• বুধবার, ৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪২৯
নুসরাতের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দিতে পারে তদন্তের জট

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

নুসরাতের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দিতে পারে তদন্তের জট

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৭ জুন ২০২১

মুনিয়ার মৃত্যুর রহস্য উন্মোচন করতে পারে নুসরাতের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের হিসাব। নুসরাতের যে কয়টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে সেই ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোকে যদি তদন্তের আওতায় আনা হয় এবং কোন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কত টাকা জমা হয়েছে, কিভাবে জমা হয়েছে এবং কোথা থেকে টাকাগুলো এসেছে এই তথ্যগুলো খুঁজে বের করলেই মুনিয়া হত্যা মামলার রহস্য ও ঘুচবে বলে অপরাধ বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। কিন্তু নুসরাত এখন পর্যন্ত তার বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের হিসেবগুলো আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে দেননি। বিভিন্ন মহল মনে করছেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যদি এই ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোর তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সংগ্রহ করে তাহলে মুনিয়ার মৃত্যু রহস্যের কিনারে তারা পৌঁছতে পারবে। ২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে মারা যান মুনিয়া। তার মৃত্যুর পর পরই তার বড় বোন নুসরাত তানিয়া একটি আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। এই মামলাটি তদন্ত চলছে গত দুই মাস ধরে। এই মামলায় তদন্তে নুসরাত চরম অসহযোগিতা করছেন বলেও অভিযোগ করা হচ্ছে। বিশেষ করে মুনিয়া সম্পর্কিত তথ্য এবং নুসরাত সম্পর্কিত তথ্য দিতে তারা অনীহা প্রকাশ করছেন এবং উল্টো তারা বলছেন যে এই সমস্ত তথ্য অপ্রাসঙ্গিক।

তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলছেন, মামলার কোন তথ্য প্রাসঙ্গিক এবং কোন তথ্য অপ্রাসঙ্গিক তা তদন্তকারী কর্মকর্তাদের বিবেচ্য বিষয়, বাদীর বিবেচ্য বিষয় নয়। বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, নুসরাত যে অর্থ আয় করেন ব্যাংকে চাকরি করে সেই অর্থের সঙ্গে তার জীবনযাপনের বিশাল পার্থক্য রয়েছে। নিশ্চয়ই তাকে বিভিন্ন মহল অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছে। মুনিয়ার মৃত্যুর আগে এক  রকমভাবে আর উপার্জন করতে নুসরাত। আর মৃত্যুর পর অন্যভাবে আয় উপার্জন করছেন বলেও একাধিক সূত্র মনে করছেন। মুনিয়ার মৃত্যুর আগে মুনিয়া ছিল তার অর্থ উপার্জনের প্রধান হাতিয়ার। মুনিয়াকে ব্যবহার করেই নুসরাত বিত্ত বৈভব জীবনযাপন করতো। বিবাহ বার্ষিকীর জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান করতো। আর যখন মুনিয়া মারা গেলেন তখন এই মুনিয়ার মৃত্যুকে অন্য খাতে প্রবাহিত করার জন্য এবং মুনিয়ার মৃত্যুতে নিয়ে জল ঘোলা করার জন্য বিভিন্ন মহল দেদারছে অর্থ ঢালছেন। যারা এই অর্থগুলো ঢালছেন সেই অর্থগুলো সবই যে নগদ অর্থে দেওয়া হচ্ছে তা নয়। নগদ অর্থে এতো বিপুল লেনদেন সম্ভব নয়। কিছু কিছু টাকা ব্যাংকিং লেনদেনেও ঢুকছে।

অপরাধ বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, মুনিয়ার উপার্জন এবং উপার্জনের সঙ্গে তার জীবনযাপনের মিল নেই। আর এই সূত্র ধরেই খুঁজে পাওয়া যাবে যে কারা মুনিয়াকে হত্যা করেছে এবং মুনিয়া'র মৃত্যুর জন্য কারা দায়ী এবং এই মৃত্যুর পর কারা মুনিয়ার এই মৃত্যুকে অন্য খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে দেখা যাচ্ছে যে, মুনিয়ার মৃত্যুর পর নুসরাত রাজকীয় জীবনযাপন করছেন। কোনো কোনো মহল থেকে এই মামলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ একটি মহলকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার জন্য তারা বিনিয়োগ করছেন। আর এই বিনিয়োগের অর্থ দিয়েই মুনিয়া সংবাদ সম্মেলন করছেন, অনলাইন টকশোতে যোগ দিচ্ছেন, মানববন্ধনে চেষ্টা করছেন। এছাড়াও তিনি মামলা তদন্ত যেন অন্য খাতে প্রবাহিত হয় সে জন্য চেষ্টা করছেন। আর এ কারণেই অপরাধ বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, দুটি বিষয়ে এখন তদন্ত করা দরকার। ১. নুসরাতের আয়ের সঙ্গে তার জীবনযাপন সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না অর্থাৎ তিনি যেরকম আয় করেন সেভাবে তিনি ব্যয় করেন কিনা। ২. নুসরাতের ব্যাংক একাউন্টে কত টাকা আছে এবং কিভাবে এই টাকাগুলো ঢুকেছে কে ঢুকিয়েছে। এই তথ্যগুলো পেলে এই মামলার জট অনেকখানি খুলবে বলে মনে করছেন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads