• রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪২৯

সারা দেশ

আখাউড়ায় তাল শাঁসের কদর বাড়ছে

  • কাজী মফিকুল ইসলাম, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
  • প্রকাশিত ২৮ মে ২০২১

এখন চলছে মধু মাস। এই মাসে অন্যরকম বৈশিষ্ট্য হলো আম, জাম, লিচু, কাঁঠালের পাশাপাশি হরেক রকেমের সু-স্বাধু ফল বাজারে উঠতে শুরু করেছে। মধুমাসে জ্যৈষ্ঠতে নানা রকম ফলের সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় সর্বত্র এখন কদর বেড়েছে তালের শাঁসের।

গ্রীস্মকালের এই সু-স্বাধু রসালো ফলটি মৌসুমি ব্যবসায়ীরা পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে দেদারছে বিক্রি করছেন। আবার কেউ কেউ ভ্যানগাড়ি করে পাড়ায় মহল্লায় নিয়ে বিক্রি করছেন। তবে গরমের মধ্যে তৈলাক্ত খাবারের চেয়ে তালের শাঁস অনেক উপকরী হওয়ায় সৌখিন ক্রেতা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের কাছে তাল শাঁস বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। প্রতি পিচ তাল বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। তবে গরম বেশী থাকায় তালের তাল শাঁস বিক্রির চাহিদা ও বৃদ্ধি পেয়েছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জ্যৈষ্ঠের ভ্যাপসা গরমে শরীরের পানি শূন্যতা দুর করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে এই ফলটি। ফলটি ফরমালিন মুক্ত, পুষ্টিকর খাদ্য হওয়া এবং বিভিন্ন ধরণের ওষুধি গুন থাকায় মানব দেহের জন্য খুবই উপকারী। সহজলভ্য ও মুখরোচক হওয়ায় বিভিন্ন বয়সী শ্রেণি পেশার মানুষের এ সময়ের পছন্দের ফল তাল শাঁস।

তাল শাঁসে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, লিভার সমস্যা দুর হয়, তালে থাকা ভিটামিট সি ও বি কমপ্লেক্স পানি পানের তৃপ্তি বাড়িয়ে খাবারের রুচি বাড়াতে সাহায্য করে, স্মৃতিশক্তি ও শারীরিক সুস্থ্যতা বৃদ্ধি করে, ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে, তালে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম থাকায় দন্ত ও হাড়ের সুরক্ষায় সহায়তা করে, তালে আছে পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, আয়রন, সালফার, সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ কপারের মতো বেশ কিছু উপকারী উপাদান যা চোখের জন্য খুবই উপকারী হওয়ায় চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পাই, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখে।

তাল শাঁস বিক্রেতা মো. হারুন মিয়া বলেন, প্রতিবছর মধু মাসে তিনি বিভিন্ন গ্রাম থেকে তাল ক্রয় করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন। একটি তাল ২০ টাকা করে বিক্রি করা হয় বলে জানান। প্রতিদিন অন্তত ২ থেকে আড়াইশ তাল বিক্রি হয় বলে জানায়। বিক্রিতে ভালো লাভ হওয়ায় সে খুশি।

মো. বাবুল মিয়া বলেন, অন্য সময় তিনি শ্রমিকের কাজ করতেন। কিন্তু এখন তালের মৌসুম হওয়ায় গ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা হয়। এরপর ভ্যান গাড়ি করে এলাকার হাটবাজারে বিক্রি করছেন। এখন গরম বেশী থাকায় তাল শাঁসের চাহিদা বেশ বেড়েছে। দৈনিক ২শতাধিকের উপর তাল হয় । সকাল থেকে বিকাল পযর্ন্ত তাল বিক্রি করে তার ৪শ টাকার উপর আয় হয় বলে জানায়।

সে আরো বলেন এটি ঠান্ডা ও মিষ্টি জাতীয় সুস্বাধু খাবার। গরম থেকে এসে এই ফলটি খেলে খুবই ভালো লাগে এবং মনটা জুড়িয়ে যায়। সব বয়সের মানুষের কাছে তাল শাঁস বেশ প্রিয় হওয়ায় দিন দিন কদর বাড়ছে বলে জানায়।

স্কুল শিক্ষক মো. শাহজাদা বলেন, তালের শাঁস একটি সু-স্বাধু ফল। বাজারে আসা অসংখ্য ফলের চেয়ে এই ফলের বৈশিষ্ট্য আলাদা। তাই একটি কেনে খাওয়া হয়। গত বছরের থেকে এবার তাল কিছুটা দাম বলে জানায়।

মো. আলমগীর হোসেন বলেন, গরমে তার ছেলে মেয়েরা তাল খেতে খুবই পছন্দ করে তাই তাদের জন্য কেনা হয়েছে।

কৃষক মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, পুকুর পাড়ে তার ১ টি তাল গাছ রয়েছে। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ১ হাজার টাকার তাল বিক্রি হয়েছে বলে জানায়।

স্থানীয় কৃষকরা জানায়, এক সময় মানুষ সখ করে বাড়ির পাশে রাস্তার ধারে তালের বীজ বোপন করতো। গাছ থেকে তাল পাড়া খুবই কষ্টকর হওয়ায় তাল গাছ বোপন কমে যায়। এলাকায় তালের চাহিদা থাকায় পাইকাররা বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রয় করে বিক্রি করছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads