• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯
আখাউড়ায় বিদ্যুৎবিহীন ১৭ ঘণ্টা

প্রতীকী ছবি

সারা দেশ

আখাউড়ায় বিদ্যুৎবিহীন ১৭ ঘণ্টা

  • আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৫ মে ২০২১

হয়নি কোনো ঝড় তুফান কিংবা জড়ো বাতাস, হয়েছে স্বস্তির বৃষ্টি । এরই মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় টানা ১৭ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিহীনে অন্ধকার থাকে। সন্ধ্যা ৭টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ১১ টা পযর্ন্ত প্রায় ১৭ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিহীন থাকায় গ্রাহকরা অতিষ্ট হয়ে উঠে। তাছাড়া বেশ কিছু দিন ধরে তীব্র লোডশেডিং আর অসহ্য গরমে ভোগান্তি চরমে পৌঁছে।

স্থানীয় লোকজনরা জানায়, সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হালকা বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির আগ মুহুর্তে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। রাত ৯টার দিকে ১ মিটিতে অন্ত:ত ৪-৫ বার করে বিদ্যুৎ আসে আর চলে যায়। এর পর থেকে সকাল ১১ টা পযর্ন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে । তবে পৌর এলাকায় দু’একটি স্থানে বিদ্যুৎ থাকলে ও বেশী জায়গায় ছিলনা। বিদ্যুৎ না থাকার ফলে পৌর এলাকাসহ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোকজদের চরম দূর্ভোগের শিকার হন। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন বিদ্যুৎ-সংযোগ দিতে রাত দিন কাজ করছেন।

এদিকে বেশ কিছু দিন ধরে অব্যাহত লোডশেডিং জনজীবন বিপযর্স্ত হয়ে পড়েছে। লোডশেডিং এর কারনে ফ্রীজ,টিভি, ফ্যানসহ বিদ্যুৎ নির্ভর যন্ত্রাংশ ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। অব্যাহত লোডশেডিংএর ফলে সবচাইতে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশু, বৃদ্ধ ও শিক্ষার্থীরা । তবে অনেক শিক্ষার্থী মোমবাতি, হারিকেন, জ্বালিয়ে লেখা পড়া করছে ।

তাছাড়া গত কিছু দিন ধরে সূর্যের প্রচন্ড তাপে প্রকৃতি হয়ে উঠেছে রুক্ষ। সেই সাথে রোদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গরম। গরমে উপজেলা বাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। শহর থেকে গ্রাম কোথাও যেন স্বস্তি নেই। গরমের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সর্দি,কাশি, জ্বর,ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে লোকজন। সব মিলিয়ে সাধারন মানুষ দু:সহ অবস্থানের মধ্যে রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পৌর এলাকাসহ উপজেলার উত্তর ইউনিয়ন,দক্ষিণ ইউনিয়, মোগড়া,মনিয়ন্ধ ও ধরখার ইউনিয়ন ও সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগুলোর লোকজন অসহনীয় লোডশেডিং এর কারনে চরম কষ্টে কাটছে তাদের দিন। তবে পৌর শহরে লোডশেডিং কিছুটা কম হলেও ইউনিয়ন পর্যায়ে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে বলে লোকজন অভিযোগ করেন। প্রতিদিন গড়ে ৮-১০ ঘন্টা নিয়মিত লোডশেডিং হচ্ছে।
উপজেলার হীরাপুর গ্রামের মো. সারোয়ার হোসেন বলেন, সন্ধ্যার দিকে বেশ কিছুক্ষন বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির সাথে হালকা বাতাস ছিল। বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগেই বিদ্যুৎ চলে যায়। এরপর থেকে সারা রাত্র আর আসেনি। মাঝে মধ্যে ২-১ বার আসলে ও তার স্থায়ী থাকে ১ মিনিট। বিদ্যুৎ না থাকায় সারা রাত্র ঘুমাতে পারেননি বলে জানায় ।

সিরাজ মিয়া বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অনেক বার ফোন করলে তারা ফোন ধরেনি। বিদ্যুৎ না থাকার ফলে রাতে খুবই কষ্ট হয়েছে।

উপজেলা মনিয়ন্দ ইউনিয়নের গ্রামের মো. কামাল মিয়া বলেন, গত কয়েক দিন ধরে সকাল, বিকাল রাত্র নিয়মিত লোডশেডিং হচ্ছে। এমনিতেই তীব্র গরম। তারপর আছে দিনে রাতে লোডশেডিং। ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিংএর যন্ত্রনায় অতিষ্ট হয়ে উঠেছি।

মোবাইল বিক্রেতা মো. ইয়াছিন মিয়া বলেন, মোবাইল বিক্রির পাশাপাশি তার দোকানে মোবাইল সাভিসিং করা হয়। কিন্ত বিদ্যুৎ সমস্যায় দোকানে কাজ নেই বলে চলে।

মো. সাব্বির হোসেন বলেন, অনেক কষ্টে একটি ল্যাবটব কেনা হয়। কিন্তু ঘনঘন লোডশেডিং থাকায় আমার একটি ল্যাপটপ নষ্ট হয়ে পড়ে।

এসএসসি পরীক্ষার্থী লিমা আক্তার বলেন, একদিকে অসহ্য গরম অন্য দিকে ঘন্টার পরঘন্টা লোডশেডিং থাকায় পড়াশুনা ব্যহত হচ্ছে। তিনি বলেন, সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় অসহ্য গরমে মোমবাতি লাগিয়ে পড়াশোনা করতে হচ্ছে। রাতে লোডশেডিং থাকায় ঘুমাতে পাড়ছে না বলে জানায়।

আখাউড়া উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম মো. আবুল বাশার বলেন, বৃষ্টি ও জড়ো বাতাসে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গাছ ভেঙ্গে বিদ্যুতের তারে পড়ে ক্ষতি হয়। বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে অফিসের লোকজন কাজ করছেন। তাছাড়া গ্রাহকদের সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে যথা সাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে । অনেক সময় বৈদ্যতিক লাইনে সমস্যা ও কাজ করায় লোডশেডিং হয়। তবে এ সমস্যা থাকবে না।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads