি ফ্রিজিয়ান জাতের একটি উন্নত গাভি কিনে কয়েক মাসের মধ্যেই বাচ্চা পান। বাচ্চাটি বড় হতে না হতেই আরেকটি। এমন করে ৫-৬টি বাচ্চা পেয়ে যান তিনি যা পারিবারিক পর্যায়ের গবাদিপশুর খামারটি বড় করতে থাকে। বর্তমানে তার খামারে দুটি দুধালো আর দুটি গর্ভবতী গাভি। সে দুটি অল্পদিনেই বাচ্চা দেবে।

ইজহার মোল্যা জানালেন, গত দুই বছরে তিনি চার লাখ টাকার গরু বিক্রি করেছেন সাংসারিক প্রয়োজন মিটিয়ে। খামারের বাচ্চা গরু দুটিও ২-১ বছরের মধ্যে বাচ্চা দিতে শুরু করবে। গরুগুলোকে ঠিকমতো খাবার দিতে গো-খাদ্যের এ চরম সংকটের মুখে তিনি কিছু জমিতে উন্নতমানের নেপিয়ার ঘাসের চাষ করছেন, যা কিছুটা না বাড়ালে খরচের সাথে তাল মেলাতে পারছেন না। দুধালো ২টি গাভি ২৫-২৬ কেজি দুধ দিচ্ছে যার প্রায় অর্ধেক খরচ হয় গো-খাদ্য কিনতে। তদুপরি তিনি কিছু কিছু সঞ্চয় করেন একমাত্র কণ্যাসন্তানের ভবিষ্যতের জন্য। এলাকায় বেশ সচ্ছল কৃষক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন তিনি। খামার দেখভাল করতে তার স্ত্রী বেশি ভূমিকা পালন করেন, জানালেন ইজহার মোল্যা।

কঠোর পরিশ্রমী এই কৃষকের মতে, দেশে লেখাপড়া জানা ও না জানা বা কম জানা বেকারের সংখ্যা কয়েক লাখ। এদের আবার কেউ কেউ চাকরির খোঁজে বৈধ বা অবৈধভাবে দেশ ত্যাগ করছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত পরিবারের যুবকরা অনেক ক্ষেত্রে ভিটেমাটি বেচেও বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন, অনেকেই পথের মাঝে মৃত্যুর শিকারও হচ্ছেন। তিনি মনে করেন, সম্পদ ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শ্রমিকের কাজ করছে দেশের বাইরে যাওয়া খুব বুদ্ধিমানের কাজ না। তার মতে, যুব উন্নয়ন থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অথবা ২-১ লাখ টাকা খরচ করে নিজের উদ্যোগে ছোট একটি গাভির খামার গড়ে তুলতে পারলে ২-১ বছরের মধ্যে সফলতা হাতের নাগালে আসতে বাধ্য। এজন্য দরকার দৃঢ় মনোবল আর কঠোর পরিশ্রম। এ দুটোর সমন্বয় থাকলে বিদেশ পাড়ি দিতে হবে না, স্বদেশেই কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে সচ্ছলতা যেমন পাওয়া যেতে পারে, তেমনি মর্যাদা নিয়েও বেঁচে থাকা সম্ভব।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads