• শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪২৯
গাছে গাছে ঝুলছে কমলা

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

গাছে গাছে ঝুলছে কমলা

  • কালীগঞ্জ (ঝিনাইদঞ্জ) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১১ মে ২০২১

বাগানে ঢুকতেই অনেক মানুষের ভিড় দেখা গেল। কেউ ঘুরছেন, কেউ আবার সেলফি তুলছেন। আবার কেউ বলছেন, এ যেন দার্জিলিংয়ে কমলা ফলের বাগানে ঘুরতে এসেছেন। গাছে হলুদ কমলা ঝুলে আছে দেখতেই খুব সুন্দর লাগছে। কমলা সাধারণত আমাদের দেশে চাষ খুবই কম। জনশ্রুতি আছে, বাংলাদেশে চাষ করলে কমলা ফল খেতে টক লাগে। কিন্তু স্বাদেও পিছিয়ে নেই এ কমলা। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম চাপাতলা এলাকার কোমলা চাষি রফিকুল ইসলামের কমলা ফলের বাগানের কথা। তিনি উপজেলার চাপাতলা গ্রামের আইনুদ্দীন মন্ডলের ছেলে। ভারতের সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০০ গজ দূরে চাপাতলা গ্রামে অবস্থিত বাগানটি। তিনি মেন্ডারিন ও দার্জিলিং দুই জাতের কমলা চাষ করেছেন। বাগানে ঘুরতে ঘুরতে কথা হয় রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, নিজের এক বিঘা চাষের জমি আছে। দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটত তার। সংসারের অভাব ঘোচাতে ধারদেনা করে তিন বছর আগে ভারতের দার্জিলিং গিয়ে ছিলেন কমলা বাগান দেখতে। এরমধ্যে কমলা বাগান দেখে বেশি ভালো লেগেছিল তার। দার্জিলিং থেকে ফেরার সময় ২০০ টাকা করে কমলা ও ১৪০ টাকা দরে মাল্টা লেবুর চারা কিনে আনেন। সেখান ফিরে এসে ২০১৬ সালের প্রথম দিকেই চাপাতলা গ্রামে অন্যের কাছ থেকে ৪ বিঘা জমি লিজ নেন। ওই জমিতে তিনি পেয়ারা, কমলা ও মাল্টার চাষ শুরু করেন। রফিকুল ইসলাম আরো বলেন, প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছিল তার। এই জমি থেকে ১০ লাখ টাকার পেয়ারা ও ৯ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করেছেন। দার্জিলিংয়ের কমলা কেজি প্রতি ১২০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। এরপর বাগান থেকে পেয়ারা গাছ উঠিয়ে শুধুই কমলার বাগান তৈরি করেছেন। এখনো প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার কমলা বাগানে আছে। চাষ সম্পর্কে তিনি বলেন, পাঁচ বছর পর একটি গাছ ফল ধরার জন্য পরিপূর্ণতা লাভ করে। প্রতিটি গাছ থেকে ১২-১৫ বছর পর্যন্ত ভালোভাবে ফল পাওয়া যাবে।

বাগান থেকে কমলা নিতে আসেন ঢাকার ফল ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, এই কমলার সাইজ, স্বাদ, রঙ সবকিছু দার্জিলিং বা অন্য দেশের কমলার মতো। এখান থেকে নিয়ে গেলে আমাদের লাভ বেশি হয়। ফল ভালো রাখতে কোনো প্রকার রাসায়নিক ব্যবহার করতে হয় না। এই ফল টাটকা থাকে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী বলেন, আমি এবং বিভিন্ন ভিজিটর নিয়ে রফিকুল ইসলামের কমলার বাগান পরিদর্শন করেছি। সবাই বলছে, দার্জিলিংয়ের থেকে এই কমলা অনেক ভালো। আমরা জানতাম পাহাড়ি অঞ্চলে কমলা ভালো হয়। কিন্তু মহেশপুর উপজেলার এই বেলে-দোঁআশ মাটিতেও অনেক ভালো কমলা হয়েছে। কমলাতে মাছি পোকা এগাতে তাকে বেশি পরামর্শ দিয়েছি। তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে বাগানটি পরিদর্শনে আসেন বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ উইংয়ের পরিচালক ড. আলহাজ উদ্দীন আহাম্মেদ। পরিদর্শনকালে তিনি জানিয়েছিলেন, সমতল ভূমিতে বাণিজ্যিকভাবে দার্জিলিং জাতের কমলার চাষ এবারই প্রথম।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads