• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪২৯
পৌর হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে চার্জশিট

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন

পৌর হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে চার্জশিট

  • প্রকাশিত ০৫ জুলাই ২০২১

এইচ এম মোজাহিদুল ইসলাম নান্নু, পটুয়াখালী

পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক হিসাবরক্ষক এস এম শাহিনের বিরুদ্ধে অর্থ কেলেঙ্কারির মামলায় চার্জশিট দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দীর্ঘ দুই বছর চার মাস ধরে তদন্ত করে প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকার অর্থ-সম্পদের বৈধ কোনো উৎস না পাওয়ায় ৩০ জুন এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন ওই মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপসহকারী পরিচালক আরিফ হোসেন। ২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি অবৈধ সম্পদ অর্জন অভিযোগে পটুয়াখালী পৌরসভার হিসাবরক্ষক এস এম শাহিনের বিরুদ্ধে পটুয়াখালী সদর থানায় মামলা করে দুদক।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বরে পটুয়াখালী পৌরসভার হিসাবরক্ষক এস এম শাহিনের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ জারি করা হয়। ওই নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে শাহিন তার সম্পদের হিসাব দাখিল করে। দাখিল করা ওই বিবরণীতে নিজ ও স্ত্রীর নামে দানসূত্রে প্রাপ্তি এক দশমিক ১৭ একর সম্পত্তি ও একটি তৃতীয় তলা ভবন (ভবনটি বর্তমানে পাঁচ তলাবিশিষ্ট), ৪৫ লাখ ৯৩ হাজার ৬শ টাকার স্থাবর/অস্থাবর সম্পদসহ মোট এক কোটি, ৫৬ লাখ, ৫ হাজার ৬শ টাকার দেখানো হয়। ওই সম্পদের বিপরীতে ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানিক ঋণ উল্লেখ করেন শাহিন। রূপালী ব্যাংক থেকে ৫০ লাখ, ইসলামী ব্যাংক থেকে ৩৫ লাখ, জীবনবীমা পলিসি থেকে প্রাপ্য কমিশন বাবদ ২৩ লাখ ৬০ হাজার, ৮৯০ টাকা এবং জীবনবীমা থেকে ২৫ লাখ ১৫ হাজার এবং সংশ্লিষ্ট পৌরসভা থেকে ১৫ লাখ এবং ডিপিএসর বিপরীতে সাত লাখ ৫০ হাজার ঋণ নিয়েছেন তিনি। এছাড়া বাকিতে আট লাখ ৪০ হাজার ৫শ টাকা মামলামাল ক্রয় করেছেন বলে লিখিতভাবে

দুদকের কাছে দাবি করেন তিনি। সবশেষে নিজস্ব তহবিলে ৬০ লাখ ৯৮ হাজার ৪৬০ টাকাসহ মোট দুই কোটি, পঁচিশ লাখ চৌষাট্টি হাজার পঞ্চাশ টাকা হিসাব দাখিল করেছিলেন শাহিন।

শাহিনের দাখিলকৃত সম্পদের ওপর নিবিড় তদন্ত চালায় দুদক। তদন্তকালে দুদক জানতে পারে, রূপালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক থেকে ৮৫ লাখ টাকা ঋণ এবং জীবন বীমা পলিসি থেকে প্রাপ্ত কমিশন ও ঋণ বাবদ ৪৮ লাখ ৭৫ হাজার ৮৯০ টাকাসহ মোট কোটি ৩৩ লাখ ৭৫ হাজার ৮৯০ টাকার ঋণের সকল তথ্য মিথ্যা ও বানোয়াট। এছাড়া তার নিজস্ব তহবিলে ৬০ লাখ ৯৮ হাজার ৪৬০ টাকার অর্জনের বৈধ উৎস পায়নি দুদক। হেবামূলে তার ভাইয়ের কাছ থেকে পাওয়া ৮০ লাখ টাকার সম্পদের হিসাব দুদকে দাখিল করা হলেও তার ভাইয়ের আয়কর রিটার্নে ওই সম্পদের কোনো তথ্য পায়নি দুদক।

চার্জশিটে দুদক বলে, মামলার আসামি এস এম শাহিন দুই কোটি ৭৪ লাখ ৭৪ হাজার টাকার সম্পদের হিসাব দুদকে দাখিল করেন, যা আদৌ সত্য নয়। তথ্য গোপন করার অপরাধে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬ (২) ধারার অপরাধ এবং দুই কোটি ৯৭ লাখ ৫৩ হাজার ৪৮৮ টাকা জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতি থাকায় দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৭ (১) ধারার অপরাধ আনা হয়েছে। এছাড়া ২২ লাখ ৭৯ হাজার ১৩৮ দশমিক ৯৮ টাকার স্থাবর/অস্থাবর সম্পদ গোপন রাখা ও ব্যাংকে সন্দেহজনক লেনদেন এবং অবৈধ অর্থ নিজ দখলে রাখার অপরাধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ধারার অপরাধে তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads